বাবার জন্য কালো কেক বানালেন সোহেল চৌধুরীর মেয়ে

লামিয়া কেকটি বানিয়েছেন বাবার স্মরণে। ছবি: কোলাজ

আজ প্রয়াত নায়ক সোহেল চৌধুরীর জন্মদিন। ১৯৬৩ সালে আজকের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। কেক কেটে বাসায় বাবাকে স্মরণ করেছেন প্রয়াত নায়কের মেয়ে লামিয়া চৌধুরী। বাবা কী কেক পছন্দ করতেন, সেটা জানতে চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট করেছিলেন লামিয়া। বাবার পরিচিত অনেকেই সাড়া দিয়েছেন। জানিয়েছেন বাবার পছন্দের কেকের কথা। নিজের হাতে সেই কেক তৈরি করেছেন লামিয়া। নায়ক বাবার জন্মদিনটা মন খারাপ করেই কাটিয়েছেন লামিয়া।

সোহেল চৌধুরী, লামিয়া ও দিতি। ছবি: সংগৃহীত

নায়ক সোহেল চৌধুরী ও নায়িকা দিতির মেয়ে লামিয়া। কেক বানাতে সিদ্ধহস্ত তিনি। পরিচিত ঘনিষ্ঠজনেরা চাইলেই তাঁদের কেক বানিয়ে দেন তিনি। অনেকে অনেক রকম কেক ভালোবাসেন। তাঁদের চাহিদামতো কেক বানাতে বানাতে একদিন মনে হলো, বাবার পছন্দের কেক বানাবেন তিনি। ফেসবুকে সেই ইচ্ছার কথাই জানিয়েছিলেন। অনেকের জানা ছিল না, অনেকে মনেই রাখেননি যে সোহেল চৌধুরী দুই ছেলেমেয়েকে রেখে প্রয়াত হয়েছিলেন। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া প্রসঙ্গে লামিয়া বলেন, ‘বাবা কী কেক পছন্দ করতেন, সেটা জানার জন্য ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিই। পরে বাবার পরিচিত ও কাছের মানুষদের বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন, বাবা চকলেট কেক পছন্দ করতেন। সেটা জানার পর বাবার পছন্দের সেই কেক আমি নিজ হাতে বানিয়েছি।’ কেকটা কাটার সময় বেশ মন খারাপ ছিল লামিয়ার। বাবার জন্য বানানো সেই কেকে কিছুই লেখেননি তিনি। আর সেই কেকটি ছিল কালো রঙের।

দিতি, বাবা সোহেল চৌধুরীর কোলে লামিয়া। ছবি: সংগৃহীত

শৈশব থেকে বাবাকে কাছে না পাওয়ার বেদনা এখনো তাঁকে কাঁদায়। লামিয়া বলেন, ‘বাবা যখন মারা যান, তখন আমি অনেক ছোট। সেই সময় বাবা কী খেতে পছন্দ করতেন, কী কী করতেন, সেসবের অনেক কিছুই আমার মনে নেই। বাবাকে এখনো খুব মিস করি। বাবার জন্য খুব কষ্ট হয়। বাবার কথা যখন মনে পড়ে, তখন প্রবল দুঃখবোধ আমাকে গ্রাস করে। সেই দুঃখবোধ থেকেই বাবার জন্মদিনে কালো রঙের কেক বানিয়েছি।’

১৯৮৪ সালে অভিনেতা খুঁজে বের করার প্রতিযোগিতা ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা। এতে বিজয়ী হয়ে নায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেছিলেন সোহেল চৌধুরী, পারভীন সুলতানা দিতিসহ আরও বেশ কয়েকজন তরুণ। সহকর্মী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করা সোহেল-দিতির মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। এফ কবীর চৌধুরীর পরিচালনায় সোহেল-দিতি অভিনয় করেছিলেন ‘পর্বত’ ছবিতে। এ ছবিতে অভিনয় করে আলোচিত হন তাঁরা দুজন। জুটি হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয় তাঁদের। পরে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘হীরামতি’ ছবিতে অভিনয় করেন তাঁরা। ১৯৮৬ সালে মুক্তি পায় ছবিটি। এ জুটির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে, একপর্যায়ে তাঁরা বিয়ে করেন। ১৯৮৭ সালে এ দম্পতির সংসারে জন্ম নেন মেয়ে লামিয়া চৌধুরী এবং ১৯৮৯ সালে ছেলে দীপ্ত। পরে অবশ্য এ দম্পতির বিচ্ছেদ হয়।

১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাত ২টার দিকে বনানীর একটি ক্লাবে খুন হন সোহেল চৌধুরী। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য এখনো উন্মোচিত হয়নি। সোহেল চৌধুরীর জন্ম ১৯৬৩ সালের ১৯ অক্টোবর। অভিনয়ের পাশাপাশি গান গাইতেন তিনি। গিটার বাজানো ছিল তাঁর শখ।