মন ভালো নেই জয়ার

জয়া আহসান
ফেসবুক

গতকাল নববর্ষ আর রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জয়া আহসান। দুটি পোস্টের একটিতে শেয়ার করেছেন একটি ১৯ সেকেন্ডের ভিডিও। সেখানে ওপার বাংলা থেকে দুই দুটো ফিল্মফেয়ার এনে বাসার শোকেসে সাজিয়ে রাখা এই অভিনেত্রী বলেন, 'গত নববর্ষে আমাদের প্রত্যাশা ছিল এই নববর্ষে খুব আনন্দ হবে। কিন্তু দুঃসময় তবু চলছে। নববর্ষ আবার আমাদের বলতে এসেছে যে আমরা একসাথে সবাই মিলে এই দুঃসময় পার করব। আর দুঃসময়টা পারি দিতে পারি বলেই আমরা মানুষ। শুভ নববর্ষ।’ এই ভিডিও এখন পর্যন্ত দেখা হয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজারের বেশিবার। আর এর নিচে মন্তব্য জড়ো হয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩১৮টি অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা হয়েছে জয়া আহসানের এই ভিডিও।

জয়া আহসান

দেশের গুণী এই অভিনেত্রীর কেমন কাটছে পয়লা বৈশাখ, জানতে ফোন করি। কিন্তু জানা গেল, মন ভালো নেই জয়ার। সুরকার ফরিদ আহমেদ মারা গেলেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে। সম্পর্কে তিনি জয়া আহসানের মামা। সকাল থেকে সেখানেই ছিলেন। সেখান থেকে ফিরে এসে কিছুই ভালো লাগছে না তাঁর। পয়লা বৈশাখের উদ্‌যাপন নিয়ে জানতে চাইলেই বললেন, ‘ওসব কিচ্ছু না। কোনো পরিকল্পনা ছিল না, নেই। সকাল থেকে আমার মামা ফরিদ আহমেদের ওখানে ছিলাম। আগে তো শুনতাম, অমুক আক্রান্ত হয়েছে, তমুক আক্রান্ত হয়েছে। এখন নিজের পরিবারের সদস্যরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। কাজকর্ম সব বন্ধ। কিছুতেই মন টানছে না। অনলাইনে কিছু মিটিং সারতে হচ্ছে। তবে সেগুলো একেবারেই শরীরের শক্তিতে, শরীরকে জোর করে বসিয়ে।’

গতকাল বিকেলে যখন জয়ার সঙ্গে কথা হলো, তখন তিনি মা, বোন আর পোষা কুকুর ক্লিওর সঙ্গে বাসায়। একটু পর ক্লিওকে নিয়ে ছাদে যাবেন। জানালেন, আগে মন দিয়ে গাছের পরিচর্যা করেছেন। এখন ছাদে গিয়ে মাটি খুঁড়তেও ভয় লাগে। করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে মাদ্রিদ চলচ্চিত্র উৎসবের সেরা এই অভিনেত্রীর সব ব্যস্ততা আর আনন্দ যেন থমকে গেছে।

জয়া আহসান
ইনস্টাগ্রাম

চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আর সাতটি মেরিল-প্রথম আলোজয়ী এই অভিনেত্রীর বাড়িতে শাকসবজি তেমন একটা কেনা লাগে না বললেই চলে। এই যেমন আজ নববর্ষের দিনে তিনি খেয়েছেন নিজের ছাদবাগান থেকে তোলা বরবটি দিয়ে চিংড়ি ভর্তা, মিষ্টিকুমড়া আর পেঁপে। বললেন, নিজের বাগানের সবজি খেতে দারুণ।

নববর্ষের সাজে জয়া আহসান
ফেসবুক

ওই ভিডিওর সঙ্গে ক্যাপশনে জয়া লিখেছেন, ‘কোভিডের দুঃসময় আমরা এখনো পার হইনি। চারদিকে কেবলই বিষণ্নতা আর মৃত্যু। কিন্তু দুঃসময়ই যে মানুষের শেষ কথা নয়, সে কথা জানাতেই তো বাংলা নববর্ষের আগমন। করোনার বিস্তারে গত বছরের নববর্ষে আমরা সংযত থেকেছি। প্রত্যাশা করেছি, পরের নববর্ষে দুর্যোগের গাঢ় মেঘ মাথার ওপর থেকে সরে যাবে। কিন্তু এবারের নববর্ষে কোভিড আরও জোরেশোরে ফিরে এসেছে। কিন্তু কোভিডের কী সাধ্য পয়লা বৈশাখের প্রাণশক্তিকে চাপা দেয়! মানুষকে পরাস্ত করা কি এতই সহজ! কত যুদ্ধ, মন্বন্তর, মারি পেছনে ফেলেই না এত দূর এগিয়ে এসেছে মানুষ। মানুষ মানে এগিয়ে যাওয়া। ঘোর অন্ধকার আসে, তাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে চলো, সবাই হাত ধরে—পয়লা বৈশাখ ঠিক এই কথাটিই সব সময় বলে এসেছে। আমরা সতর্ক আর নিরাপদ থাকব, নিজেদের সুস্থ রাখার জন্য সবকিছু করব, সবার জন্য দু হাত বাড়িয়ে রাখব, মনকে ভরে রাখব আলোয়। নববর্ষের কচি রোদ লাগুক আমাদের সবার মুখে, মনে।’

জয়া আহসান
ইনস্টাগ্রাম

এই বছর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ফেসবুক একটি বিশেষ অগমেন্টেড রিয়ালিটি ইফেক্ট তৈরি করেছে। জয়া ভিডিওতে সেটি ব্যবহার করেছেন। তাতে এই অভিনেত্রীর নিজের কাছে মনে হয়েছে, সবার সঙ্গেই যেন মঙ্গল শোভাযাত্রায় বেরিয়েছেন। শখ করে আলপনা এঁকেছেন গালে। করোনা থেকে বাঁচতে মুখে আবার মাস্কও পরেছেন! আরেকটি পোস্টে নীল শাড়ি পরে নববর্ষের বেশে বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা। রমজানের পবিত্রতা নতুন বছরকে স্নিগ্ধ করে তুলুক। প্রশান্তিময় হোক জীবন।’
এভাবেই দুঃসময়েও নিজেকে ইতিবাচক রাখছেন এই অভিনেত্রী। আর নববর্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভেতর দিয়ে সেই ইতিবাচকতা আর সুন্দর আগামীর প্রেরণা ছড়িয়ে দিচ্ছেন সবার মাঝে।

ফিল্মফেয়ার হাতে জয়া
ইনস্টাগ্রাম