ম্যারাডোনাদের খেলার দিনে ঝগড়া হতো শাবনাজ–নাঈমের

শাবনাজ-নাঈম

ম্যারাডোনাদের খেলা মানেই তুমুল উত্তেজনা। কোনো কোনো বিশ্বকাপের সময় রাজধানীসহ সারা দেশে উড়ত আর্জেন্টিনার পতাকা। আর ঢালিউডের জনপ্রিয় জুটি শাবনাজ-নাঈমদের বাড়িতে শুরু হতো ঝগড়া। তাচ্ছিল্যের সঙ্গে নাঈম শাবনাজকে বলতেন, ‘একমাত্র ম্যারাডোনার জন্য কেন আর্জেন্টিনা সাপোর্ট করো, অন্য কেউ নেই?’ শাবনাজ যুক্তি দেখাতেন, আর্জেন্টিনার সবাই ভালো খেলে। নাঈম বলতেন, ‘তাহলে বলো, আর কে কে ভালো খেলে?’ শুরু হয়ে যেত স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া। যে তারকাকে নিয়ে এই দুই তারকার ঝগড়া, সেই তারকার বিদায়ে কষ্ট পেয়েছেন তারকা দম্পতি শাবনাজ-নাঈম।

শাবনাজ।
ছবি: সংগৃহীত

শাবনাজ প্রথম ম্যারাডোনার খেলা দেখেন ১৯৮৬ সালে। বিশ্বকাপের সেই চোখধাঁধানো খেলা এখনো মনে পড়ে তাঁর। পরে নাঈমের সঙ্গে ১৯৯০ ও ১৯৯৪ সালের এবং পরের বিশ্বকাপগুলো দেখেছিলেন পরিবারের সবাই মিলে। শাবনাজ বলেন, ‘আমি বুঝতে শেখার পর থেকেই আর্জেন্টিনার সমর্থক। এর বড় কারণ, আমি ম্যারাডোনার খেলা দেখে বড় হয়েছি। ম্যারাডোনার খেলার সময় তাঁর বল পাসিং, নিখুঁত শট, গোল দেওয়া মনে রাখার মতো। তাঁর খেলা আমার খুব ভালো লাগত। পরে ম্যারাডোনার জীবনী পড়েও ভালো লেগেছে। বুধবার রাতে বড় মেয়ে নামিরার কাছে যখন শুনি ম্যারাডোনা মারা গেছেন, তখন খুব খারাপ লেগেছে।’

নাঈম
ছবি: সংগৃহীত

ম্যারাডোনার খেলার দিনে উৎসবমুখর থাকত শাবনাজ-নাঈমদের বাড়ি। শাবনাজ আর্জেন্টিনার সমর্থক। তাঁর দাবি, সেটা জেনেই নাঈম সব সময় প্রতিপক্ষের সমর্থন করতেন, উদ্দেশ্য শাবনাজকে রাগানো। নাঈম ও তাঁর দুই মেয়ে বিশ্বকাপে প্রায়ই দল বদল করেন। কিন্তু শাবনাজ প্রথম থেকেই আর্জেন্টিনার কড়া সমর্থক। তিনি বলেন, ‘আমাকে রাগানোর জন্য নাঈম ইচ্ছে করেই আর্জেন্টিনার বিপরীত দলের সাপোর্ট করত। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। নাঈম উত্ত্যক্ত করে বলত, “তোমার দল হারবে।” আমি কেন আর্জেন্টিনার সমর্থক, এটা নিয়ে শুরু হতো ঝগড়া। তবে এসব নিয়ে আমরা অনেক মজা করতাম। এমন সময়ও গেছে, খেলা দেখার পুরো সময় আমাদের ঝগড়া লেগেই থাকত। পরে আবার সব ঠিক।’

দুই মেয়ের সঙ্গে নাঈম–শাবনাজ
ছবি: সংগৃহীত

শাবনাজ জানান, যেদিন আর্জেন্টিনার খেলা থাকত, সেদিন আগে থেকেই রান্নার ব্যবস্থা থাকত। নাঈমের কাছে এই দিনটি রান্না করার জন্য খুবই পছন্দের। খেলা মানেই তাঁদের বাড়িতে ভোজের বিশেষ আয়োজন। চলে পোলাও-কোরমা রান্না। সেই ধারাবাহিকতা তাঁরা এখনো বজায় রেখেছেন। এখনো প্রিয় দলের খেলা থাকলে তাঁরা উৎসব করে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন। আর রান্নাবান্না করেন শাবনাজ। মন খারাপ করা কণ্ঠে শাবনাজ জানান, করোনার কারণে এ বছর পৃথিবীর অনেক মানুষ মারা গেছে, অনেক লিজেন্ড মারা গেছেন। কষ্ট পাওয়া ছাড়া কীই-বা বলার থাকে?

নাঈম–শাবনাজ দুই মেয়ে নামিরা এবং মাহাদিয়া
ছবি: সংগৃহীত