শক্তিমান খলনায়কের সংকট ঢালিউডে

ঢাকার সিনেমাগুলোতে এখন খলনায়কের সংকট দেখা দিয়েছেপ্রথম আলো

ঢালিউডে শক্তিমান খলনায়ক কমে গেছে। ২০০০ সালের পরও বেশ কিছুদিন খলনায়ক হিসেবে কাজ করেছেন শক্তিশালী অভিনয়শিল্পীরা। কিন্তু গত এক যুগে প্রয়াত হয়েছেন তাঁদের অনেকেই। বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেকে অভিনয়ে অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন। ঢাকার সিনেমাগুলোতে এখন খলনায়কের সংকট দেখা দিয়েছে।

২০০০ সালের পর থেকে একে একে প্রয়াত হয়েছেন খলিলুল্লাহ খান, ওয়াসিমুল বারী রাজীব, হুমায়ূন ফরীদি ও মিজু আহমেদ। বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে অভিনয় প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন এ টি এম শামসুজ্জামান ও আহমেদ শরীফ। সবশেষ চলতি মাসে ঢালিউড হারিয়েছে আরেক শক্তিমান অভিনেতা সাদেক বাচ্চুকে। এমনিতেই ঢাকাই চলচ্চিত্রে নানামুখী সংকট। সেখানে শক্তিমান খলনায়কের অভাব নতুন সংকট হিসেবে যুক্ত হয়েছে।

চলতি মাসে ঢালিউড হারিয়েছে শক্তিমান অভিনেতা সাদেক বাচ্চুকে
সংগৃহীত

এখন শক্তিশালী খলনায়ক হিসেবে একমাত্র মিশা সওদাগরই পরিচালকদের ভরসা। অমিত হাসান, সিবা শানুসহ কয়েকজন অভিনেতা খল চরিত্রে কাজ করলেও খলনায়ক হিসেবে দর্শকদের কাছে এখনো ততটা গ্রহণযোগ্যতা পাননি তাঁরা।

সত্তরের দশক থেকে শুরু করে দীর্ঘ সময় ঢাকার চলচ্চিত্রে খলনায়ক হিসেবে অভিনয় করেছেন রাজু আহমেদ, রাজ, এনাম আহমেদ, গোলাম মুস্তাফাসহ অনেকেই। পরে এ তালিকায় যুক্ত হন খলিলুল্লাহ খান, এটিএম শামসুজ্জামান, জাম্বু, আহমেদ শরীফ, ওয়াসিমুল বারী রাজীব, বাবর, আদিল, নাসির খান, জসিম, মিজু আহমেদ, সাদেক বাচ্চু প্রমুখ। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, নায়কের পাশাপাশি সমানভাবে জনপ্রিয় খলনায়কেরা। চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু বলেন, ‘বাংলা সিনেমাকে এগিয়ে নিতে বড় ভূমিকা রেখেছেন এই খলনায়কেরা। নায়কদের মতো তাঁদের নামও দর্শকের মুখে মুখে থাকত। একজনকে পাওয়া না গেলে বিকল্প ভাবার সুযোগ ছিল। আর এখন মিশা সওদাগর ছাড়া কাউকে পাচ্ছি না। একজনকে দিয়ে কি ঢাকার চলচ্চিত্র চলবে?’

প্রায় ৮০০ ছবিতে খলনায়ক হিসেবে অভিনয় করেছেন মিশা সওদাগর
প্রথম আলো

প্রায় ৮০০ ছবিতে খলনায়ক হিসেবে অভিনয় করেছেন মিশা সওদাগর। তিনি বলেন, একজনকে দিয়ে একটা ইন্ডাস্ট্রি এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। খলনায়ক চরিত্রগুলোতে শক্তিমান অভিনয়শিল্পীর শূন্যতা দিন দিন বাড়ছে। নতুন করে শক্তিশালী কোনো অভিনেতা তৈরিও হচ্ছে না। ঢাকার চলচ্চিত্রে খলনায়কেরা ছিলেন অলংকারের মতো। তাঁদের একজন সাদেক বাচ্চুও চলে গেলেন। তিনি মনে করেন, শিল্পী তৈরিতে নতুন মুখের সন্ধানে প্রতিযোগিতার কোনো বিকল্প নেই। সেখান থেকে শুধু নায়ক নয়, খলনায়কও বেরিয়ে আসবে।

ওয়াসিমুল বারী রাজীব
সিনেমার দৃশ্য

শক্তিশালী খলনায়ক পাওয়া না গেলে সিনেমাও মানসম্পন্ন হয়ে ওঠে না বলে মনে করেন চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রধান নির্বাহী আলীমুল্লাহ খোকন। তিনি বলেন, সিনেমার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ খলনায়ক। একসময় সিনেমায় ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে একাধিক খলনায়ক নেওয়া হতো। এখন একজনই পাওয়া যায় না। বাচ্চু ভাই (সাদেক বাচ্চু) চলে যাওয়াতে সেই সংকট আরও বাড়ল।