‘শিল্পীদের প্রতি মানুষের সম্মানবোধ নষ্ট হয়ে গেল’

ওমর সানী কর্তৃক অসম্মান এবং লাঞ্ছিত করার অভিযোগে এবার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন জায়েদ খান
ছবি: সংগৃহীত

ওমর সানী কর্তৃক অসম্মান এবং লাঞ্ছিত করার অভিযোগে এবার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন জায়েদ খান। শিল্পী হিসেবে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি মনে করছেন, পারিবারিক ও নিজেদের ব্যক্তিগত বিষয় সামনে এনে শিল্পীদের ছোট করছেন সিনিয়র অভিনেতা ওমর সানী। পরবর্তী পরিস্থিতি কী হয়, তার ওপর ভিত্তি করে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন জায়েদ। তবে তাঁর চাওয়া, গুলি করাবিষয়ক মিথ্যা এই কাণ্ডটি নিয়ে মৌসুমীর বক্তব্যের পর ঘটনা এখানে থেমে যাওয়া উচিত।

জায়েদ বলেন, ‘অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলাম। কিন্তু কেন ওমর সানী ভাই সিনিয়র মানুষ হিসেবে আমাকে অসম্মানিত করলেন, কেন গণমাধ্যমে মিথ্যা অভিযোগ দিলেন, সেটাই বুঝছি না। সামনে আমাদের শিল্পী সমিতির রায়, সেটা ঘিরে হতে পারে। সিনিয়র শিল্পী হিসেবে ওমর সানী ভাইকে কিছু বলতে চাই না। বিষয়টি তাঁর পারিবারিকভাবেই সমাধান করা উচিত ছিল। তিনি এত জনপ্রিয় একজন আর্টিস্ট হয়ে নিজেকেই ছোট করলেন। এসবের দরকার ছিল না। এতে শিল্পীদের প্রতি মানুষের সম্মানবোধ নষ্ট হয়ে গেল।’

‘সোনার চর’ সিনেমার শুটিং সেটে একসঙ্গে জায়েদ খান, মৌসুমী ও ওমর সানী
ছবি: ফেসবুক থেকে

জায়েদ খানকে ঘিরে ওমর সানী–মৌসুমীর সংসার ভাঙার বেশ কিছু খবর চোখে পড়েছে জায়েদ খানের। ‘কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন জায়েদ খানের কারণে তাঁদের সংসার ভাঙবে। অনেকেই এখন ঘটনার মধ্যে কিছু খোঁজার চেষ্টা করবে। আমি এটাই বলব, মৌসুমী আপুকে সম্মান করি, তিনি অডিও বার্তায় সব ক্লিয়ারও করে দিলেন। তাঁর সম্মান সবার বজায় থাকা উচিত।’ এই সময় জায়েদ আরও বলেন, ‘তারপরেও কিছু মানুষ বিষয়টি নিয়ে নোংরামি করছে।

তারা ওমর সানী-মৌসুমী আপুর ছেলেকেও খুঁচিকে কথা বলিয়েছে। এখানে তারকাদের সন্তান হিসেবে তাদেরকে জড়ানো ঠিক হলো না। তাদের একটা সম্মান আছে। তা ছাড়া বাবা–মায়ের ব্যক্তিগত বিষয়ে সন্তানের কাছে জানতে চাওয়া কতটা যৌক্তিক। মৌসুমী আপার বক্তব্যের পর আর কিছু প্রয়োজন নেই। আমি মনে করি, এ ব্যাপারে ওমর সানী ভাইয়ের বুঝে কথা বলা দরকার ছিল। শিল্পীদের সবাই সম্মান করে, সেই জায়গা ধরে রাখা উচিত।’

‘সোনার চর’ সিনেমার শুটিং সেটে ওমর সানীকে মিষ্টি মুখ করান জায়েদ
ছবি: ফেসবুক

গত শুক্রবার রাতে ডিপজলের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে জায়েদ খানের ওপর চড়াও হন ওমর সানী। এই অভিনেতার দাবি, তিনি জায়েদকে চড় মেরেছেন। পরে জায়েদ পিস্তল বের করে খুনের হুমকি দেন। ওমর সানীর মূল অভিযোগ ছিল মৌসুমীকে হয়রানি ও বিরক্ত করছেন জায়েদ। পরে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি বরাবর জায়েদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন ওমর সানী। জায়েদ বলেন, ‘তিনি সিনিয়র সব সময়ই আমি তাঁকে সম্মান করি। তিনি শারীরিকভাবেও একটু অসুস্থ। তিনি কথায় কথায় লাইভে যান। তাঁর কথাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’ তিনি প্রথমে বললেন, ‘পিস্তল বের করে গুলি করতে গেছি। গতকাল শিল্পী সমিতির অফিসে এসে নাকি বলেছেন আমি পকেটে হাত দিয়েছিলাম। তিনি নাকি বুঝতে পারেনি। আবার আগে থেকেই বলছিলেন, আমাকে শাসন করার জন্য সেদিন চড় দিয়েছেন কিন্তু অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, তিনি আমাকে সংযত হওয়ার কথা বলেন। সানী ভাইয়ের কথা দুই রকম। কোনো রকম প্রমাণ ছাড়াই তিনি আমার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।’

‘সোনার চর’ সিনেমার শুটিং সেটে মৌসিমীকে মিষ্টি মুখ করান জায়েদ
ছবি: ফেসবুক

তবে গতকাল জায়েদ খানের বিরুদ্ধে ওমর সানী অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এখনো চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি থেকে কোনো নোটিশ পাননি জায়েদ খান। ‘এটা আর দরকার নেই। কারণ, মৌসুমী নিজেই বক্তব্য দিয়েছেন। জানিয়ে দিয়েছেন এতে জায়েদ খানের কোনো দোষ নেই’ উল্লেখ করে জায়েদ আরও বলেন, ‘আমাকে তাদের কোনো চিঠি দেওয়া উচিত হবে না, দিলে সেটা হবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমার মনে হয়, ওমর সানী ভাই ভুল করেছেন, তাঁর সুবুদ্ধির উদয় হোক। যা করেছেন, সেটা সিনিয়র শিল্পী হিসেবে তাঁর সঙ্গে যায় না। বরং আমার উল্টো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সামনে কী পরিস্থিতি হয় দেখি, তারপরে ব্যবস্থা নেব। তবে আমি শিল্পীদের মধ্যে কাদা–ছোড়াছুড়ি করতে চাই না। মানুষের কাছে শিল্পীদের হাস্যকর করতে চাই না।’