শুটিং কি হবে

‘শান্তি মলম দশ টাকা’ নাটকের দৃশ্য
সংগৃহীত

সবার প্রশ্ন, শুটিং কি হচ্ছে? কারণ, করোনা নিয়ন্ত্রণে কাল ১ জুলাই সকাল ছয়টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাল থেকে চলচ্চিত্রের কোনো শুটিং হবে না। নাটকের শুটিং চলবে কি না, তা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে নিয়ম মেনে শুটিং চালিয়ে যেতে চান নির্মাতারা।

‘সরকারি প্রজ্ঞাপনে গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে বলা আছে। কিন্তু শুটিং করা যাবে কি না, সেটা নিয়ে কোনো প্রসঙ্গ নেই। আমরা শুটিং করতে পারব কি না, সেটা এখনো নিশ্চিত নই। তবে মৌখিক কোনো অনুমতি পেলেও আমরা নিয়ম মেনে শুটিং চালিয়ে যেতে চাই,’ কথাগুলো বলেন ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দিন লাভলু। তিনি বলেন, ‘সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে আমরা কাজের সুযোগ চাই। সামনে ঈদ। এই সময়ে আমাদের কলাকুশলীরা নিয়মিত কাজ করার সুযোগ পান। শুটিং বন্ধ থাকলে তাঁরা কাজ করতে পারবেন না। না খেয়ে থাকতে হবে। এই ক্ষতি আমরা কোনো আর্থিক সহযোগিতায় পোষাতে পারব না। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

শ্রীমঙ্গলে পাঁচ দিন শুটিং করে ছবিটির দৃশ্যধারণের কাজের পরিসমাপ্তি টানা হয়

টেলিভিশন চ্যানেলের ঈদের একাধিক নাটক নির্মাণের অপেক্ষায় রয়েছে। এই নাটকগুলো নির্মাণ করা না গেলে ঈদে নাটক প্রচারে জটিলতায় পড়বে চ্যানেলগুলো। টেলিভিশন চ্যানেল থেকে গাড়ি সরবরাহ করে অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীদের শুটিং ইউনিটে পৌঁছানোর কথা হয়েছে বলে জানান অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব নাসিম। তিনি বলেন, ‘টিভি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা এনওসির মাধ্যমে তাদের গাড়িতে করে শুটিং ইউনিটে সবাইকে পৌঁছানোর কথা জানিয়েছে। তবে আমরা শুটিং বন্ধও করতে বলছি না, আবার শুটিং চালিয়ে যাওয়ার কথাও বলছি না। শুটিং আদৌ কাল থেকে হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত হয়নি। সবাই ওপর মহলের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি। এটা হয়তো কাল পরিস্থিতি বুঝেই জানা যাবে।’

সোহানুর রহমান সোহান

সরকারি সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নেতারা। পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘কাল থেকে চলচ্চিত্রের সব শুটিং স্থগিত। সরকারি নিয়ম মেনে আমরা আজ সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কেউ চাইলেও কাল থেকে শুটিং করতে পারবে না। নিয়ম না মেনে শুটিং করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ঈদের আগে অনেক সিনেমার কিছু কাজ বাদ থাকে। সে ক্ষেত্রে কেউ শুটিং করতে কোনো অনুরোধ করেছেন কি না? এমন প্রশ্নে এই নির্মাতা বলেন, ‘এখন এমনিতেই কোনো শুটিং হচ্ছে না। আশা করছি, আমাদের খুব বেশি ক্ষতি হবে না।’

ঢাকার উত্তরা এবং গাজীপুরের পুবাইলের শুটিংবাড়িগুলোতে আজ ম্যারাথন শুটিং চলছিল। শুটিং শেষ করতে অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতাদের মধ্য ছিল তাড়াহুড়া। কারণ, পরদিন শুটিং করতে পারবেন কি না, এটা তাঁরা জানেন না। দ্রুত অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে চেষ্টা করেছেন তাঁরা। পুবাইলে মীর সাব্বিরের পরিচালনায় ‘জুম্মন কসাই’ নাটকের শুটিং চলছে। নাটকে অভিনেতা ফারুক আহমেদ বলেন, ‘টানা ঈদ পর্যন্ত শিডিউল দেওয়া। কোনো কাজ আর করতে পারব কি না, জানি না। কোনো সিদ্ধান্ত এখনো জানি না। দ্রুত আজকের কাজ শেষ করতে পারলেই বাঁচি।’

নাদিয়া আহমেদ ও চঞ্চল চৌধুরী
সংগৃহীত

এজাজ মুন্নার পরিচালনায় অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সরকারি সিদ্ধান্তে যা হবে, সেটাই মানতে হবে। কিন্তু অনেক পরিচালককে টেলিভিশন থেকে অ্যাডভান্স টাকা দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া চ্যানেলের ঈদের জন্য নাটকও দরকার। শুটিং নিয়ে আমাদের অভিনয়শিল্পী সংঘ থেকে কোনো দিকনির্দেশনা এখনো পাইনি। আমার নিজেরই ঈদ পর্যন্ত শিডিউল দেওয়া। কালকেও আমার শুটিং আছে। এখন কী হয়, বুঝতে পারছি না। সব মিলে একটা বিপাকের মধ্যে আছি।’