সপরিবারে করোনায় আক্রান্ত শিল্পী

চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শিল্পী সপরিবারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।ছবি: সংগৃহীত

সপরিবারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী আঞ্জুমান আরা শিল্পী। গত বৃহস্পতিবার থেকে ব্যথা ও জ্বর অনুভব করছিলেন। করোনা সন্দেহে গত শনিবার পরিবারের সবাই হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে আসেন। গতকাল রোববার পরীক্ষার ফল হাতে পেয়ে জানতে পারেন, তাঁরা সবাই কোভিড-১৯ পজিটিভ। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁরা সবাই বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

শিল্পী জানান, পরিবারের প্রায় সবার যখন একে একে জ্বর আসতে শুরু করে, তখনই মনে হয়েছিল, করোনা হতে পারে। কিন্তু টানা জ্বর না থাকায় সেই সন্দেহ দূর হয়ে যায়। পরে পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাচ্ছি। এখন সুস্থ আছি। অন্যরাও ভালো আছে।’

সপরিবারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চলচ্চিত্র অভিনেত্রী আঞ্জুমান আরা শিল্পী।
ছবি: সংগৃহীত

প্রথম দু–তিন দিন শিল্পীদের বাড়ির সবার জ্বর ছিল। গতকাল থেকে জ্বর নেই। ব্যথাও কমতে শুরু করেছে। তবে প্রথম থেকেই তাঁদের কোনো শ্বাসকষ্ট ছিল না। পরিবারের সবার দেখাশোনা করতে হচ্ছে এই অভিনেত্রীকে। দুই সন্তানকে নিয়ে কিছুটা চিন্তিত তিনি। ছেলে সানাত ইকবালের বয়স ৮ ও মেয়ে অ্যাঞ্জেলিনা ইকবালের ৬ বছর।

শিল্পী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত হাসপাতালের বেডে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়নি। নিজেই পরিবারের সবার খেয়াল রাখছি। অন্য কেউ আমাদের দেখাশোনার জন্য এলে তারাও আক্রান্ত হতে পারে। এ জন্য ঝুঁকি নিতে চাচ্ছি না। আমার দুই সন্তানের বয়স একটু কম। তাদের দেখলে বোঝা যায় না যে কিছু হয়েছে। দুজনই তাদের মতো করে বাসায় খেলে, টিভি দেখে সময় কাটাচ্ছে। হাসপাতালে না গিয়ে যেন ১৪ দিন বাসায় থাকতে পারি, সে জন্য সবাই দোয়া করবেন।’

দুই দশক আগে সিনেমা ছেড়েছেন শিল্পী। ২০০১ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় তাঁর শেষ ছবি। পরে বাংলা সিনেমায় অশ্লীলতার পর্ব শুরু হলে অভিনয় থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। এখনো তিনি ছবিতে অভিনয়ের ডাক পান। তবে সন্তানদের সময় দিতে হয় বলে অভিনয় করা হয় না। ক্যারিয়ারের পাঁচ বছরে প্রায় ৩৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। সেসব কাজের স্মৃতি আঁকড়েই থাকতে চান শিল্পী।

চলচ্চিত্র অভিনেত্রী আঞ্জুমান আরা শিল্পী
ছবি: সংগৃহীত

শিল্পীর পৈতৃক বাড়ি ভারতে, মায়ের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ। বড় হয়েছেন ঢাকায়। সিনেমায় আসার কোনো ইচ্ছা বা পরিকল্পনা ছিল না তাঁর। স্কুলে পড়ার সময় ভাইয়ের বন্ধুদের পরামর্শে মডেলিং করার ভাবনা আসে মাথায়। মামা তাঁকে ভর্তি করে দেন নারায়ণগঞ্জের একটি থিয়েটারে। তখনই সিনেমার প্রস্তাব পান তিনি। তাঁর মায়ের ইচ্ছা ছিল শিল্পী অভিনয় করুক। শিল্পীর প্রথম ছবি মোহাম্মদ হোসেন পরিচালিত ‘বাংলার কমান্ডো’ মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালের ১১ মে।

শিল্পী অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘প্রিয়জন’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘শেষ প্রতীক্ষা’, ‘মুক্তি চাই’, ‘লাভলেটার’, ‘বীর সন্তান’, ‘মিথ্যার মৃত্যু’, ‘দোস্ত আমার দুশমন’, ‘গৃহবধূ’, ‘কে আমার বাবা’, ‘রাজপথের রাজা’, ‘শক্তের ভক্ত’, ‘সুজনবন্ধু’ ইত্যাদি। তবে ‘বাবা কেন চাকর’, ‘লাভলেটার’, ‘সুজনবন্ধু’ ও ‘প্রিয়জন’ ছবিগুলো তাঁর ভীষণ প্রিয়।

বাংলা সিনেমায় অশ্লীলতার পর্ব শুরু হলে অভিনয় থেকে সরে দাঁড়ান শিল্পী
ছবি: সংগৃহীত