সেই দৃশ্যে আপত্তি ছিল স্পর্শিয়ারও

অভিনেত্রী অর্চিতা স্পর্শিয়া
ইনস্টাগ্রাম

সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে ‘নবাব এলএলবি’ ছবির একখণ্ড ভিডিও। সেখানে গণধর্ষণের শিকার এক তরুণীর চরিত্রে স্পর্শিয়া ও পুলিশের চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহিন মৃধা। ধর্ষণের শিকার তরুণী ও ঘটনা নথিবদ্ধ করা পুলিশ সদস্যের কথোপকথন নিয়ে পুলিশের অভিযোগের জের ধরে গ্রেপ্তার হয়েছেন ছবির পরিচালক অনন্য মামুন ও অভিনেতা শাহিন মৃধা। ওই দৃশ্যে ব্যবহৃত পুলিশের ভাষা নিয়ে শুরুতে আপত্তি করেছিলেন অভিনেত্রী স্পর্শিয়াও। কিন্তু পরিচালকের কথামতো দৃশ্যটিতে অভিনয় করতে হয়েছে তাঁকে।

স্পর্শিয়া
ইনস্টাগ্রাম

সিনেমায় আপত্তিকর দৃশ্য রাখার অভিযোগ এনে চলচ্চিত্র পরিচালক অনন্য মামুন ও অভিনেতা শাহীন মৃধাকে গত ২৫ ডিসেম্বর রাতে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। পরদিন রমনা মডেল থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। আদালতে পাঠানো হলে ওই দিনই দুজনকে জেলে পাঠান আদালত। ঘটনার পর বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে খবর প্রকাশিত হয়, আপত্তিকর ওই দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য শুভ্রা চরিত্রের অর্চিতা স্পর্শিয়াকে খুঁজছে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত এ খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে স্পর্শিয়ার পরিচিতজনেরা উৎকণ্ঠা নিয়ে তাঁকে ফোন করতে থাকেন। অথচ স্পর্শিয়া বিষয়টির কিছুই জানতেন না। ফেসবুকে এ–সংক্রান্ত খবরের লিংক দেখে তিনি বিস্মিত হন। তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) ইফতেখারুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, অনন্য মামুন, শাহিন মৃধা ও অজ্ঞাত কয়েকজনের নাম ছাড়া এজাহারে স্পর্শিয়ার নাম নেই।

এ নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় স্পর্শিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আগেই জানতাম মামলার এজাহারে আমার নাম নেই। অথচ ফেসবুকে ছড়ানো হল পুলিশ আমাকে খুঁজছে। খবরটি দেখে আমি ভীষণ অবাক হয়েছি। আর আমার সঙ্গে কথা না বলে কীভাবে সংবাদ প্রকাশ করল, সেটাও আমি বুঝতে পারছি না। আমার নাম যদি এজাহারে থাকত, তাহলে তো পুলিশ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করত বা বাসায় আসত বা আমাকে ডাকত।’

অর্চিতা স্পর্শিয়া। ছবি : প্রথম আলো

এ রকম খবর প্রকাশে নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে, পরিবার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে বলে জানান স্পর্শিয়া। তিনি বলেন, ‘খবর শুনে মা কাঁদতে কাঁদতে শেষ। যারা এ খবর ছড়িয়েছে তারা খুবই অন্যায় করেছে। এমন অসত্য সংবাদে মা ভেঙে পড়েছে।’ আপত্তিকর ওই সিকোয়েন্স নিয়ে স্পর্শিয়া বলেন, ‘যখন ওই দৃশ্য ধারণ করা হয়, তখনই আমি পরিচালককে বলেছিলাম ওভাবে না করতে, পুলিশি ঝামেলা হতে পারে। তা–ই হলো। কারণ, সিকোয়েন্সটির উপস্থাপনা ভালো হয়নি। একটি সুন্দর কথাও খারাপভাবে উপস্থাপন করা যায়, আবার খারাপ কথাও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যায়। ওই দৃশ্যে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তার উপস্থাপনা সুন্দর হয়নি।’

সহশিল্পী শাহিন মৃধাকে গ্রেপ্তারের কারণে কষ্ট পেয়েছেন স্পর্শিয়া। তিনি বলেন, ‘ওই সিকোয়েন্সের কারিগর চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক। অভিনেতারা এ জন্য দায়ী হতে পারেন না। শাহিন মৃধাকে আমি আগে চিনতাম না। ছবিতে ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর পারিশ্রমিকও কম। তিনি এ রকম বিপদে পড়ায় আমার খুব খারাপ লাগছে।’