হিরো আলমকে দেখতে সিনেমা হলের বাইরে ভিড়, ভেতরে খালি

হিরো আলম ছুটছেন এক প্রেক্ষাগৃহ থেকে আরেক প্রেক্ষাগৃহে
ফেসবুক

প্রাডো গাড়ি নিয়ে ঘুরছেন হিরো আলম। ছুটছেন এক প্রেক্ষাগৃহ থেকে আরেক প্রেক্ষাগৃহে। তাঁকে ঘিরে প্রেক্ষাগৃহের বাইরে আবার উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষ করা গেলেও প্রেক্ষাগৃহের ভেতরে আসন ফাঁকা। নেই কোনো দর্শক। হাতে গোনা কয়েকজন। বগুড়ার ডিশ ব্যবসায়ী ও বিনোদন অঙ্গনের আলোচিত চরিত্র হিরো আলম প্রযোজিত ও অভিনীত সিনেমা ‘সাহসী হিরো আলম’ মুক্তির পর প্রেক্ষাগৃহের এমন দৃশ্যই চোখে পড়েছে। হতাশ হয়েছে প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ।

করোনার এই লম্বা সময়ের বিরতির পর এমন একটি ছবির মুক্তির সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি রাজধানীর আনন্দ ও ছন্দ প্রেক্ষাগৃহের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শামসুউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘২১১ দিন পর সিনেমা হল খুলে এমন ছবি যদি দর্শক দেখেন, তাহলে দ্বিতীয়বার তাঁরা আর আসবেন না।

সিনেমা হলের বাইরে ভিড়
ফেসবুক

এটা কেমন ছবি, কেন ছবি? তা–ও বুঝলাম না। সেন্সর বোর্ডই–বা কীভাবে এটিকে সিনেমা হিসেবে মুক্তি দিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে গেছে। এর চেয়ে যদি আগে মুক্তি পাওয়া সিনেমাও মুক্তি দিতাম, তাহলে ভালো হতো। খুবই খারাপ। কতটা খারাপ ব্যবসা বলে বোঝাতে পারব না। সিনেমা হলের বাইরে ভিড়, অথচ ভেতরে চেয়ার খালি!’

হলের বাইরে ভিড় থাকলেও ভেতরে খালি

করোনা মহামারির কারণে সাত মাস পর শর্ত সাপেক্ষে ১৬ অক্টোবর খোলার অনুমতি পেয়েছে দেশের প্রেক্ষাগৃহ। যদিও এখনো বড় ধরনের ও নামকরা প্রেক্ষাগৃহ খোলেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। হিরো আলমের দাবি, তাঁর প্রযোজিত ও অভিনীত ছবিটি ৫০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩৯টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে হিরো আলমের সিনেমা।
ওই সব প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুরুর দিন অল্প কয়েকজন দর্শক থাকলেও এখন তা একেবারে কমে গেছে। প্রদর্শনীও কমিয়ে আনতে হয়েছে। আনন্দ ও ছন্দ প্রেক্ষাগৃহের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শামসুউদ্দিন বললেন, ‘সিনেমা চললে, আমাদের খরচ আছে। অন্যান্য সময় খরচ উঠে এলেও এই ছবির ক্ষেত্রে পকেট থেকে টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এমনটা হবে, কোনো দিন ভাবিনি।’

প্রেক্ষাগৃহে দর্শক উপস্থিতি না থাকলেও বাইরে হিরো আলমকে ঘিরে ভিড় লক্ষ করা গেছে। উৎসুক জনতা তাঁর সঙ্গে ছবিও তুলছেন। বগুড়ার প্রত্যন্ত এরুলিয়া গ্রামে একসময় সিডি বিক্রি করতেন আলম।

চলচ্চিত্রের দৃশ্যে হিরো আলম
সংগৃহীত

সিডি যখন চলছিল না, তখন তিনি কেবল ব্যবসা শুরু করেন। কেবল সংযোগের ব্যবসার সুবাদে গানের ভিডিও তৈরি করতে শুরু করেন তিনি। ইউটিউবে প্রায় ৫০০ মিউজিক ভিডিও প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন হিরো আলম। ইউটিউবে হিরো আলমের এসব ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তাঁর ভিডিও নিয়ে কৌতুক শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় তাঁর ভিডিও নিয়ে হয় ট্রল। এরপর তিনি শুরু করেন সিনেমা প্রযোজনা ও অভিনয়। গত নির্বাচনে নিজ এলাকা থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীও হয়েছিলেন আলম।‘সাহসী হিরো আলম’ সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন সাকিরা মৌ, রাবিনা বৃষ্টি, নুসরাত জাহান, কালা আজিজ প্রমুখ। সিনেমাটি পরিচালনা করছেন এ আর মুকুল। গল্প লিখেছেন পিজি মোস্তফা। চিত্রনাট্য করেছেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় তাঁর ভিডিও নিয়ে হয় ট্রল।
সংগৃহীত