তিন বন্ধু মোনালিসার প্রেমে পড়ে
গল্পটা ১৯২৭ সালের, ঢাকার পুরানা পল্টনের। সে এলাকার তিন তরুণ—বিকাশ, অসিত ও হিতাংশু। দিনের বেশির ভাগ সময় তিন বন্ধু একসঙ্গে থাকে, যতটা এবং যতক্ষণ সম্ভব। তিন ব ন্ধুই একসঙ্গে একজনের প্রেমে পড়ে, নাম তার অন্তরা। তবে তিন বন্ধুর কাছে মেয়েটির নাম হয়ে যায় মোনালিসা। তিন বন্ধুর নিঃস্বার্থ ভালোবাসাকে উপজীব্য করে ‘আমরা তিনজন’। বুদ্ধদেব বসুর গল্প অবলম্বনে রচিত নাটকটি আজ মঞ্চস্থ হবে জাতীয় নাট্যশালায়, গঙ্গা–যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবে।
নাটকের গল্পে দেখা যায়, হঠাৎ করেই এক দিন রাস্তায় মোনালিসার সঙ্গে তাদের দেখা হয়ে যায়, তার সঙ্গে মা–বাবাও আছে। মোনালিসার বাবা তাদের বাসায় দাওয়াত করে। এক বৃষ্টিমুখর দিনে ওদের বাড়ি যায় তারা।
সেদিন মোনালিসার সঙ্গে তেমন কোনো কথা হয় না। এর মধ্যেই টাইফয়েডে পড়ে মোনালিসা। প্রায় এক মাস দিনরাত সেবা দিয়ে তাকে সুস্থ করে তোলে তারা।
সুস্থ হয়ে মোনালিসারা রাঁচি চলে যায়। ঠিকানা রাখা হয়নি, তিন বন্ধুরই তাই মন খারাপ। যেদিন ওরা ফিরল, সেদিন স্টেশনে কচি কলাপাতা রঙের শাড়ি আর লালচে মুখাবয়বের মোনালিসাকে দেখে মুগ্ধ হয় ওরা। তাদের রাঁচির গল্প শোনায় মোনালিসা। দেখতে দেখতে তিন বন্ধু হয়ে উঠল চারজন। হঠাৎ এক দিন তিন বন্ধু জানতে পারে মোনালিসার বিয়ে। বিয়ের পর কলকাতা চলে যায় মোনালিসা। কদিন পর জানা গেল ঢাকায় আসছে মোনালিসা এবং সে অন্তঃসত্ত্বা। মোনালিসাকে সবসময় ঘিরে থাকে তিন বন্ধু।
যাতে মন ভালো থাকে, সব সময় তিন বন্ধুরই সেই চেষ্টা। এক অমাবস্যার রাতে প্রসবব্যথায় ছটফট করতে থাকে মোনালিসা। তার চাপা কান্না তিন বন্ধুর বুক বিদীর্ণ করে।
শীতের রাতে পল্টন মাঠে না খেয়ে না ঘুমিয়ে রুদ্ধশ্বাসে প্রতীক্ষা করতে থাকে তিন বন্ধু। ভোরের প্রথম ছাইরঙা আলোয় ওরা দেখতে পায় মোনালিসার বাবার বেদনার্ত নির্বাক মুখ। রাশি রাশি ফুল আরও নানান কিছু দিয়ে সাজানো হয় মোনালিসার শবদেহ। তিন বন্ধু শ্মশানে বয়ে নিয়ে যায় সেই শবদেহ।
‘আমরা তিনজন’ নির্দেশনা দিয়েছেন লিয়াকত আলী লাকী। নাটকে মোট আটটি চরিত্র: বিকাশ, অসিত, হিতাংশু, অন্তরা, দে–বাবু, সুমি, হীরেনবাবু ও ভৃত্য। এ চরিত্রগুলোকে মঞ্চে এনেছেন লিয়াকত আলী লাকী, মাস্উদ সুমন, ফজলুল হক, আজিজুর রহমান, অনন্যা নীশি, স্বদেশরঞ্জন দাশগুপ্ত, সোনিয়া আক্তার, জিয়া উদ্দিন, শিশিরকুমার রায়।
আজ সন্ধ্যা ৭টায় নাটকের প্রদর্শনী শুরু হবে।