মুনীর চৌধুরী, সেলিম আল দীন স্মরণে...

‘আমরা বাঁচব, আমরা মরব না। আমরা কবরে যাব না।’ ঐতিহাসিক ‘কবর’ নাটকের সংলাপ এটি। নাটকে পুলিশ যখন গোপনে ভাষাশহীদদের সমাহিত করার উদ্যোগ নেয়, সে সময় ভেসে আসে এ ঐতিহাসিক সংলাপ। আর চারদিকে প্রতিধ্বনি ওঠে, ‘আমরা মরব না’। ভাষা আন্দোলন ও ভাষাশহীদের নিয়ে লেখা এ অমর নাটকের স্রষ্টা মুনীর চৌধুরী। এটিই বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ওপর লেখা প্রথম নাটক। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী থাকার সময়ে মুনীর চৌধুরী নাটকটি লেখেন ১৯৫৩ সালের ১৭ জানুয়ারি। এটি কারাগারেই প্রথম মঞ্চস্থ হয় ওই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারিতে। ঐতিহাসিক এ নাটকটি গতকাল দেখা গেল শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায়।
জাতীয় নাট্যশালার টিকিট কাউন্টারের সামনে বিশাল প্লাস্টিক ব্যানার। এ ব্যানারটিকে আলো করে আছেন দুটি পরিচিত মুখ। একজন মুনীর চৌধুরী, অন্যজন সেলিম আল দীন—যাঁরা আলো দিয়েছেন বাংলাদেশের মঞ্চ নাট্য ভুবনে। এ দুই গুণীজনের পাঁচটি নাটক নিয়ে বিশেষ নাট্য প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে শিল্পকলা একাডেমি। নাটকগুলো মঞ্চস্থ করছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাট্যকলা বিভাগ আর নাট্য শিক্ষার প্রতিষ্ঠান। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে নাট্য প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন লাকী ইনাম, সারা যাকের ও রোকেয়া রফিক বেবী। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী।

উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে মঞ্চস্থ হয় ভাষা আন্দোলন নিয়ে মুনীর চৌধুরীর অমর নাটক ‘কবর’। নাটকটি মঞ্চস্থ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনন জামান।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় রয়েছে আবদুল হালিম প্রামাণিক সম্রাটের নির্দেশনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের নাটক ‘বংশধর’। কাল মঙ্গলবার ১৫ নভেম্বর কাজী তৌফিকুল ইসলামের নির্দেশনায় প্রাচ্যনাট স্কুল অব অ্যাকটিং অ্যান্ড ডিজাইন পরিবেশন করবে সেলিম আল দীনের ‘মুনতাসীর ফ্যান্টাসী’। ১৬ নভেম্বর কৌশিক সরকারের নির্দেশনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগ পরিবেশন করবে মুনীর চৌধুরীর ‘মিলিটারী’ এবং ১৬ নভেম্বর নাট্য প্রদর্শনীর শেষ দিনে শেকানুল ইসলাম শাহীর নির্দেশনায় আবদুল্লা আল-মামুন থিয়েটার স্কুল মঞ্চস্থ করবে ‘বংশধর’।