ভালোবাসা দিবসে ‘লাভ লেটার্স’

লাভ লেটার্স নাটকে পাঠাভিনয় করছেন ফেরদৌসী মজুমদার ও রামেন্দু মজুমদারছবি: খালেদ সরকার

অনন্ত শাহেদ চৌধুরী আর মাইশা ইসলাম ভালোবাসা দিবসে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে পড়ে শোনাবেন চিঠি। ছবি, ঈদকার্ড আর নববর্ষের শুভেচ্ছাপত্রে তাঁদের প্রেমের ইশারাভরা লেখা। আর পুরোনো প্রেমের স্মৃতি বহন করা প্রৌঢ় এই চরিত্র দুটি মঞ্চে রূপ দেবেন বরেণ্য নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার ও ফেরদৌসী মজুমদার। সহকারী হিসেবে থাকবেন রবিন বসাক ও নাজমুন নাহার।
আবদুস সেলিমের অনুবাদে মার্কিন নাট্যকার এ আর গার্নির ‘লাভ লেটার্স’-এর পাঠাভিনয়ে বুধবার মঞ্চে উঠবেন এই দুই নাট্যকুশলী। ত্রপা মজুমদারের নির্দেশনায় এটি থিয়েটারের ৪৮তম প্রযোজনা। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে রূপান্তরিত এ নাট্য নির্মাণে দুই চরিত্রের একে অন্যকে লেখা চিঠি পড়ার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে মাইশা ও অনন্তের জীবনের কাহিনি।

দর্শক পরিভ্রমণ করেন তাঁদের জীবনের পথে পথে; যার প্রধান ৫টি পর্যায়—এই দুই চরিত্রের কলেজজীবন, বিশ্ববিদ্যালয়জীবন, কর্মজীবন, ভালো-মন্দের মিশেলে জীবনের এক অন্য রকম অধ্যায় আর সর্বশেষ আত্ম-অনুধাবন স্তরে উপনীত হওয়া।  
নাটকে দুটি বিপরীত স্বভাবের মানব-মানবীর কৈশোর থেকে শুরু করে জীবনের অন্তিমপর্যায় অবধি বহুবিধ ঘটনাপ্রবাহ উঠে এসেছে তাঁদের পত্র বিনিময়ের ভেতর দিয়ে। ব্যক্তিগত আবেগ-অনুভূতির পাশাপাশি সমকালীন সামাজিক রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ, বিশেষত ছয় দফার আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের বিষয়গুলো একটি বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।

নাটকের শেষ দৃশ্যে রামেন্দু মজুমদার–ফেরদৌসী মজুমদার জুটি
প্রথম আলো

অনন্ত পড়ালেখা করেছেন ক্যাডেট কলেজে। ব্যারিস্টারি পড়েছেন লন্ডনে। সরাসরি অংশ নিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে। পরে যুদ্ধাপরাধ নিয়ে গবেষণা আর রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন। সংসদ সদস্য হয়েছেন, মন্ত্রী হয়েছেন। স্ত্রী আর দুই সন্তান নিয়ে তাঁর সফল জীবন। অপর দিকে মাইশা কনভেন্ট স্কুলে পড়ালেখা করে ভর্তি হয়েছেন আর্ট কলেজে। সেখান থেকে প্যারিসে উচ্চশিক্ষা। তাঁর ছবির প্রদর্শনী হয়েছে লন্ডনে। শিল্পী হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন। বিয়ে করেছেন এক ব্রিটিশ নাগরিককে। দুই মেয়ে তাঁর। তবে শেষ অবধি তাঁর সংসার টেকেনি। শেষ জীবনটা বড়ই বিষণ্ন তাঁর।

অনন্ত-মাইশার জীবন এক সরলরেখায় এগোয়নি, এক বিন্দুতে মিলিতও হয়নি। তাঁদের ভেতরে গভীর বন্ধুত্বের চেয়ে এক গভীরতর সম্পর্ক বিরাজমান থেকেছে সব সময়। প্রকাশ্যে পরস্পরের কাছে স্বীকার না করলেও জীবনের একপর্যায়ে এসে তাঁরা উভয়েই অনুভব করেছেন, এই সম্পর্ক আসলে প্রেমের। তাঁরা প্রগাঢ়ভাবেই দুজন ভালোবেসেছেন দুজনকে। কিন্তু তার পরিণতি হলো বিয়োগান্ত।