আসছে ‘ক্রীতদাসের হাসি’

‘ক্রীতদাসের হাসি’ নাটকের দৃশ্য। ছবি : সংগৃহীত

মঞ্চে আসছে আরেকটি নতুন নাটক। রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের পরিবেশনায় আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে শওকত ওসমানের উপন্যাস অবলম্বনে নাটক ‘ক্রীতদাসের হাসি’। নি‍র্দেশনা দিয়েছেন রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের প্রধান সাইদুর রহমান। এর আগে ঢাকায় আরও বেশ কয়েকটি দল নাটকটি মঞ্চে এনেছিল।

নাটকটিতে অভিনয় করেছেন রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের একদল শিক্ষার্থী। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে নাটকটির বিশেষ প্রদর্শনী হয়। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় একই ভেন্যুতে প্রযোজনাটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হবে। শনিবার সন্ধ্যায় হবে দ্বিতীয় মঞ্চায়ন।

আরও পড়ুন

প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নির্দেশক সাইদুর রহমান বলেন, দাস প্রথা বিলুপ্ত হলেও বর্তমান আর্থসামাজিক বিশ্বব্যবস্থায় দাসত্বের রূপান্তর ঘটেছে। ক্ষমতার নিরঙ্কুশ আধিপত্য মানুষের সহজাত চিন্তা ও কর্মের স্বাধীনতাকে সংকুচিত করে নিয়ত পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দী করছে।

‘ক্রীতদাসের হাসি’ নাটকের দৃশ্য। ছবি : সংগৃহীত

কিছুসংখ্যক মানুষ আজ বিশ্বায়নের যুগে শাসনক্ষমতার কৌশলী ব্যবস্থাপনায় সুবোধ শান্ত আজ্ঞাবহ গোষ্ঠীতে পরিণত হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় শওকত ওসমানের ‘ক্রীতদাসের হাসি’ যুগস্পর্শী ও সমকালীন।

নানা ঘটনার মাঝে ভালোবাসাকে উপজীব্য করে এগিয়েছে নাটকের কাহিনি। ঘটনাচক্রে বাগদাদ অধীশ্বর বাদশা হারুন অর রশীদের বেগম জুবায়দার বাদী মেহেরজানের সঙ্গে হাবসি গোলাম তাতারির প্রেম হয়। তাঁদের হৃদয় উৎসারিত হাসি যেন পৃথিবীর সব সুখকে ছাপিয়ে যায়। এদিকে অসুখী হারুন অর রশিদ যেন সুখের ভিক্ষুক। তিনি হাসতে পারেন না। একদিন নিভৃতে  তিনি তাতারি আর মেহেরজানের হাসি শুনে ঈর্ষান্বিত হন। হারুন ভাবেন গোলামরা এত সুন্দর করে হাসতে পারলেও তিনি হাসতে পারেন না। সেই দুঃখবোধ থেকে মনে জাগে ক্রোধ।

বাদশা ঈর্ষান্বিত হয়ে তাতারি ও মেহেরজানকে বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেন। হাবসি গোলাম তাতারিকে দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দিয়ে স্বাধীন করে দেওয়া হয়। ধনদৌলত ও প্রাচুর্য দিয়ে তাতারির সেই প্রাণখোলা হাসি কিনে নিতে চান বাদশা। কিন্তু মেহেরজানের কাছ থেকে আলাদা হওয়ার পর সব হাসি হারিয়ে ফেলেন তাতারি। শত চেষ্টা করেও খলিফা আর তাতারিকে হাসাতে পারেন না। চলতে থাকে তাঁর ওপর নির্যাতন। একপর্যায়ে তাতারি বলে ওঠেন, ‘দিরহাম দৌলত দিয়ে ক্রীতদাস গোলাম কেনা চলে। বাদী কেনা সম্ভব। কিন্তু ক্রীতদাসের হাসি না।’

শিল্পকলা একাডেমির পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জুয়েল চৌধুরী, সজিব হোসেন, মাইশা মাসফিকা তানিসা, প্রীতি সূত্রধর, সাইফুল ইসলাম, রিফাত আরা জুঁই, সমর কান্তি সিংহ, সানজিত ইসলাম, পলক চক্রবর্তী, আলফেয়ার্ড এলিয়ায় জয়, মেহেদী হাসান, জয় অধিকারী, অতুল চাকমা, তানভীর আহমেদ, লাবণী, রিচেল ফ্লোরেন্স, হৃদয় হাসান ও সুমন আহমেদ রানা। নাটকের পোশাক ও মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন মহসিনা আক্তার।