শিল্পকলার নামে হল বরাদ্দের নেপথ্যে
মে মাসে ৩১ দিন হিসাবে তিন মিলনায়তনে ৯৩ দিনের মধ্যে ৫৪ দিনই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জন্য সংরক্ষিত রেখেছে বরাদ্দ কমিটি। অথচ জানা গেছে, এসব দিন আসলে ফাঁকা। এই সময়ে আবেদন করেও হল পায়নি, এমন অভিযোগ করেছে বেশ কিছু নাট্যদল।
হল বরাদ্দের এ তালিকা প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা চলছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, কোনো নাট্যদলকে না দিয়ে শিল্পকলার নামে হল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে কেন? শিল্পকলা একাডেমি এত দিন হল বরাদ্দ নিয়েই–বা কী করবে?
মে মাসে শিল্পকলার জাতীয় নাট্যশালায় ২০ দিন, স্টুডিও থিয়েটার হলে ২২ দিন ও এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে ১২ দিন শিল্পকলা একাডেমির নামে ‘সংরক্ষিত’ রেখেছে হল বরাদ্দ কমিটি।
হল বরাদ্দ নিয়ে ফেসবুক গ্রুপ ‘থিয়েটার সংযোগ’–এ জুবায়ের জাহিদ নামের এক নাট্যকর্মী প্রশ্ন তুলেছেন, ‘কী ধরনের শিল্পচর্চাটা আপনারা (শিল্পকলা একাডেমি) করতে চাচ্ছেন, যাতে ৩টা মিলনায়তনে ৫৪ কার্যদিবস আপনাদের বরাদ্দ লাগে?’
নেপথ্যে কী
বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। প্রতিষ্ঠানটির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন গতকাল দুপুরে প্রথম আলোকে জানান, এসব দিনে (৫৪ দিন) হল বরাদ্দের জন্য কোনো আবেদন পাওয়া যায়নি কিংবা কোনো নাট্যদল বা সংগঠনকে হল বরাদ্দ দেয়নি কমিটি। খালি দিনগুলোকে শিল্পকলার নামে ‘সংরক্ষিত’ রাখা হয়েছে।
মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনের ভাষ্য, ফাঁকা দিনগুলো শিল্পকলা একাডেমির হাতে রাখা হয়েছে। এসব দিনে হল বরাদ্দ পেতে আবেদন করতে পারে নাট্যদল কিংবা সংগঠন। কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে হল বরাদ্দ দেওয়া হবে।
শিল্পকলা একাডেমি জানিয়েছে, আগেও যেসব দিনে হল বরাদ্দ দেওয়া হতো না, সেসব দিন বরাদ্দের তালিকায় খালি রাখা হতো। মে মাস থেকে হল বরাদ্দ কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে ‘সংরক্ষিত’ দেখানো হয়েছে। চাইলে কেউ শো করতে পারবেন।
বেশ কিছু নাট্যদল আবেদন করেও হল পায়নি, এমন অভিযোগের বিষয়ে শিল্পকলা একাডেমির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা আগেও ঘটেছে। শিল্পকলা আবেদন করলেই কেউ হল পেয়ে যাবে, এটা কিন্তু নীতিমালায় বলা নেই। হল বরাদ্দ কমিটি নানা বিষয় বিচার-বিবেচনা করে। প্রথমত, মানসম্পন্ন নয়, এমন দল আবেদন করলে কমিটি বরাদ্দ দেয় না। অনেকে আগের মাসে আবেদন করেছে কিন্তু শো করেনি, শেষ মুহূর্তে হল বাতিল করার কারণে আরেকটা দল শো করতে পারল না। কিছু কিছু দলের এ রকম ব্যাপার আছে।’