বিরতির পর মঞ্চে ফিরছে ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে’

থিয়েটার ফ্যাক্টরির নাটক ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে’ মঞ্চে আসে ২০১৯ সালের ২৫ জুলাইসংগৃহীত

‘প্রকৃতি ও প্রেম কেমন হাত ধরাধরি করে চলে; প্রেম কীভাবে শিল্প সৃষ্টির রসদ জোগান দেয়; প্রেম কত আদরে-যতনে, অপেক্ষায়-উপেক্ষায় ধ্রুবতারার মতো জীবনের আঙিনায় জেগে থাকে—এমন অনেক গহন অবগাহনের ডাক পাঠায় এ নাটক। আলোকিত হয় শিল্পীর সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্কের বহু জানা-অজানা দিক। এমনকি রাষ্ট্রীয় অনুগ্রহ আর চিন্তার স্বাধীনতার মতো স্পর্শকাতর প্রসঙ্গও।’ কথাগুলো নাট্যকার অংশুমান ভৌমিকের। ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে’ নাটক প্রসঙ্গে লিখেছিলেন তিনি।

থিয়েটার ফ্যাক্টরির নাটক ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে’ মঞ্চে আসে ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই।

নাটকটি দর্শকদের মধ্যে সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানে নাটকটির অনেকগুলো প্রদর্শনী হয়। গত বছর জুলাই মাসে নাটকটির শেষ প্রদর্শনী হয়। দীর্ঘ ছয় মাসের বিরতির পর সাড়াজাগানো এ নাটক আবার মঞ্চে আসছে। আজ শুক্রবার ও কাল শনিবার নাটকটির পরপর দুটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে এবং বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মঞ্চে।
নাটকটি ২৩তম ভারত রঙ্গ মহোৎসব ২০২৪-এ নির্বাচিত নাটক হিসেবে বাংলাদেশ থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছে। ভারত রঙ্গ মহোৎসবে বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণকারী ৫টি নাটক নিয়ে ১ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘ভাষার সঙ্গ নাট্যরঙ্গ বাংলাদেশ উৎসব’। আজ এ উৎসবেই দেখা যাবে নাটকটি।
‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে’ নাটকের আখ্যান রচিত হয়েছে কবি কালিদাসকে কেন্দ্র করে। তবে নির্দেশক অলোক বসুর মতে, এটি কালিদাসের জীবনী নয়। এ নাটকে মল্লিকা এক অনিবার্য চরিত্র। কালিদাস আর মল্লিকার জীবনের নানা মর্মস্পর্শী ঘটনা নিয়ে এগিয়েছে নাটক। নির্দেশক অলোক বসু জানান, নাটকে কবি কালিদাসের জীবনের এক বিচিত্র পর্ব তুলে আনা হয়েছে। একজন কবি থেকে রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে কালিদাসের আবির্ভাব, তাঁর জীবনে প্রেম, প্রকৃতি উঠে এসেছে। পাশাপাশি ক্ষমতার সঙ্গে সৃজনশীলতার যে দ্বন্দ্ব এবং সেই দ্বন্দ্ব থেকে বেরিয়ে এসে কবি কালিদাস কীভাবে কবিতার কাছে ফিরে আসতে চেয়েছেন, তা অত্যন্ত হৃদয়স্পর্শীভাবে উঠে এসেছে এ নাটকে।

নাটকে কবি কালিদাসের জীবনের এক বিচিত্র পর্ব তুলে আনা হয়েছে

‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে’ নাটকটি রচনা করেছেন মোহন রাকেশ। অনুবাদ করেছেন অংশুমান ভৌমিক। নির্দেশক বলেন, ‘যাঁরা কবি কালিদাসকে জানেন, তাঁর কাব্য ও নাটকের খোঁজ রাখেন কিংবা এসব কিছুরই খবর রাখেন না, তাঁরা সবাই অন্তত একটিবার আসতে পারেন। আশা করি, ভালো লাগবে।’ নাটকে আলোক পরিকল্পনা করেছেন ঠান্ডু রায়হান। মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন কামালউদ্দিন কবির।

অলোক বসু
সংগৃহীত

সংগীত ও পোশাক পরিকল্পনা রামিজ রাজু ও মহসিনা আক্তারের। কোরিওগ্রাফি করেছেন আমিনুল আশরাফ। এ নাটকে অভিনয় করছেন সঞ্জিতা শারমীন, শামসুন নাহার, রামিজ রাজু, শারমীন মাসরুরা খানম, হাসানুজ্জামান খান, আর কে এম মোহ্‌সেন, দিপু মাহমুদ, অলোক বসু, মুকুল সিরাজ, সুরভী রায়, আশা আক্তার, আয়েশা হিমু প্রমুখ।