আবার এল সে সন্ধ্যা

শুরু হয়েছে গঙ্গা–যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব

দুই সপ্তাহ আগেও সবকিছু ছিল নীরব, নিষ্প্রাণ। অতিমারির কারণে থমকে ছিল ঢাকাসহ সারা দেশের নাট্যাঙ্গন। মঞ্চ যাঁদের ধ্যান-জ্ঞান, সেই মঞ্চের নাট্যকর্মীরাও দিনের পর দিন গৃহবন্দী। মঞ্চে আলো জ্বলেনি। গতকাল শুক্রবার বিকেলটা ছিল অন্য রকম, আলোকোজ্জ্বল। শত শত মানুষের উপস্থিতিতে প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। প্রধান প্রবেশমুখের টিকিট কাউন্টার থেকে দোতলায় মিলনায়তন পর্যন্ত ছিল দর্শকদের সারি, প্রতিটি নাটকেই ছিল দর্শকদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি। মঞ্চনাটক, পথনাটক, মূকাভিনয়, নাচ, গান—সব মিলিয়ে যেন হারানো সন্ধ্যাকে ফিরে পাওয়ার দিন ছিল কাল। যেমনটি দেখা যেত অতিমারির আগে।

শুরু হয়েছে গঙ্গা–যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব। বছরের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক এ আয়োজন ঘিরে শিল্পকলার সব কটি মঞ্চে চলছে নাটক।

কোলাজ নৃত্য পরিবেশন করে স্পন্দন

গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক পর্ষদের আয়োজনে গতকাল সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। উৎসব আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর, ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের সাম্মানিক সভাপতি রামেন্দু মজুমদার, নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ, আতাউর রহমান, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী প্রমুখ।

জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে উৎসবের পর্দা ওঠে। এরপর কোলাজ নৃত্য পরিবেশন করে স্পন্দন। প্রধান মিলনায়তনে থিয়েটার (বেইলি রোড) মঞ্চস্থ করে পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়। পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে ছিল আরণ্যক নাট্যদলের কহে ফেসবুক ও স্টুডিও থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয় ঢাকা জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রযোজিত জনকের মৃত্যু নেই।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ

উৎসব উপলক্ষে প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে উন্মুক্ত মঞ্চ ও নাট্যশালার লবিতে উপভোগ করা যাবে পথনাটক, মূকাভিনয়, নৃত্যালেখ্য, সংগীত, আবৃত্তি, নৃত্য, ধামাইল গান, গম্ভীরা, বাউল গানসহ নানা সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। উৎসবে পরিবেশনা নিয়ে আসছেন দেশের ১৪০টি দলের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার শিল্পী।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে প্রাচ্যনাটের সার্কাস সার্কাস, পরীক্ষণ থিয়েটারে ভাগের মানুষ। উন্মুক্ত মঞ্চের অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল ৪টায়। জাতীয় সঙ্গীত, নৃত্যকলা ও আবৃত্তি মিলনায়তনের অনুষ্ঠান শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়। অনুষ্ঠানে থাকছে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী’র গীতিনৃত্যনাট্য- কেমন আছে বাংলাদেশ, ধৃতি নর্তনালয়’র নৃত্যালেখ্য- প্রেম ও প্রকৃতি।

জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে উৎসবের পর্দা ওঠে

১২ অক্টোবর শেষ হবে উৎসব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে এবারের উৎসব।