এক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী আমি

গত শতকের বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ থেকে কয়েকজন কত্থক শিখতে গিয়েছিলেন ভারতের পদ্মবিভূষণ পণ্ডিত বিরজু মহারাজের কাছে। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা এই সাধকের অন্য শিক্ষার্থীদের মতো তাঁরাও নিজ নিজ ক্ষেত্রে খ্যাতিমান। নিজেদের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন গুরুর তালিম। গত রোববার দিবাগত রাতে ভারতের দিল্লিতে প্রয়াত হন এই নৃত্যগুরু। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। বিরজু মহারাজের প্রয়াণে স্মৃতিচারণা করলেন তাঁরা।

সাজু আহমেদ ও পণ্ডিত বিরজু মহারাজ
ছবি: খালেদ সরকার

শুরুতে বিরজু মহারাজকে প্রতাপশালী এক রাজার মতো মনে হতো। শিষ্যরা দেখতাম বসে তাঁর পা টিপছেন। মনে হলো, ভুল জায়গায় চলে এলাম না তো? কিন্তু একবার তাঁর পারফরম্যান্স দেখে যে কি হলো জানি না, আমি কেঁদে ফেললাম। দেখলাম, আমার আশপাশের অনেকেই কাঁদছেন।

রামায়ণ নৃত্যনাট্যে তিনি আমাকে একজন বৃদ্ধের একটা ভূমিকা দিয়েছিলেন। দু–একবার অনুশীলনের পর আমার সেটা ভালো লাগল না। মনে হলো, একজন তরুণ হয়ে আমি বৃদ্ধের অভিনয় করব? মহারাজজি কারও কাছে শুনেছিলেন যে আমি যাত্রায় অভিনয় করেছিলাম। তিনি আমাকে ডেকে বললেন, তুমি আমাকে একটু করে দেখাও তো। আমি নবাব সিরাজউদ্দৌলার একটা অংশ করে দেখালাম, তিনি নিজের ক্যামেরায় ভিডিও করলেন। তারপর কাছে ডেকে দেখালেন, এভাবে না করে এভাবে করো, সেটাই ভালো হবে।

লক্ষ্ণৌতে মহারাজজি যে বাড়িতে জন্মেছিলেন, বাবা-দাদারা যে বাড়িতে তাঁকে তালিম দিয়েছিলেন, সেই বাড়িটি আনুষ্ঠানিকভাবে জাদুঘরকে দেওয়া হলো। সেই ঐতিহাসিক আয়োজনে আমিও ছিলাম।

পণ্ডিত বিরজু মহারাজ
খালেদ সরকার