রাতে ফেসবুকে নরেন বিশ্বাস স্মরণায়োজন

নরেন বিশ্বাস। ছবি : সংগৃহীত

বাক্‌শিল্পাচার্য নরেন বিশ্বাসের জন্মদিনে নিয়মিত অনুষ্ঠান আয়োজন করে কণ্ঠশীলন। একজন বিশিষ্ট সংস্কৃতিসেবীকে দেওয়া হয় নরেন বিশ্বাস পদক। কিন্তু এ বছর করোনা মহামারির কারণে সেই অনুষ্ঠান হচ্ছে না। তবে নরেন বিশ্বাসকে স্মরণ করা হচ্ছে ভিন্নভাবে।

আজ সোমবার রাত সাড়ে আটটায় কণ্ঠশীলনের ফেসবুক পেজ থেকে এ উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে সরাসরি অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের শুরুতে নরেন বিশ্বাসের জীবনী নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। এরপর বিপ্লব বালার প্রবর্তনায় থাকবে প্রযোজনা ‘ফিরে চল আপনপানে’। নরেন বিশ্বাসের পত্নী অঞ্জলি বিশ্বাসের ধারণকৃত কথামালা দিয়ে শেষ হবে অনুষ্ঠান। অনলাইনে এ অনুষ্ঠানটিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কণ্ঠশীলনের সভাপতি সন্‌জীদা খাতুন ও সাধারণ সম্পাদক জাহীদ রেজা নূর।

বিভিন্ন সময় নরেন বিশ্বাস পদক পেয়েছেন নিখিল সেন, আশরাফুল আলম, সন্‌জীদা খাতুন, শামসুর রাহমান, নিরঞ্জন অধিকারী, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, খান সারওয়ার মুরশিদ, সৈয়দ হাসান ইমাম, আসাদুজ্জামান নূর, খালেদ খান যুবরাজ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, ফেরদৌসী মজুমদার, আলী যাকের, বিপ্লব বালার মতো গুণী ব্যক্তিরা। গত বছর পদক পেয়েছেন আবৃত্তিকার ও অভিনয়শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়।

নরেন বিশ্বাস ১৯৪৫ সালের ১৬ নভেম্বর গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মাঝিগাতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা ভাষা ও বাংলা উচ্চারণ নিয়ে রয়েছে তাঁর অনেক কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি ভাষাচর্চাবিষয়ক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। কণ্ঠশীলনের আবর্তনের তিনি ছিলেন একজন শিক্ষক। ১৯৯৮ সালের ২৭ নভেম্বর তিনি মারা যান।

নরেন বিশ্বাস ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে যোগ দেন। আমৃত্যু সেখানেই অধ্যাপনা করেছেন। আবৃত্তি সংগঠন কণ্ঠশীলনের শুরু থেকেই তিনি যুক্ত ছিলেন। এ ছাড়া আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, থিয়েটার স্কুল, শব্দরূপ, গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটসহ অনেক প্রতিষ্ঠানে উচ্চারণের ক্লাস নিয়ে বাংলা ভাষা ও উচ্চারণের বিকাশে রেখেছেন অবদান। তাঁকে স্মরণ করে ১৯৯৯ সাল থেকে কণ্ঠশীলন চালু করেছে নরেন বিশ্বাস পদক। প্রথমবার পদক পেয়েছিলেন নাজিম মাহমুদ (মরণোত্তর)। পরের বছর ২০০০ সালে পেয়েছিলেন গোলাম মুস্তাফা। বিভিন্ন সময় নরেন বিশ্বাস পদক পেয়েছেন নিখিল সেন, আশরাফুল আলম, সন্‌জীদা খাতুন, শামসুর রাহমান, নিরঞ্জন অধিকারী, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, খান সারওয়ার মুরশিদ, সৈয়দ হাসান ইমাম, আসাদুজ্জামান নূর, খালেদ খান যুবরাজ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, ফেরদৌসী মজুমদার, আলী যাকের, বিপ্লব বালার মতো গুণী ব্যক্তিরা। গত বছর পদক পেয়েছেন আবৃত্তিকার ও অভিনয়শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়।

তাঁর রচিত জনপ্রিয় কিছু বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘বাংলা উচ্চারণ অভিধান’, ‘প্রসঙ্গ বাংলা ভাষা’, ‘বাংলা উচ্চারণ সূত্র’, ‘নিহত কুশীলব’, ‘রৌদ্রদিন’, ‘ক্রুশবিদ্ধ যীশু’, ‘তমসীর ফাঁসি’ ইত্যাদি।

নরেন বিশ্বাস ‘ঐতিহ্যের অঙ্গীকার’ নামে বাংলা সাহিত্য নিয়ে ১৩ পর্বের ক্যাসেট বের করেছিলেন। ‘চর্যাপদ থেকে শুরু করে আধুনিক সাহিত্য’ তিনি অসাধারণভাবে বন্দী করেছেন ম্যাগনেটিক ফিতায়। এর স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি অর্জন করেছেন কলকাতার ‘আনন্দ পুরস্কার’। তাঁর রচিত জনপ্রিয় কিছু বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘বাংলা উচ্চারণ অভিধান’, ‘প্রসঙ্গ বাংলা ভাষা’, ‘বাংলা উচ্চারণ সূত্র’, ‘নিহত কুশীলব’, ‘রৌদ্রদিন’, ‘ক্রুশবিদ্ধ যীশু’, ‘তমসীর ফাঁসি’ ইত্যাদি।

বাক্‌শিল্পী নরেন বিশ্বাস বাংলা শুদ্ধ উচ্চারণকে প্রাঞ্জল করে যেমন দেশের সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে সহজ করে তুলেছিলেন, তেমনি আবৃত্তি ও নাটকের দলগুলোর দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছিলেন উচ্চারণ প্রাঞ্জলতার বার্তা। শুদ্ধ উচ্চারণের কর্মবিস্তৃতি আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের বাংলাভাষী বাকশিল্পীদের ঘরে ঘরে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো, বিশেষ করে রেডিও-টেলিভিশন কর্তৃপক্ষের কাছে নরেন বিশ্বাসের ‘শুদ্ধ উচ্চারণ সূত্রাবলী’ ও ‘বাংলা উচ্চারণ অভিধান’ একমাত্র নির্ভরযোগ্য পথপ্রদর্শক।