সুরের মায়াজালে সাজানো প্রহর
সন্ধ্যা হয়েছে বেশ আগেই। দু-চারজন করে দর্শক-শ্রোতা এসে জড়ো হচ্ছেন। আয়োজকেরা মঞ্চ সাজিয়ে প্রস্তুত। নির্দিষ্ট সময় গড়াতেই মিলনায়তন পূর্ণ। আসন না পেয়ে অনেকে পেছনে দাঁড়িয়ে। এরপর একের পর এক সুরের মায়াজাল। গত রোববার সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক সংগঠন সরগমের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন ছিল এমনই। মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সাইফুর রহমান অডিটরিয়ামে ছিল এ আয়োজন।
শুরুতে হালকা অন্ধকারে ডুবেছিল অনুষ্ঠান মঞ্চ। সেই অন্ধকার ভেদ করে প্রজ্বলিত মোমবাতি হাতে নিয়ে মঞ্চে এলেন কলাকুশলীরা। তখন আঁধার সরে আলো ফুটল সরগমের সাজানো প্রহরে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্মরণ করা হলো সদ্য প্রয়াত বাংলার কিংবদন্তি শিল্পী শাহনাজ রহমতউল্লাহকে। স্মরণ করা হলো আরেক প্রয়াত শিল্পীজন দোহারের কালিকা প্রসাদ ভট্টাচার্যকেও। এরপরই মেলে ধরা হলো গানের ডালি। সরগমের অন্যতম সংগঠক শিল্পী ঝুমুর রায়ের সঞ্চালনায় শুরু হলো গান। সুরের মায়াজালের ঘোরে তখন মজে গেছে মিলনায়তন। একে একে গান হচ্ছে ‘বন্ধু রঙিলা, রঙিলা...’, ‘নিশীথে যাইও ফুল বনে রে ভ্রমরা...’। লোকগান, হারানো দিনের সিনেমার গান, আধুনিক, দেশের গানেরÑএক পাঁচমিশালি প্রহর। সুর এবং কথায় অতীত ও বর্তমানকে একাকার করে দেওয়া। এতে বয়োজ্যেষ্ঠরা যেমন অতীতকে ছুঁয়েছেন, নতুন প্রজন্ম পেয়েছে হারানো দিনের গানে ঐতিহ্যের ছোঁয়া।
প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সুরের প্রহরে ছিলেন শ্রোতা-দর্শকেরা। গান গেয়েছেন সরগমের সৈয়দ মুনিম আহমদ রিমন, ইন্দ্রানী রায়, আশাপূর্ণা ভট্টাচার্য, মাহবুব আলম, হাসান আহমদ, রানা খান, ঐন্দ্রিলা চাকলাদার, সুশিপ্তা দাশ, নিশীথা দাশ ও দীপায়ন বসাক। যন্ত্রে ছিলেন নেপাল ভাসপর, পিন্টু দেব ও নিউটন দেব।
গানের পরেই ছিল অনুভূতি প্রকাশের পালা। একে একে অনুষ্ঠান নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করেন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আলোকধারার সভাপতি এম এ আহাদ, আইনজীবী সমর কান্তি দাস চৌধুরী, জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ মৌলভীবাজারের আহ্বায়ক দিলশাদ পারভীন, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মুহিত, কবি আবদুল মতিন, কবি সৈয়দ মোসাহিদ আহমদ, অধ্যাপক সৈয়দ মুজিবুর রহমান, ব্র্যাক ব্যাংক মৌলভীবাজার শাখার ব্যবস্থাপক সাইফুল আলম, ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক এ এস এম শামীম চৌধুরী ও নাট্যকর্মী হিমু নাহা।