আমার কোনো অভিমান নেই
অভিনেত্রী ফারহানা মিলিকে খুব কম পাওয়া যায় পর্দায়। দুর্গাপূজা উপলক্ষে সম্প্রতি তিনি কাজ করেছেন একটি টিভি নাটকে। দুর্গাপূজার নাটক, মনপুরার যুগপূর্তি ও ব্যক্তিগত নানা প্রসঙ্গে কথা বললেন ফারহানা মিলি।
প্রশ্ন :
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকীতে একটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন। আবার পূজার নাটকে দেখা যাবে আপনাকে। বিশেষ দিবস ছাড়া পর্দায় আপনাকে কম দেখা যায় কেন?
আমি নিয়মিত অভিনয় করি। মাঝে করোনার কারণে কাজ কম করেছি। এখন পরিস্থিতি ভালো। টিকা নিয়ে নিয়মিত কাজ করছি। মাঝে দুটি খণ্ড ও ধারাবাহিক নাটকের শুটিং করেছি। আর আমি আগে থেকেই একটু ভিন্ন ধরনের গল্পে অভিনয় করতে চেয়েছি। এ জন্য আমার কাজের সংখ্যা কম। এবারও বিশেষ দিবসের নাটকে অন্য রকম একটি গল্পে শুটিং করেছি। বেহুলা–লখিন্দরের কাহিনিকে এ সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে নাটকে দেখানো হয়েছে।
প্রশ্ন :
অভিনয়ের বাইরে আর কী করেন?
আগে পরিবার, তারপর কাজ। আমার ছেলে রুসলান রশিদ ক্লাস টুতে পড়ে। তার স্কুল, অনলাইনে ক্লাস থাকে। স্বামী চাকরি করেন। সব মিলিয়ে পরিবারকে সময় দিয়ে যতটুকু পারি অভিনয়ের জন্য সময় বের করি। সবকিছু সামলে আমাকে কাজ করতে হয়। সবকিছু সামলাতে গিয়ে এখন তো আর আগের মতো এনার্জিও পাই না। এ জন্য ঢাকার বাইরে কম যাওয়া হয়। তারপরও চেষ্টা করি।
প্রশ্ন :
একসময় আপনাকে নিয়মিত পর্দায় দেখা যেত, অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন, সেই সময়কে মিস করেন?
আমি কখনোই প্রচুর কাজ করিনি। আমি সব সময়ই কম কাজ করেছি। সিরিয়াল কম করি। এখন আগের চেয়ে বেশি টেলিভিশন চ্যানেল হয়েছে, এসব কারণে মনে হতে পারে, আমার উপস্থিতি কম। আর করোনার মধ্যে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেছি। শুটিংয়ের টিম ছোট কি না, সেগুলো বুঝেই কাজ করেছি। করোনা পরিস্থিতি ভালো না হলে আমি আর বেশি কাজ করতে চাই না।
প্রশ্ন :
কোনো অভিমান ছিল?
না না, আমার কোনো অভিমান নেই। আর মিডিয়াতে কোনো মান–অভিমানের জায়গা নেই। আমি একজন অভিনয়শিল্পী। আমি সব সময় কাজকে ভালোবাসি। আমি প্রথম থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। কখনো বড় ব্রেক নিয়েছি, তেমনটি হয়নি। মনপুরার আগে থেকে আমি যেভাবে কাজ করি, এখন সেভাবেই করছি। আমি সিনেমায় নয়, নাটকে বেশি কমফোর্টেবল। আবার কবে ভালো সিনেমা করব, সেটা সময়ই বলে দেবে।
প্রশ্ন :
দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছরের ক্যারিয়ারের শুরুতে অভিনয় নিয়ে কোনো প্রত্যাশা ছিল? থাকলে সেটা কি পূরণ হয়েছে?
এত ভেবে আমি অভিনয় শুরু করিনি। আমি কিছু ভেবে এগোতে পারি না। শুধু বর্তমানকেই গুরুত্ব দিই। আজকের দিনটায় আমি সুন্দর করে কাজ করব—সেটা করছি। আমি খুবই সাদাসিধে মানুষ। ভালো কাজ হলে করব, নইলে বাসায় থাকব।
প্রশ্ন :
এখনকার কাজের ধরনে কি কোনো পরিবর্তন দেখতে পান?
পাই। সেসব পরিবর্তনে ভালোও আছে, কিছু ক্ষেত্রে খারাপও আছে। পেছনে তাকালে দেখা যায়, অভিনয়ের ধরনে পরিবর্তন এসেছে। পাঁচ বছর আগের কথাও যদি বলি, সেই তুলনায় ভালো গল্প কমে গেছে। এখন কম সময়ে তাড়াহুড়ো করে কাজ শেষ করার প্রবণতা থাকে। মানহীন কাজও হচ্ছে। তবে সেটা হতাশ হওয়ার মতো কিছু নয়।
প্রশ্ন :
মায়ের অভিনয় দেখে আপনার ছেলে কী বলে?
ছেলে আমার অভিনয় দেখে মজা পায়। আমার সব কাজই তার দেখা। আগে শুটিংয়ে যাওয়ার সময় সে বাধা দিত। এখন একটু বড় হয়েছে। আমি শুটিংয়ে যাওয়ার সময় ছেলেকে বলি, অফিসে যাচ্ছি। করোনার মধ্যে অনেক দিন বাসায় ছিলাম। তখন ছেলে বলত, ‘মা, তুমি অফিসে যাচ্ছ না কেন? অফিসে যাও।’
প্রশ্ন :
ধারাবাহিক ‘গোবিন্দপুরের গল্প’–এর কী অবস্থা?
নাটকটি এখন প্রচারিত হচ্ছে। চরিত্রটিও বেশ মজার। এই একটি ধারাবাহিক নাটকই করছি।