এক নায়কনির্ভরতা কমাতে হবে

আহমেদ রুবেল
বিদায়ী বছরের শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অবলম্বনে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘চিরঞ্জীব মুজিব’। এ ছবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আহমেদ রুবেল। ‘চিরঞ্জীব মুজিব’ মুক্তি উপলক্ষে টানা চার দিন বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্সে উপস্থিত থেকে দর্শকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও ছবি তোলেন এই অভিনেতা। ‘চিরঞ্জীব মুজিব’ চলচ্চিত্র, কাজ ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।

প্রশ্ন :

ছবিটি নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট?

‘চিরঞ্জীব মুজিব’ ছবিটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে কাজ করাটা ছিল অনেকটা চ্যালেঞ্জের। ১৯৪৯ থেকে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর জেলজীবন, জেলে অনশন, পুলিশের হয়রানি, পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের নির্যাতন, আত্মত্যাগ এবং লড়াই–সংগ্রামের দিনগুলো তুলে ধরা হয়েছে এ চলচ্চিত্রে। সেখানে বঙ্গবন্ধুর কথা বলার ধরন, হাঁটাচলা, সিগারেট ধরানোর স্টাইলসহ সবকিছু অনুকরণ করে ঐতিহাসিক এ চরিত্রে অভিনয় করাটা ছিল আমার জন্য অনেক দুঃসাধ্য কাজ। আমার অভিনয়শৈলীর সবটুকু ঢেলে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রকে দর্শকের সামনে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। ছবিটি যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা সিনেমা হল থেকে বেরিয়ে প্রশংসা করেছেন।

প্রশ্ন :

‘চিরঞ্জীব মুজিব’ চলচ্চিত্রে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের জন্য নির্বাচিত হলেন কীভাবে?

কোনো পুরস্কার বা প্রাপ্তির আশায় ‘চিরঞ্জীব মুজিব’ চলচ্চিত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অবলম্বনে নির্মিত এ ছবির কাহিনিতে যে সময়কাল ধরা হয়েছে, সেখানে বঙ্গবন্ধু ছিলেন ২৭ বছরের হ্যাংলা, পাতলা এক তরুণ। সে কারণে আমার চেহারার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছিলেন নির্মাতা। পরে নানা অ্যাঙ্গেলে আমার ছবি তুলে বঙ্গভবনে পাঠান। ছবি দেখে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু চরিত্রে আমাকে সিলেক্ট করেন। ফজিলাতুন্নেছা রেণুর চরিত্রেও অন্য একজনের অভিনয়ের কথা ছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা পরে পূর্ণিমাকে নির্বাচন করেন।

‘লাল মোরগের ঝুটি’ সিনেমায় আহমেদ রুবেল
ছবি: ফেসবুক

প্রশ্ন :

ছবিটি নিয়ে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?

‘চিরঞ্জীব মুজিব’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে শুধু বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্সে। ছবিটি দেখে দর্শকেরা খুবই উচ্ছ্বসিত। সবাই বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে আমার অভিনয়ের প্রশংসা করছেন, এটা বড় পাওয়া। মুক্তির দিন থেকেই হলে প্রচুর দর্শক আসছেন, প্রতিটি শোতে শত শত শিক্ষার্থী আসছেন। যাঁরা ৩০-৪০ বছর ধরে সিনেমা হলে আসেননি, সেই প্রবীণেরাও সিনেমা হলে এসে ছবিটি দেখছেন। এতেই বোঝা যায়, ছবিটি দর্শকের প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে।

প্রশ্ন :

বিদায়ী বছরটা কেমন গেল, নতুন বছরে প্রত্যাশা কী?

করোনার কারণে বিদায়ী বছরে সিনেমা-নাটকে কাজ কম হয়েছে, সেই অর্থে খারাপ গেছে। তবে বিদায়ী বছরের শেষ দিকে নূরুল আলম আতিকের ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ এবং ওই বছরের শুরুর দিকে মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত আহমদ ছফার বিখ্যাত উপন্যাস ‘অলাতচক্র’ অবলম্বনে হাবিবুর রহমান পরিচালিত ছবি ‘অলাতচক্র’ মুক্তি পেয়েছে। দর্শকেরা দুটি ছবির প্রশংসা করেছেন। নতুন বছরে আরও ভালো কিছু ছবিতে কাজ করার প্রত্যাশা আছে।

প্রশ্ন :

নতুন কাজ নিয়ে কী ভাবছেন?

জাজ মাল্টিমিডিয়ার নতুন ওয়েব সিরিজ ‘জ্বিন’–এর শুটিং চলছে। গাজীপুরের হোতাপাড়ায় টানা দুই সপ্তাহ শুটিং করেছি। কিছু কাজ বাকি আছে। আজ (৫ জানুয়ারি) এ ছবির কাজ শেষ হবে। এতে দীপা খন্দকার, তারিক আনাম খান ছাড়াও অনেকেই অভিনয় করছেন। এ ছাড়া আরও নতুন তিনটি ছবির কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে নূরুল আলম আতিকের ‘পেয়ারার সুবাস’ ছবিতে জয়া আহসান, তারিক আনাম খানের সঙ্গে কাজ করেছি। জয়ার সঙ্গে গত বছরও ‘অলাতচক্র’ ছবিটি করেছি। অন্যদিকে দেশভাগের কাহিনি নিয়ে আশুতোষ সুজনের ছবি ‘দেশান্তর’–এর শুটিং শেষ করেছি। এ ছবিতে আমার সঙ্গে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। এ ছাড়া সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে প্রসূন রহমানের ছবি ‘প্রিয় সত্যজিৎ’–এর কাজও শেষ হয়েছে। এ ছবিতে আমার সঙ্গে অভিনয় করেছেন মৌটুসি রহমান। আগামী ফেব্রুয়ারিতে কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে ‘অন্তর্বর্তী’ ছবিতে।

‘চিরঞ্জীব মুজিব’-এ আহমেদ রুবেল
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

চলচ্চিত্রে ব্যস্ত, নাটক ছেড়ে দিলেন?

বিটিভিতে নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ রচিত ও ফজলে আজিম জুয়েল প্রযোজিত ধারাবাহিক নাটক ‘জিন্দাবাহার’–এ শুটিং প্রায় শেষ হয়েছে। ১৮৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর নবাব পরিবারকে ঢাকায় নির্বাসন দেওয়া হয়। সে সময় ঢাকার নায়েবে নাজিম ছিলেন জাসরত খাঁ। সেই জাসরত খাঁর চরিত্রেই অভিনয় করেছি। নবাব পরিবারকে ঢাকা শহরে নিয়ে আসার পর কীভাবে চলেছে শাসনব্যবস্থা, সেই প্রেক্ষাপট নিয়ে ৫২ পর্বের এই ধারাবাহিকে মামুনুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, আরমান পারভেজ মুরাদসহ অনেকেই অভিনয় করেছেন।

প্রশ্ন :

১৯৯৩ সালে বাণিজ্যিক ধারার সিনেমা ‘আখেরি হামলা’ থেকে ২০২১–এ ‘চিরঞ্জীব মুজিব’-এ বঙ্গবন্ধুর চরিত্র। দীর্ঘ ২৮ বছরে কতটা ছবিতে অভিনয় করলেন? অভিনয় করতে গিয়ে মনে দাগ কেটে যাওয়ার মতো চরিত্র ছিল কোন ছবিতে?

১৯৯৩ সালে নাদিম মাহমুদ পরিচালিত বাণিজ্যিক ধারার ছবি ‘আখেরি হামলা’ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেছিলাম। এরপর অনেকটা না বুঝেই বাণিজ্যিক ধারার ১৫টি ছবিতে অভিনয় করেছি। পরে ‘চন্দ্রকথা’, ‘শ্যামল ছায়া’সহ আরও ৩০টির মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছি। ‘চন্দ্রকথা’ ও ‘শ্যামল ছায়া’তে অভিনয় করে পুরস্কার পেলেও মনে দাগ কাটার মতো অভিনয় অবশ্যই ‘চিরঞ্জীব মুজিব’–এ বঙ্গবন্ধু চরিত্র।

প্রশ্ন :

অভিনয়ে আসার শুরুর দিনগুলো মনে পড়ে?

১৯৮৮ সালে ছাত্র ছিলাম। তখন ঢাকা থিয়েটার করতাম। সেলিম আল দীনের ‘হাতহদাই’ নাটক দিয়ে মঞ্চে অভিষেক। এরপর একুশে টেলিভিশনে গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘স্বপ্নযাত্রা’ নাটক দিয়ে ছোট পর্দায় অভিনয় শুরু। একে একে হুমায়ূন আহমেদের ‘পোকা’, ‘প্রেত’, ‘গোরা মজিদ’, ‘অতিথি’, ‘নীল তোয়ালে’, ‘বিশেষ ঘোষণা’, ‘প্রতিদান’, ‘নবাব গুন্ডা’, ‘এফএনএফ’সহ অনেক নাটকে অভিনয় করেছি। ‘আখেরি হামলা’ চলচ্চিত্র দিয়ে সিনেমায় অভিনয় শুরু। এরপর ‘চন্দ্রকথা’, ‘ব্যাচেলর’, ‘গেরিলা’, ‘দ্য লাস্ট ঠাকুর’, কলকাতার প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সঞ্জয় নাগ পরিচালিত ভিন্নধারার চলচ্চিত্র ‘পারাপার’, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’সহ অনেক ছবিতে অভিনয় করেছি। সর্বশেষ ছবি ‘চিরঞ্জীব মুজিব’।

প্রশ্ন :

পুরস্কার?

বাচসাস ও মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছি একবার করে। ‘চন্দ্রকথা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার মিলেছে।

প্রশ্ন :

আহমেদ রুবেলকে আগামীতে দর্শকেরা বৈচিত্র্যময় চরিত্রে দেখবেন?

আমি ক্যারিয়ারে কম সিনেমা-নাটকে অভিনয় করেছি। এর প্রধান কারণ, চরিত্রের ধরন বুঝে বেছে বেছে অভিনয় করেছি। বৈচিত্র্যময় চরিত্র ছাড়া কাজ করিনি। একই ধরনের চরিত্রে বারবার অভিনয় করিনি। আগামীতেও অবশ্যই দর্শকেরা আরও বৈচিত্র্যময় চরিত্রে আমাকে দেখবেন।

আহমেদ রুবেল
সংগৃহীত

প্রশ্ন :

নাটকের চেয়ে চলচ্চিত্রে বেশি ঝুঁকলেন। চলচ্চিত্রে কি সুদিন ফিরছে?

ভালো গল্পের ভালো ছায়াছবি কিন্তু ১৯৯০–এর দশকেও নির্মিত হয়নি। ১ হাজার ৪০০ সিনেমা হল ছিল। সিনেমা হল টিকিয়ে রাখার জন্য নির্মাতারা নানা ধাঁচের ছবি তৈরি করেছেন। ‘চাঁদনী’র মাধ্যমে বাংলা সিনেমায় টিনএজ কাহিনিনির্ভর চলচ্চিত্র নির্মাণের হিড়িক পড়ে। চলচ্চিত্র মানেই নাচ, গান, ফাইটিং থাকতেই হবে, এমন নয়। কাল্পনিক বা বাস্তব কাহিনি নিয়েও হতে পারে। তবে সেই কাহিনিতে বিশ্বাসযোগ্য গল্প থাকতে হবে। মানুষের আশা, আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে। সিনেমায় বাস্তব গল্পকেও তুলে ধরা সম্ভব। তবে সেই গল্পে সমাজের চারপাশের পরিচিত গল্প থাকতে হবে। পরিবারের সাধারণ গল্প নিয়েও কাহিনি হতে পারে, ঐতিহাসিক গল্পও হতে পারে, ফ্যান্টাসিও হতে পারে। সিনেমা সিনেমাই। সেখানে স্বল্পদৈর্ঘ্য বা পূর্ণদৈর্ঘ্য বলে কোনো বিভাজন থাকতে পারে না। প্যারালালও হতে পারে না। চলচ্চিত্রশিল্পের অবস্থা নানা সংকটে। ভালো গল্পের ছায়াছবি বছরে এক–দুটি নির্মিত হলে সিনেমা হল টিকে থাকবে কীভাবে? নানা স্বাদের গল্পের ছবি তৈরি হতে হবে। আবার সিনেমা হলে দর্শক ফেরাতে হলে ভালো ছবির পাশাপাশি হল আধুনিকায়ন হতে হবে। সিনেপ্লেক্স বেশি করে গড়ে তুলতে হবে। ৩০০ টাকা টিকিট কেটে সিনেমা হলে কেউ যাবেন না। বেশি ছবি নির্মাণের পাশাপাশি হলের সংখ্যা বাড়াতে হবে। চলচ্চিত্রে সুদিন ফেরাতে ধাপে ধাপে উদ্যোগ নিতে হবে। আকাশসংস্কৃতি বা ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে মুঠোফোন, টেলিভিশনে ছবির দর্শকও থাকবে। এখন ভালো সিনেমা হল হাতে গোনা ২০টি। আরও বেশি সিনেমা হল নির্মিত হলে, সিনেমা হলের পরিবেশ ফিরে এলে, ভালো গল্পের সিনেমা তৈরি হলে দর্শক হলে ফিরবেন। দর্শক দিনের পর দিন প্রতারিত হয়েছেন, ধোঁকার শিকার হয়েছেন। দর্শকের আস্থা ফেরাতে হবে। সিনেমা হল নির্মাণে শুধু অনুদান দিয়ে এ শিল্পে সুদিন ফিরবে না। ভালো নির্মাতাদের এ শিল্পে ফেরাতে হবে।

প্রশ্ন :

ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণের অন্তরায় কী?

একসময়ের চিত্রা ফিল্মস, আলমগীর পিকচার্স, আনন্দমেলা সিনেমার মতো চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান সিনেমা তৈরি করত। এখন জাজ মাল্টিমিডিয়া আর শাপলা মিডিয়া ছাড়া বড় বাজেটের চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান নেই। চলচ্চিত্রে পচন ধরেছে নানা কারণে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দায়ী চলচ্চিত্রের শিল্পের মানুষের ঘৃণ্য রাজনীতি। ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণের নাম নেই, শুধু শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে হাউকাউ করেন। প্রযোজক-পরিচালক সমিতির পদ দখলের হুড়োহুড়ি করেন। পদ নিয়ে কাদা–ছোড়াছুড়িতে এ শিল্প এখন ধ্বংসের মুখে। চলচ্চিত্রে এখন গুণী পরিচালক, গুণী প্রযোজক, গুণী অভিনেতা-অভিনেত্রী নেই। খ্যাতিমান নির্মাতা, প্রযোজকেরা এখন এ শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। নায়ক রাজ্জাক যখন সুপারহিট নায়ক, তখন আলমগীর, সোহেল রানা, উজ্জল, ফারুক, বুলবুল আহমেদ, ওয়াসিম, জাভেদের মতো ৮-১০ জন নায়ক একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। কেউ কাউকে নেগেটিভ চোখে দেখতেন না। প্রত্যেকের ছবি ছিল সুপারহিট। এখন এক নায়ক নিয়ে হাউকাউ পড়েছে। দুনিয়ার সব প্রতিভা কী শাকিব খানের ভেতরে আছে? এটা বিশ্বাস করি না। আর কেউ নেই? এখানে কেউ কাউকে সহ্য করতে পারে না। কেউ কেউ রয়েছেন, তাঁরা নিজেরা একাই এ শিল্প দখল করে থাকতে চান। এখন এ শিল্প ঘুরে দাঁড়ানো খুব কঠিন। এ শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে হলে নির্মাণশৈলীর সঙ্গে জড়িত ভালো নির্মাতা, ভালো কাহিনিকার, ভালো প্রযোজক, ভালো সংগীত পরিচালকসহ সব কলাকুশলীকে এগিয়ে আসতে হবে।

আহমেদ রুবেল

প্রশ্ন :

অনেকে বলেন, শাকিব খান ছাড়া তো দর্শকেরা হলে আসছেন না। শাকিব খানের বিকল্প নায়ক কি এই শিল্পে নেই?

সত্যি বলতে, শাকিব খানের বিকল্প নায়ক এখনো আমাদের দেশে এই মুহূর্তে নেই। এ শিল্পকে বাঁচাতে হলে এক নায়কনির্ভরতা কমাতে হবে। ভালো নির্মাতা, ভালো প্রযোজক, ভালো কাহিনিকারকে এ শিল্পকে বাঁচাতে এগিয়ে আসতে হবে। শাকিব খানের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ থেকে ঢালিউডের চলচ্চিত্রশিল্পকে বের করে আনতে হবে। এটা সবার জন্য মঙ্গল।

প্রশ্ন :

১৯৮৮ সালে ঢাকা থিয়েটারের ‘হাতহদাই’ থেকে ২০২১-এ নজরুল ইসলামের ‘চিরঞ্জীব মুজিব’। ক্যারিয়ারের ৩৪ বছরের পথচলা। আহমেদ রুবেলকে দর্শকেরা আগামীতে কী ধরনের চরিত্রে দেখবেন?

৩৪ বছর ধরে অভিনয়শিল্পে টিকে থাকা একজন অভিনেতার জীবনে নিঃসন্দেহে দীর্ঘ পথচলা। সামনে আরও ভালো চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে চাই, দর্শকদের হৃদয়ে আরও যুগ যুগ বেঁচে থাকতে চাই। চলচ্চিত্রশিল্প টিকে না থাকলে দর্শকের কাছে অভিনেতা আহমেদ রুবেলের কোনো মূল্য নেই। এ কারণে আমার মতো অভিনেতাকে এ শিল্পে টিকিয়ে রাখতে হলে আগে এ শিল্পকে বাঁচাতে এগিয়ে আসতে হবে। দর্শকদের সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখতে হবে।