এমন নয় যে, যাঁরা ভালো অভিনয় করেন, তাঁদের ধরে পেটাব
চরকিতে মুক্তি পেয়েছে তাঁর ‘সুগার ফ্রি’। আছে ধারাবাহিক ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস রিলোডেড’, ‘বাবা মা ভাই বোন’সহ বেশ কিছু নাটকের শুটিং নিয়ে ব্যস্ততা। কাজ ও ব্যক্তিগত বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বললেন অভিনেতা তামিম মৃধা।
প্রশ্ন :
‘সুগার ফ্রি’তে আপনার সঙ্গে সাবিলার বেশ কিছু দৃশ্য অনলাইনে ঘুরছে...
ওটিটির কাজগুলোর ক্ষেত্রে একটু দেরিতে রেসপন্স আসে। ইতিমধ্যে কাজটি নিয়ে অনেকেই প্রশংসা করেছেন। বিভিন্ন গ্রুপে দেখছি, কিছু দৃশ্যের ভিডিও ঘুরছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমি ক্যারিয়ারে প্রথম সাবিলা নূরের সঙ্গে অভিনয় করি। ২০১৪ সালের কথা। তার ছয় বছর পরে আবার আমরা একসঙ্গে গত বছর নাটকটির শুটিং করেছিলাম। আমাদের দেখা হতো, কথা হতো, কিন্তু একসঙ্গে অভিনয় করা হতো না।
প্রশ্ন :
ছয় বছর পর সাবিলার সঙ্গে কাজ করে কী মনে হলো?
তখন আমি নতুন। সাবিলা তিন বছর কাজ করে লাইট-ক্যামেরা বুঝত। আমি তখন অনেক কিছুই বুঝতাম না। এবার একসঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে মনে হলো, সাবিলাকে নতুন করে পেয়েছি। এখন সাবিলা অনেক ম্যাচিউর।
প্রশ্ন :
ইউটিউবার থেকে অভিনয়ে এসেছেন, কখনো কি শুনতে হয়েছে, এসেই জায়গাটা পেয়ে গেছেন?
অনেকবার শুনতে হয়েছে, খুব সহজেই ওপরে উঠে গেলি। কিন্তু আমার স্ট্রাগলটা অনেকেই জানেন না। পরিশ্রম করেই ইউটিউব চ্যানেল দাঁড় করিয়েছি, চাকরির ফাঁকে অভিনয় করেছি। এখন কাজ বাড়তে থাকায় চাকরি ছেড়ে অভিনয়ে নিয়মিত হয়েছি। একসময় শুটিংয়ে গিয়ে দুপুরের খাবারও খেতে পারতাম না।
প্রশ্ন :
অভিনয় শুরুর দিনগুলোর কথা মনে আছে?
প্রথম দিকে শুটিংয়ে সহকারী পরিচালকদের জিজ্ঞাসা করতাম, ‘ভাই আমি কি দুপুরের খাবার খেতে পারব, ক্ষুধা লাগছে।’ তখন তাঁরা বলতেন, ‘তোমার চেয়ে বড় আর্টিস্ট স্ক্রিপ্ট নিয়ে বসে আছেন। তুমি খাইতে চাও।’ খাওয়া হতো না। এভাবে এক দিন দেখেন তারিক আনাম খান। তিনি বললেন, ‘এভাবে বললে তোকে খাইতে দেবে না। যখন আমি বসব, পাশে বসে ভাত খেয়ে নিবি।’ এমন লিজেন্ডদের আদর-ভালোবাসা আমার সেরা পাওয়া। আমার সঙ্গে সিনিয়রদের খুবই ভালো সম্পর্ক।
প্রশ্ন :
কখনো কি মনে হয়েছে, টিকে থাকতে পারবেন না?
এটা আমি ভাবিনি। মিউজিক এবং অভিনয় আমার প্যাশনের জায়গা। ভালো লাগে, এ জন্যই অভিনয় করি। কিন্তু কমপিটিশনের কথা সব সময় মাথায় থাকে। সবার মাঝে একটা প্রতিযোগিতা থাকা উচিত। আমাকে তো চাইতে হবে, ভালো অভিনয় করতে চাই। কেউ ভালো অভিনয় করে দেখে হিংসা হয়। আমার মনে হয়, আমিও সেভাবে ভালো অভিনয় করব। এমন নয় যে, যাঁরা ভালো অভিনয় করেন, তাঁদের ধরে পেটাব। আমি তাদের চেয়েও ভালো অভিনয় করতে চাই। সবার কাছ থেকে শিখতে চাই। এটাই আমার প্রতিযোগিতা।
প্রশ্ন :
কখনো কি কেউ বলেছেন, তুমি ট্যালেন্টেড না।
আমাদের ইউটিউবের ইমেজকে ব্যবহার করতেই কিন্তু অভিনয়ে ডেকেছে। এমন না যে ট্যালেন্টেড না হলে এখানে টিকতে পারতাম। এখানে প্রচুর প্রতিযোগিতা করতে হয়। মার্কেটে কিন্তু অভিনেতার অভাব নেই...
প্রশ্ন :
সিনিয়রদের মধ্যে কোন সহকর্মীদের অভিনয় ভালো লাগে?
আমাকে সবচেয়ে বেশি ইন্সপায়ার্ড করেন এফ এস নাঈম ভাই ও অপূর্ব ভাই। তাঁরা আমাকে আদর করেন, গাইডও করেন, গঠনমূলক সমালোচনাও করেন।
প্রশ্ন :
আপনার পছন্দের মানুষ কে?
আমার সবচেয়ে পছন্দের মানুষ আমার মা। আমার মা ১৯৭৮ সালে নতুন কুঁড়িতে চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। পরে আমার মা আর গান করতে পারেননি। কিন্তু মায়ের কাছে থেকেই আমি সবকিছু পেয়েছি। মা সব সময় চাইতেন, আমি গান করি। আমারও ইচ্ছা ছিল গান করা। কিন্তু এখন হয়ে গেছি অভিনেতা। এখনো প্রতিদিন মাকে নিয়ে গান করি। গান আমাকে সবচেয়ে বেশি টানে।
প্রশ্ন :
কেন অভিনেতা হতে চেয়েছিলেন?
আমি কখনোই অভিনেতা হতে চাইনি। প্রথম অভিনেতা হওয়ার জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়াইনি। আমরা বন্ধুরা মিলে ভিডিও করে ফ্রেন্ডশিপ সেলিব্রেট করতাম। সেগুলো আমার বন্ধু সালমান ইউটিউবে ছাড়ত। সেখানে থেকেই অভিনয়ের ডাক পাই।
প্রশ্ন :
এখন ব্যস্ততা কী নিয়ে?
‘মানিক রতন’, ‘মা বাবা ভাই বোন’সহ বেশ কিছু সিরিয়ালে কাজ করছি। আজ চলছে ‘ব্যাচেলর পয়েন্টে’র শুটিং। প্রমোশনের জন্য সব আর্টিস্টকে নিয়ে একটি ভিডিও বানানো হচ্ছে। সিরিয়ালটি আমার ভীষণ পছন্দের। কে কে থাকবেন, জানি না। আমার ইচ্ছা আছে, তার সঙ্গে কাজ নিয়ে।