সন্তানদের নিয়েই থাকতে চেয়েছি: কানিজ সুবর্ণা

পপ গানে একসময়ের জনপ্রিয় নাম কানিজ সুবর্ণা। এক দশকের বেশি সময় সংগীতাঙ্গনে তিনি অনিয়মিত। হঠাৎ করে ফিরেছেন। তবে গানে নয়, অভিনয়ে। সে–ও চলচ্চিত্রে। বহুদিন পর গত শুক্রবার স্বামী হামিন আহমেদকে নিয়ে তিনি উপস্থিত হয়েছিলেন মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার ২০২১–এ। কেন বিরতি, সামনের পরিকল্পনাসহ নানা বিষয়ে কথা বললেন তিনি।

কানিজ সুবর্ণা

প্রশ্ন :

এত দিন কোথায় ছিলেন?

আমার আব্বু–আম্মু, ভাইবোন নিউইয়র্কে থাকেন। আমি ছাড়া আমার পরিবারের কেউই দেশে থাকে না। বিয়ে, সংসার ও সন্তান জন্মের পর আমি অনিয়মিত হয়ে পড়ি। ১০ বছরের বেশি সময় পর কোনো অনুষ্ঠানে গেলাম, মেরিল–প্রথম আলোর আয়োজনে। টানা সাড়ে তিন বছর যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। দুই সন্তানকে নিয়েও ব্যস্ততা ছিল।

প্রশ্ন :

কবে ফিরলেন?

যাওয়া–আসার মধ্যে ছিলাম। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে এসে ভেবেছিলাম এপ্রিলে চলে যাব। কিন্তু মহামারির কারণে আর যাইনি। ইমিগ্র্যান্ট হওয়ার আবেদনও করেছিলাম। করোনার কারণে সেটাও আটকে আছে।

দীর্ঘদিন পর ক্যামেরার সামনে হামিন আহমেদ–কানিজ সুবর্ণা দম্পতি
ছবি: প্রথম আলো

প্রশ্ন :

গানেও তো আপনি অনিয়মিত।

কয়েক বছর আগে ডিজে রাহাতের সঙ্গে ‘সাড়া দাও না’ গানটি করেছিলাম। গানটা নিয়ে ভালো প্রতিক্রিয়া পেয়েছিলাম। তবে এটা ঠিক, একেবারেই অনিয়মিত। শিগগিরই নতুন দুটি গানে কণ্ঠ দেব। বিয়ে, সংসার ও সন্তানদের কারণে হয়তো গানের মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারিনি। কোনো না কোনোভাবে একটা গ্যাপ তৈরি হয়েছে। ওটাও হয়তো দরকার ছিল। এখন সবকিছু ম্যানেজ করে যদি কাজ করা যায়, তাহলে করব।

প্রশ্ন :

সন্তানদের খবর বলুন

আমার দুই সন্তানই অটিজম স্পেকট্রাম। একজনের বয়স ১১, আরেকজনের ১২। কথা বলতে পারে না। ইন্টেলেকচুয়ালি ডিজঅ্যাবল। ওদের অনেক সময় দিতে হয়। হয়তো আম্মুর কাছে রেখে কাজে যেতে পারতাম, কিন্তু আমি সেটা চাইনি। সন্তানদের নিয়েই থাকতে চেয়েছি।

কানিজ সুবর্ণা

প্রশ্ন :

এত ব্যস্ত একজন তারকা, হঠাৎ থমকে যাওয়ায় মন খারাপ হয়েছিল?

সন্তানদের এমন অবস্থার কারণে শুরুর দিকে আসলে ডিপ্রেশনে ভুগছিলাম। বাচ্চারা স্বাভাবিক থাকলে হয়তো অন্য রকম হতো। এটা নিয়ে সন্তানদের বাবারও তো একটা মানসিক কষ্ট হতো। তবে এটা ঠিক, আমি কতটুকু ম্যানেজ করে কতটা কী করতে পারি, সেটাও একটা বিষয়। আমি হয়তো ম্যানেজ করতে পারিনি। হয়তো ম্যানেজ করতে চাইওনি।

প্রশ্ন :

গানের মানুষ হয়ে অভিনয় দিয়ে ফিরলেন কেন?

অভিনয় আমার খুব ভালো লাগে। প্রতিমুহূর্তে চিন্তাভাবনার বদল হয়। আমার হয়তো তাই হয়েছে। আমার মনে হয়, আগের চেয়ে অনেক ম্যাচিউরড হয়েছি। অনেক সিরিয়াসও হয়েছি। এর আগেও একবার অভিনয় করেছিলাম, সেটা ছিল নাটকে। সুবর্ণভূমি চলচ্চিত্রে অভিনয় করাটা মূলত কুদরত-ই-খুদা মামা এবং জাহিদ হোসেন (পরিচালক) মামার ইচ্ছাতেই। গল্প এবং চরিত্রটি সম্পর্কে জানার পর খুব আগ্রহ নিয়েই অভিনয় করেছি। জানি না কেমন করতে পেরেছি। এর আগে একটি সিনেমার আইটেম গানেও পারফর্ম করেছিলাম। তবে চলচ্চিত্র বিশাল একটি ব্যাপার। আমি ব্যক্তিগতভাবে খুব নার্ভাস। তবে চেষ্টা করছি। এখন অবশ্য গানের ব্যাপারেও ভাবছি। সরাসরি কিছু গানের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে মিউজিশিয়ানদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। শিগগিরই হয়তো প্র্যাকটিস সেশনে অংশ নেব।

প্রশ্ন :

কাদের অভিনয় ভালো লাগে?

সবার কাজ দেখি। সবার অভিনয় ভালো লাগে। সিনেমাও দেখি।