'তিনি এলাকার, খুব কাছের'

পরীমনি।ছবি:কবির হোসেন
পরীমনি।ছবি:কবির হোসেন

রোববার সকালে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুকে ঢাকাই ছবির এ সময়ের আলোচিত নায়িকা পরীমনির কয়েকটি ছবি ও তাঁকে নিয়ে পোস্ট প্রকাশিত হয়। এর পরপরই এ নিয়ে রীতিমতো হইচই শুরু হয়। ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে জনৈক ‘ইসমাইল’ ও পরীমনিকে নিয়ে পোস্ট ছাড়াও আরেকটি পোস্ট থেকে আরও বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করা হয়। পুরো বিষয়টি নিয়ে আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোর কথা হলো তাঁর। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরেছেন মনজুর কাদের
ফেসবুকে আপনার ‘স্বামী’ পরিচয়ে ছবি পোস্ট করা হয়েছে?
আমাকে খেপিয়ে তোলার জন্য একটা চক্র কাজটি করেছে। এর পর হঠাৎ করেই আমার কাছে মারাত্মক হারে ফোন আসা বেড়ে যায়। ফোন আসা বেড়ে যাওয়ায় ভাবলাম, কী এমন হলো যে এত ফোন আসছে! পরে দেখলাম ফেসবুকে ‘ইসমাইল’ নামের একজনের সঙ্গে আমার কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁকে আমার ‘স্বামী’ হিসেবেও পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। চারদিকে এসব নিয়ে এত আলোচনা, আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে মনে হচ্ছে, আমি সুপারস্টার হয়ে গেছি।
কেন মনে হলো আপনি ‘সুপারস্টার’ হয়ে গেছেন?
চলচ্চিত্রে অভিনয় করছি খুব অল্প সময় ধরে। এই অল্প সময়ে ভালো কয়েকজন নির্মাতার সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছি। সফলও হয়েছি। তাই কেউ আমার পেছনে লেগেছে। চলচ্চিত্রে আমি যদি কোনো বিষয়ই (সাবজেক্ট) না হতাম, তাহলে কেন এভাবে কেউ আমার পেছনে লাগবেন। আমার বাসার কাজের বুয়ার পেছনে তো কেউ লাগবে না। তাই ব্যাপারটা নিয়ে শুরুতে বিচলিত হলেও এখন আর মাথাই ঘামাচ্ছি না। এত দিন আমার মনেই হয়নি আমি সুপারস্টার। আজ যখন আমাকে জড়িয়ে এসব ফালতু বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তখন মনে হচ্ছে সত্যিই আমি সুপারস্টার।

পরীমনি।ছবি:কবির হোসেন
পরীমনি।ছবি:কবির হোসেন

কিন্তু এই ‘ইসমাইল’কে কি আপনি চেনেন না?
এই লোকটি আমার আত্মীয়ও না, বন্ধুও না। সে আমার পরিচিত। পরিচিত মানুষের সঙ্গে আমি কি ছবি তুলতে পারি না! কার মনে কী উদ্দেশ্য, তা তো আর আমি জানি না। নিশ্চয় কেউ এই বিষয়টাতে ইন্ধন জোগাচ্ছে। তা না হলে হঠাৎ করে অনেক আগের তোলা এই ছবিগুলোকে কেন সামনে নিয়ে আসা হলো! চলতি সপ্তাহে আমার নতুন ছবি ‘পুড়ে যায় মন’ মুক্তি পায়। শুনেছি ব্যবসায়িকভাবেও ছবিটি বেশ ভালো ব্যবসা করছে। তাই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জন্য মহলটা এই সময়কে বেছে নিয়েছে।
এই ‘ইসমাইল’-এর সঙ্গে তাহলে বিয়ে হয়নি?
পরিচয় থাকা মানে তো আর স্বামী না। তিনি এলাকার খুব কাছের। তার মানে তো এই না যে তাঁর সঙ্গে আমার প্রেম ছিল, সম্পর্ক ছিল আর বিয়েও হয়েছে! তাঁর কিন্তু সংসার আছে, বউ আছে। ছবিগুলো দিয়ে একটা খারাপ উদ্দেশ্যে কাজটা করা হয়েছে।
আপনার ছবি নিয়ে দ্বিতীয় যে পোস্টটি ফেসবুকে আপলোড করা হয়েছে, সেটিতে আপনাকে আরও বেশি অন্তরঙ্গ দেখা গেছে?
বিকেলে যে পোস্টটা দেখলাম, তা দেখে তো আমি নিজেই অবাক হয়ে গেছি। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল, ছবির মানুষটি আমি! এ-ও বুঝি সম্ভব! কাউকে হেয় করার জন্য মানুষ এত নিচে নামতে পারে! প্রথমত, পরের পোস্টের ছবির মানুষটা আমি না, এটা নিশ্চিত করতে চাই। একদম পরিকল্পনা করেই কেউ আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। কেউ তো বলছে, আমার বিয়ে হয়েছে। তারা কাবিননামা পেয়েছেন। আজকাল কেউ চাইলে বিয়ের কাবিননামাও বানাতে পারেন। ২০১৬ সালে এসে এসব বোঝালে তো হবে না। মানুষ এসব খুব ভালো করেই বোঝে। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই না। তা না হলে, সকালে একজন আবিষ্কার হলো, বিকেলে হলো আরেকজন! ষড়যন্ত্র না হলে এটা কেমন করে সম্ভব।
কারা ষড়যন্ত্র করছে? হঠাৎ করে কেনইবা আপনার বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করবে?
একটা গ্রুপ করছে—এটা আমি নিশ্চিত। তবে এটাও ঠিক, আমি তাদের বের করতেই পারব। একটু সময় লাগবে, এই আর কি। ফেসবুকে এ ধরনের উল্টাপাল্টা পোস্ট দিয়ে আমাকে দমানো যাবে না। সবাইকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই, ফেসবুকের ছবিগুলো ফটোশপের মাধ্যমে এমনটা করা হয়েছে। আর ছবিগুলো এমনভাবে ফটোশপ করা! সবাই হয়তো মনে করতে পারেন, শুরুরটা বিশ্বাসযোগ্য করানো গেলে পরেরটাও করানো যাবে। 

পরীমনি।ছবি:কবির হোসেন
পরীমনি।ছবি:কবির হোসেন

এটা যে ষড়যন্ত্র আপনি নিশ্চিত?
অবশ্যই। আমি এটা প্রমাণ করেই ছাড়ব। আজকে আমি সুপারস্টার, তাই আমার বিরুদ্ধে এমনটা করা হচ্ছে।
আপনি নিজেকে তাহলে সুপারস্টার মনে করেন?
অবশ্যই। তা না হলে আমাকে নিয়ে এমন গুজব কেন ছড়ানো হচ্ছে।
সুপারস্টারদের বিরুদ্ধেই বুঝি এমন গুজব ছড়ানো হয়?
একদম তাই। শোবিজে কাজ করা মানুষের, যার বাজার কাটতি আছে, তাঁকে নিয়ে গুজব আর ষড়যন্ত্র হয় বেশি। আমাকে নিয়ে এত দিন এমন গুজব ছিল না। এখন হচ্ছে। তার মানে আমি কিছু একটা তো অবশ্যই হতে পেরেছি। চলচ্চিত্রে আমি এখন অনেকেরই ভাবনার বিষয়ও বটে।
কাদের ভাবনার বিষয় আপনি?
যাঁরা এমনটা করছেন তাঁরাই।
কেন মনে করছেন এমনটা?
খুব অল্প সময়ে আমি অনেক ছবিতে অভিনয় করেছি। এই মুহূর্তে অনেক ছবিও আমার হাতে আছে। মুক্তি পাওয়া আমার ছবিগুলো ব্যবসায়িকভাবেও সফলতা পেয়েছে। তাই এমনটা আমি মনে করতেই পারি। যে করেছে ঈর্ষা থেকেই করেছে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থেকে নিশ্চয় এটা কেউ করবে না।
আপনার সঙ্গে কারও কোনো ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব নেই?
একদম না। আমি সবার সঙ্গে প্রাণখুলে কথা বলি। বড়দের সম্মান আর সহকর্মীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করি।
ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলছেন। তাহলে কি কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন?
অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে আমার ভক্তদের কাছে তো আমি মিথ্যাবাদী হয়ে যাব।
কী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছেন?
এদের বিরুদ্ধে তো আর বেআইনি কিছু নেওয়া যাবে না। অবশ্যই আইনি পদক্ষেপই নিতে হবে। আমি আমার অভিভাবকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করে দ্রুত মানহানির মামলা করব। এদের আমি হাজতে ভরবই। থানার মধ্যে নিয়ে যাওয়ার পর পিঠের ওপর যখন দুইটা পড়বে, তখন সবকিছু গড়গড় করে বের হয়ে যাবে। তবে এটাও ঠিক, এর পেছনে রাঘববোয়ালেরা আছেন। আর এই ছেলেদের শুধু ঘুঁটি বানানো হয়েছে। এদের ধরলেই আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। এদের আমি ছাড়ব না।
বিয়ের ব্যাপারে যে কথা উঠছে?
বিয়ে যদি হতো, আমি তো বলেই দিতাম। বিয়ে হলে আমার কী এমন ক্ষতি হতো। বিয়েতে তো সমস্যার কোনো কিছুই দেখছি না।