‘ভাইরাল হয়ে রাতারাতি খ্যাতি পেতে হবে, কল্পনাও করি না’

অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিমের আজ জন্মদিন। বিশেষ দিনটি তাঁর কাটছে পরিচালক রেজা ঘটকের ‘ডোডোর গল্প’ সিনেমার শুটিং ইউনিটে। ক্যারিয়ারের প্রাপ্তি–অপ্রাপ্তি ও সাংগঠনিক নানা বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর মুখোমুখি হলেন নাসিম।
আহসান হাবীব নাসিম
ছবি: ফেসবুক

প্রশ্ন :

শুভ জন্মদিন, দিনটি কীভাবে কাটাচ্ছেন?

অনেক অনেক ধন্যবাদ। দিনটিতে শুটিং পড়ে গেছে। বনানীতে শুটিং করছি। শুটিং তো আর বন্ধ করা যায় না।

প্রশ্ন :

এই দিনে শুটিং! পরিবার থেকে কোনো আবদার থাকে না?

আমার সন্তানেরা সবাই চায় দিনটি একসঙ্গে কাটাতে। আমিও চাই সবাইকে নিয়ে গ্রামে গিয়ে কাটাতে বা দূরে কোথাও একসঙ্গে যাই। কিন্তু হয় না। শুটিং পড়লে সবার মন খারাপ হয়। কিন্তু এখন আমার স্ত্রীও অভ্যস্ত হয়ে গেছে। সেও বুঝতে পারে, শুটিং থাকলে কিছু করার থাকে না। শুটিংয়েও আন্তরিকতার মধ্যে দিনটি কেটে যায়।

আহসান হাবীব নাসিম
ছবি: ফেসবুক

প্রশ্ন :

অভিনয়জীবনের আরও একটি বছর চলে গেল, পেছনে তাকালে কী মনে হয়?

আমার কাছে সব সময় মনে হয়, দিনগুলো হুরহুর করে চলে যাচ্ছে। তখন সব সময়ই মনে হয়, আরও বেশি যত্নশীল হব। যেকোনো কাজের প্রতি মনোযোগটা আরও বেড়ে যায়।

প্রশ্ন :

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কখনো কি মনে হয়েছে, সেই অর্থে অভিনয়প্রতিভার মূল্যায়ন পাননি?

আমার মূল্যায়ন হয়েছে কি না, সে জায়গায় কাউকে দায়ী করতে চাই না। আমার নিজের কাছেই মনে হয়, নিজেকে কম মূল্যায়ন করেছি। যে প্রস্তুতি আমার ছিল বা আছে, সেখানে আমার আরও অনেক কিছু করা উচিত ছিল। নিজের প্রতি বেশি অন্যায় করেছি।

আহসান হাবীব নাসিম
ছবি: ফেসবুক

প্রশ্ন :

অভিনয়শিল্পী হিসেবে যথেষ্ট যোগ্য আপনি, সে প্রমাণ বিভিন্ন সময় অভিনয়ের মধ্যে দর্শকেরা জানতে পেরেছেন। কিন্তু একই সময়ে ক্যারিয়ার শুরুর পরও অনেকেই ক্যারিয়ারে আপনার চেয়ে ভালো জায়গায় রয়েছেন। এটা নিয়ে কী বলবেন?

অবশ্যই অনেকেই এগিয়ে আছেন। তাঁরা যে সুযোগ পেয়েছেন, আমি সে সুযোগ পাইনি। আবার সুযোগ এলেও হয়তো সঠিকভাবে করা হয়নি। ভাগ্যটাও সাহায্য করেনি। ব্যাটে–বলে মেলেনি। তবে এসব নিয়ে ভেবে তো লাভ নেই। এখনো আমি সব সময় যে চরিত্রে অভিনয় করি, তার মধ্যে থাকতে চাই। আমার একটাই চাওয়া, মানুষ যেন বলে যে ভালো করেছি। শিল্পের জায়গা থেকে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। জনপ্রিয় বা ফাটাফাটি কিছু করতে হবে—এগুলো আমার মনে হয় না।

প্রশ্ন :

আজ বরেণ্য অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের জন্মদিন....

আমি কিন্তু শৈশব থেকেই আসাদুজ্জামান নূর ভাইয়ের সংলাপ বলা পছন্দ করতাম। তাঁর কণ্ঠ অসাধারণ। তিনি কণ্ঠের জাদুকর। তিনি অনেক কিছু না করে এত অল্পের মধ্যেই অনেক কিছু করে ফেলেন। সে জায়গা থেকে নূর ভাই আমার আদর্শ। যত দিন যাচ্ছে, নূর ভাই নূর ভাই হিসেবেই থাকছেন। তিনি আমাদের কাছে কখনোই বৃদ্ধ হচ্ছেন না।

প্রশ্ন :

নূর ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হলে জন্মদিন নিয়ে কথা হয়?

কথা হয়। মাঝেমধ্যেই বলেন, ‘চলে এসো।’ কিছুদিন আগেও দেখা হয়েছিল। বললাম, নূর ভাই, আপনি সবার কাছে চিরসবুজ ভাই হয়ে থাকবেন। ভাই সব সময় ভালো থাকুন। তিনি সবার কাছে আপন হয়ে থাকুন। তিনি দীর্ঘজীবী হোন।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নাসিম।
ছবি: ফেসবুক

প্রশ্ন :

জীবন নিয়ে কী ভাবেন?

জীবনকে আমি সহজ, সরল, সাধারণভাবে দেখি। জীবনকে কখনোই কঠিন করিনি। সম্পর্ক, কাজ সবকিছুর গুরুত্ব দিয়েছি। কখনো অনেক কিছু করে ফেলতে হবে, ভাইরাল হয়ে রাতারাতি খ্যাতি পেতে হবে, কল্পনা করি না। কাজের মাধ্যমেই শক্তি ও ভালোবাসা পেতে চাই।

প্রশ্ন :

অভিনয়শিল্পী সংঘের নেতা হিসেবে আপনি প্রতিবার বিপুল ভোটে জয়ী হন। বেশির ভাগ সদস্যই আপনাকে পছন্দ করেন কেন?

কারণ, আমি সবাইকে পছন্দ করি, কাউকেই অপছন্দ করি না। কে আমার শত্রু, তা খুঁজতে যাই না। ভালো–মন্দ মিলিয়েই মানুষ। একজন মানুষ শতভাগ ভালো হতে পারেন না। আবার পুরোটাই খারাপও হতে পারেন না। আমি সবার ভালোটা দেখি, খারাপটা দেখি না। দেখলেও সতর্ক করি।