দিন শেষে জনপ্রিয়তার দরকার আছে
নাটকে ক্যারিয়ার মাত্র এক বছরের। এর মধ্যেই ভক্তদের কাছ থেকে প্রশংসা পাচ্ছেন তানজিম সাইয়ারা তটিনী। এখন তিনি প্রশংসা পাচ্ছেন গত বছর শেষে মুক্তি পাওয়া জাকারিয়া সৌখিনের ‘পথে হলো দেরী’ নাটকটি দিয়ে। ব্যক্তিগত সফরে বর্তমানে নেপালে আছেন অভিনেত্রী। সেখান থেকে কাজ ও অন্যান্য প্রসঙ্গে গতকাল তাঁর সঙ্গে কথা বলল বিনোদন।
প্রথম আলো :
ফেসবুকে দেখলাম নেপালের ছবি দিয়েছেন...
হ্যাঁ, আমি এখানে এসেছি থার্টি ফার্স্টের সময়। বলা যায় ঘুরতে। রাজনৈতিক অস্থিরতা আর নতুন বছর উদযাপন, সব মিলিয়ে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনো কাজ করব না। সময়টা নিজেকেই দিচ্ছি।
প্রথম আলো :
ইউটিউবে অপূর্বর সঙ্গে আপনার অভিনীত নাটক ‘পথে হলো দেরী’ নিয়ে তো সবাই প্রশংসা করছেন।
নাটকে আমাদের আয়োজনটা ছিল অনেক বড়। অনেক সময় নিয়ে কাজটি করেছি। এ কারণে আমাদের প্রত্যাশাও বেশি ছিল। যতটা প্রত্যাশা ছিল, তার চেয়ে বেশি সাড়া পেয়েছি। নাটকটি নিয়ে দর্শক কথা বলছেন, এখনো দেখছেন, প্রশংসা করছেন, এটা ভালো লাগছে।
প্রথম আলো :
ক্যারিয়ারে আপনাকে দর্শকের কাছে সবচেয়ে বেশি পরিচিত করেছে কোন নাটক?
মিজানুর রহমান আরিয়ান ভাইয়ের ‘সুহাসিনী’ নাটকে অভিনয় করে সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পেয়েছিলাম। তার পর থেকে দর্শক আমাকে ‘সুহাসিনী’ হিসেবেই ডাকেন। পরে এক বছর তেমন কোনো কাজ করিনি। গত বছর ক্লোজআপ ওয়ানের নাটক ‘সময় সব জানে’ দর্শকেরা পছন্দ করেন। এই নাটক দিয়ে আমার একক নাটক শুরু হয়।
প্রথম আলো :
ক্যারিয়ার অল্প সময়ের। এর শুরুটা নিয়ে আপনি খুশি?
২০১৯ সালে বিজ্ঞাপনচিত্র দিয়ে আমার ক্যারিয়ার শুরু। পরে তিন বছর বিজ্ঞাপনই বেশি করেছি। এক বছর হলো নিয়মিত নাটক করছি। চার বছরের ক্যারিয়ার নিয়ে আমি খুবই খুশি। যখন নাটক থেকে বেশি প্রশংসা পাচ্ছিলাম, তখন অভিনয় কিছুটা কমিয়ে দিই। চেয়েছিলাম, যেসব গল্পে অভিনয় করব, সেগুলো যেন ভালো হয়। তখন মনে হয়েছিল যে শুরুটা ভালো হলে মানুষের প্রত্যাশাও ওই রকমই থাকবে। এই জন্য আমি কম কাজ করেছি আর অপেক্ষা করেছি ভালো গল্প ও পরিচালকের জন্য। সব মিলিয়ে খুশি।
প্রথম আলো :
তরুণ অভিনয়শিল্পীদের অনেকেই বলেন, পরিচিতির জন্য শুরুতে বেশি কাজ করা উচিত। আপনি কী মনে করেন?
এটা অনেকেই মনে করেন। অবশ্যই ঠিক আছে। দিন শেষে জনপ্রিয়তার দরকার আছে। আমার যদি একটা ভক্তশ্রেণি তৈরি না হয়, তাহলে মানুষ আমার কাজ কেন পছন্দ করবে? কিন্তু অনেক বেশি কাজ করে যদি কাজের মান কমিয়ে ফেলি, তাহলে দীর্ঘ মেয়াদে আমাকে কেউ মনে রাখবেন না। ভালো কাজ করলেই দর্শক মনে রাখেন। ৫০টা কাজ করেও যদি মনে রাখার মতো কাজ না করা হয়, তাহলে কিন্তু বছর শেষে দর্শক আমাকে মনে রাখবেন না। একটা মান ধরে রেখে সব সময় কাজ করতে চেয়েছি। ভালো কাজ করলে জনপ্রিয়তা এমনিতেই আসবে।
প্রথম আলো :
সমসাময়িক কাউকে নিজের প্রতিযোগী মনে করেন?
সত্যি বলতে আমার নিজের কাজ নিয়ে এতটাই চিন্তিত থাকি যে সমসাময়িক কে কী করলেন, এগুলো নিয়ে ভাবি না। তাঁদের নিয়ে ভাবলে আমি আমাকে নিয়ে কখন ভাবব? আমার প্রতিযোগী আমি নিজেই। অন্যরা কে কী করলেন, সেটা দিয়ে আমার কিছু আসে যায় না। আমি নিজেকে দেখে নিজের ভুলগুলো ধরি।
প্রথম আলো :
অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, এটা ধরে রাখাটা কঠিন মনে হয় কি না?
যেকোনো ক্যারিয়ারেই কিন্তু অনিশ্চয়তা আছে। অভিনয়ও তেমন। আমি যদি অভিনয়ের দক্ষতা বাড়াতে পারি, তাহলে সাফল্য আসবেই। সবাই কিন্তু ভালো করছেন না। যাঁদের নিবেদন আছে, যাঁরা কাজের প্রতি সৎ এবং নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন, তাঁরাই কিন্তু দিন শেষে টিকে থাকবেন। এসব প্রস্তুতি আমার মধ্যে আছে। আমি কাজ করে যেতে চাই।