‘উৎসব’ আর ‘তাণ্ডব’ দেখার ইচ্ছা আছে

ছোট পর্দার ব্যস্ত অভিনেত্রী তানিয়া বৃষ্টি। পবিত্র ঈদুল আজহার এক ডজন নাটকে রয়েছেন তিনি। ঈদ ও সাম্প্রতিক ব্যস্ততা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো

প্রথম আলো:

ঈদ কেমন কাটল?

অনেক ভালো। বরাবরই ঈদে পরিবারের সঙ্গে থাকি, সময় ভালো কাটে। কিন্তু এবার আমার ছুটিটা খুবই কম। আজ (সোমবার) থেকেই শুটিং শুরু হয়েছে, টানা পাঁচ–ছয় দিন শুটিং হবে। মোশাররফ করিম ভাই দেশের বাইরে ছিলেন, উনি আসার পর জমে থাকা কিছু কাজ শেষ হচ্ছে। এরপর হয়তো ছুটি পাব।

প্রথম আলো:

ঈদে আপনার কাজগুলো নিয়ে যদি বলেন...

ঈদে এক ডজনের মতো কাজ মুক্তি পাচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকটির নাম উল্লেখ করলে—জাকিউল ইসলাম রিপনের পরিচালনায় নাটক ‘সানগ্লাস ফ্যামিলি’। সহশিল্পী হিসেবে মোশাররফ করিম ভাই ছিলেন। আমাদের এই তিনজনের জুটিতে অনেক ভালো কাজ এসেছে। এ ছাড়া হাসান রেজাউলের পরিচালনায় ‘মনে পড়ে তোমাকে’ নাটকে অভিনয় করেছি, এটিতে আমার সঙ্গে ছিলেন ইয়াশ রোহান। পার্থ শেখের সঙ্গে পাষানী নাটকে অভিনয় করেছি, এটি পরিচালনা করেছেন এল আর সোহেল। এ ছাড়া ‘ভালোবাসা অন্তহীন’, ‘দ্য সেলসম্যান’ ও ‘মিস্টার নেগেটিভ’ নাটক রয়েছে। আর দুটি কাজকে আমি আলাদা করে উল্লেখ করব, একটা হলো গৌতম কৈরী দাদার মরিয়ম, আরেকটি হলো তুহিন হোসেনের ‘জয়িতার দিনরাত্রি’। দুটি গল্পই নারীকেন্দ্রিক। আশা করি সবার ভালো লাগবে।

প্রথম আলো:

ঈদের সিনেমা দেখার পরিকল্পনা কী?

‘উৎসব’ আর ‘তাণ্ডব’ দেখার খুব ইচ্ছা আছে। কিন্তু গতকাল থেকে সিনেপ্লেক্সে টিকিট মিলছে না, অনলাইনে অনেক চেষ্টা করেছি। এই দুটি সিনেমা বিশেষ পছন্দের তালিকায় আছে। আর আমি নিয়মিত সিনেমা হলে বাংলা সিনেমা দেখি, তাই বাকিগুলোও সময় মিলিয়ে দেখে ফেলব। টিকিট না পাওয়ার সঙ্গে শুটিং—কিছুটা ফ্রি হয়ে হয়তো দেখা হবে।

তানিয়া বৃষ্টি
ইনস্টাগ্রাম থেকে
প্রথম আলো:

বড় পর্দায় আপনাকে কবে দেখতে পাবে দর্শক?

সিনেমা নিয়ে এখনো আমার আলাদা করে ও রকম কোনো পরিকল্পনা নেই। অভিনয় ভালোবাসি, তা যে মাধ্যমেই হোক। তবে সবারই স্বপ্ন বা ইচ্ছা থাকে সিনেমায় কাজ করার, সেই ইচ্ছা তো আছেই। তবে সিনেমা নিয়ে আলাদা কোনো পরিকল্পনা এখনো নেই। কোনো নির্মাতা-প্রযোজক যদি কোনো কাজের জন্য আমাকে নিতে চান তখন পরিকল্পনা করা হবে।

প্রথম আলো:

নতুন কাজে রাজি হওয়ার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়গুলো মাথায় থাকে?

প্রথমেই দেখি চিত্রনাট্য ও গল্প, কাজটিতে আমার চরিত্রের গুরুত্ব কতটা, কতটা চ্যালেঞ্জিং। কারণ, ভিন্ন ভিন্নভাবে নিজেকে দেখতে চাই আমি। আর দ্বিতীয়টা হলো নির্মাতা। কারণ, চিত্রনাট্য ও গল্প যতই ভালো হোক না কেন, নির্মাণ ভালো না হলে সব ব্যর্থ। এই দুটো দেখার পর বাকি কিছু দেখি, সহশিল্পী থেকে সবকিছু।

প্রথম আলো:

যেকোনো চরিত্রের জন্য আপনার প্রস্তুতির প্রক্রিয়া কেমন?

চলতি পথে যেকোনো মানুষকে দেখলে আমি তার সবকিছু খেয়াল করি। আশপাশের চরিত্র নিয়ে আমি বিশ্লেষণ করি। আমার কাছে যখন কোনো চরিত্রের প্রস্তাব আসে, তখনই মেলানোর চেষ্টা করি এমন চরিত্র আমি কোথায় দেখেছি। এ জিনিসটা আমাকে অনেক সাহায্য করে। আর কোনো চরিত্র যদি কঠিন মনে হয়, তখন নির্মাতার সঙ্গে আলাপ করি, জানতে চাই, তিনি এ চরিত্রকে কেমন করে দেখতে চান। এটা জানার পর, এ চরিত্রকে আমি বই কিংবা সিনেমায় খুঁজতে থাকি। যদিও নাটকে এ সময়টা কম পাওয়া যায়। দুই দিনে শুটিং শেষ করতে হয়।

আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

কোনো স্বপ্নের চরিত্র কী আছে?

ওইভাবে ড্রিম ক্যারেক্টার নেই আমার। তবে একটা চরিত্রের কথা বলব, যেটা দেখে মনে হয়েছে এই চরিত্রে যদি কোনো নারী অভিনয়শিল্পীকে দেখতে পেতাম! এ রকম ইচ্ছা হয়েছে ‘জোকার’ সিনেমা দেখার পর। হোয়াকিন ফিনিক্স অভিনীত ‘জোকার’ চরিত্রটি আমি করতে চাই।

প্রথম আলো:

আপনাকে প্রায়ই ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়; ঘুরতে কতটা পছন্দ করেন?

ঘুরতে ভালোবাসি। সবশেষ এক মাস হলো অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছি। অস্ট্রেলিয়াতে আমার প্রথম সলো ট্রিপ ছিল। শুটিংয়ের জন্যই ভিসাটা করা ছিল, শুটিং আর হয়নি। ভাবলাম, ভিসা যখন আছে, দেশটা দেখে আসি। অনেক সুন্দর দেশ। সমুদ্রসৈকতের একদম পাশের একটা হোটেলে থেকেছি, সৈকতগুলো ঘুরে দেখেছি। ১০-১২ দিন ছিলাম, ঘোরাঘুরি, আড্ডায় অনেক ভালো সময় কেটেছে।

তানিয়া বৃষ্টি
ইনস্টাগ্রাম থেকে
প্রথম আলো:

এই বিরতিটা কাজের জন্য কতটা জরুরি?

আমরা তো সময় পাই না। টানা কাজ করতে করতে রোবটের মতো হয়ে যাই। তাই বিরতির প্রয়োজন হয়। টানা বাসায় থাকলেও এক–দুই দিন পর ক্লান্তি চলে আসে। কিন্তু নতুন একটা জায়গায় গেলে ক্লান্তি চলে যায়। বাইরে গেলে বই পড়ি, সিনেমা দেখি—বলা যায় নিজেকে সময় দেওয়া হয়। শুটিংয়ে বিরতি পেলে পরিকল্পনা আছে এ মাসেই বান্দরবান যাব ট্রেকিংয়ে, তারপর কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম যাওয়ার ইচ্ছা আছে।