এটি আমার অন্যতম প্রিয় একটি চরিত্র

চঞ্চল চৌধুরী
ছবি : সংগৃহীত

গতকাল ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইয়ে মুক্তি পয়েছে সৈয়দ আহমেদ শাওকীর ওয়েব সিরিজ কারাগার–এর প্রথম কিস্তি। বিষয়বস্তু, প্রধান চরিত্রের লুক মিলিয়ে ট্রেলার মুক্তির পর থেকেই প্রশংসিত হয়ে আসছিল কারাগার। গতকাল রাতে কারাগার নিয়ে কথা বলেছেন সিরিজের প্রধান চরিত্রের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী

প্রশ্ন:

‘হাওয়ার’ পর আবারও নতুন লুক। ‘কারাগার’-এ আপনার চরিত্রের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন?

যিনি লেখেন, সেভাবেই চরিত্রটি নির্মাণ করতে হয়। চরিত্রটি দেখতে কেমন, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কী, তা জানার পর তাকে ভিজ্যুয়ালাইজ করতে হয়। এরপর পরিচালক, মেকাপশিল্পী, কস্টিউমশিল্পী থাকে...সবাই মিলে একটি চরিত্র তৈরি করেন। লুক নিয়ে নিজের কিছু ভাবনা শেয়ার করেছি, তবে হাওয়া বা কারাগার–এ যে লুক, সেটা আমার একার কৃতিত্ব না। পারফরম্যান্সটা আমার।

প্রশ্ন:

বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে পরিচালক বলেছেন, শুরুতে তিনি পুরো চিত্রনাট্য আপনাকে শোনাননি। সে ক্ষেত্রে লুক ছাড়া চরিত্রটির জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?

কারাগার ওয়েবে সিরিজের একটি দৃশ্যে চঞ্চল চৌধুরী

পুরো চিত্রনাট্য পাওয়ার পর পরিচালক তাঁর ভাবনা বলেন। আমি তখন চিন্তা করি কীভাবে চরিত্রটির মতো হয়ে ওঠা যায়। এটার জন্য অনেক সময় গেছে। লুক একটা ব্যাপার, কিন্তু সেটা বাইরের দিক। এ ছাড়া অভিনয়, এক্সপ্রেশন–এসব নিয়েও ভাবতে হয়েছে।

প্রশ্ন:

আজ (গতকাল) ‘কারাগার’–এর প্রথম পর্ব মুক্তি পাচ্ছে। দ্বিতীয়টির শুটিংও কি হয়ে গেছে?

দুই সিজনই একসঙ্গে শুটিং হয়েছে। প্রথমটা আজ (গতকাল) মুক্তি পেয়েছে। দুই সিজনের শুটিং যেহেতু হয়ে গেছে, দর্শক নিশ্চিত থাকতে পারেন দ্বিতীয়টি খুব তাড়াতাড়ি আসবে।

চঞ্চল চৌধুরী
প্রশ্ন:

একই প্ল্যাটফর্মে সৈয়দ আহমেদ শাওকীর সঙ্গে আপনার আগের কাজ ‘তাকদীর’ ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। এবার দর্শকের প্রত্যাশাও তো বেশি...

‘তাকদীর’ ছিল শাওকীর সঙ্গে প্রথম কাজ। প্রথম কাজের অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে। পরিচালক হিসেবে ওর ম্যাচুরিটি, ভালো কাজ করার ইচ্ছা, সততা মিলিয়ে ওর প্রতি আমার এবং অভিনেতা হিসেবে আমার প্রতি ওর বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। আমি অনেক দিন ধরে অভিনয় করছি, তাতে কিছু যায় আসে না। পরিচালকের মনমতো করতে পারব, এটা তো সব সময় হয় না। তাকদীর–এ আমাদের যে বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে, সেটার ফল কারাগার–এ দেখা যাবে। তাকদীর বিপুলসংখ্যক মানুষ দেখেছেন। শুধু এপার বাংলায় নয়, ওপার বাংলাতেও। এখন পর্যন্ত হইচইয়ের সবচেয়ে বেশি রেটিং পাওয়া সিরিজ তাকদীর। কারাগার আগের কাজকে অতিক্রম করতে পারবে কি না অথবা সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে করেছি কি না, সেটা দর্শক দেখবেন। এবার শাওকী আগের চেয়ে বেশি পরিণত, গল্পটাও একেবারেই ভিন্ন ঘরানার। এ ধরনের গল্প নিয়ে আগে বাংলাদেশে কাজ হয়নি।

‘কারাগার’–এ চঞ্চল চৌধুরী
প্রশ্ন:

‘কারাগার’–এ আপনার অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট?

সত্যি কথা বলতে, এই কাজটি নিয়ে আমি ভীষণ এক্সাইটেড। কারণ, আমার করা নাটক, সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ; যা–ই বলি, এটি আমার অন্যতম প্রিয় একটি চরিত্র। শত শত নাটক আর সিনেমার মধ্য থেকে আমার সেরা পাঁচটি চরিত্রের কথা বলতে বললে ‘কারাগার’–এর এই চরিত্রকে বেছে নেব।

প্রশ্ন:

‘হাওয়া’ ও ‘কারাগার’—দুটিই ভীষণ ডার্ক ধরনের কাজ। বাংলাদেশে তো এ ধরনের কাজের নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অভিনয়শিল্পীদের বাড়তি কিছু দিতে হয়।

সেটা ঠিক। যদি ইচ্ছাটা থাকে, সে ক্ষেত্রে কষ্টটা আমরা হাসিমুখে করে দিই। কারাগার করার জন্য প্রত্যেক টিম মেম্বারকে প্রচণ্ড পরিমাণ শারীরিক ও মানসিক কষ্ট করতে হয়েছে। এ ধরনের কাজ করতে গেলে যুদ্ধক্ষেত্রে যেমন সৈনিকের প্রস্তুতি থাকে, প্রায় ওই রকম প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। একটানা যত দিন শুটিং হয়েছে, যে কষ্ট আমাদের করতে হয়েছে, যে জোনে, যে ধরনের চরিত্রে আমরা কাজ করেছি, কাজটা ভালো না বাসলে তা করা সম্ভব নয়। শুধু শিল্পের দোহাই দিয়ে এ কাজ হয় না। এর জন্য অনেক আত্মিক সম্পর্ক লাগে।

প্রশ্ন:

সামনে আর কী কাজ আসবে?

একটি ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের কাজ শেষে গতকালই (গত বুধবার) ঢাকায় ফিরলাম। এ ছাড়া নিয়মিত ধারাবাহিক আছে, কয়েকটি বিজ্ঞাপনের কাজও করব।