এখন আর সেই আফসোস নেই

জাহিদ অন্তু। ছবি: সংগৃহীত
শেষ হলো আরটিভির সংগীতবিষয়ক রিয়েলিটি শো ‘ইয়াং স্টার সিজন ২’। এবারের আয়োজনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন জাহিদ অন্তু। সংগীত ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েই গতকাল ‘বিনোদন’–এর মুখোমুখি হন এই তরুণ গায়ক

প্রথম আলো :

অভিনন্দন। যখন শুনলেন ‘ইয়াং স্টার সিজন ২’ চ্যাম্পিয়ন আপনি, আপনার কাছে মুহূর্তটা কেমন ছিল?

বোঝাতে পারব না ওই সময়টায় কতটা ভালো লাগছিল। অনেক আগে থেকেই আমার একটা আক্ষেপ ছিল, দেশে অনেকেই মানহীন গান করেও অনেক ভালো জায়গা চলে যাচ্ছিল। অনেকেই অটো টিউনে কাজ করে ভালো জায়গায় যাচ্ছিল। সেগুলো নিয়ে বারবার মনে হতো, গান নিয়ে এত জেনেবুঝেও ভালো জায়গায় থাকতে পারিনি। কিন্তু থাকার কথা ছিল। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এখন আর সেই আফসোস নেই। মনে হচ্ছে, ভালো কাজের স্বীকৃতি অবশ্যই আছে।

আরও পড়ুন
জাহিদ অন্তু। ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো :

এ প্রতিযোগিতা কিংবা এই স্বীকৃতি আপনাকে কতটা বদলে দিয়েছে?

আগে থেকেই পরিচিত সবাই ভালোবাসতেন। কাছের মানুষদের কাছে আস্থা অর্জিত হয়েছে। তাঁদের আস্থার জায়গা আরও দৃঢ় হয়েছে, তাঁরা বলছেন সামনে আরও ভালো করতে পারব। যাঁরা আমার গান পছন্দ করেন, আমাকে ভালোবাসেন, তাঁদের ভালোবাসার মর্যাদা রাখতে পেরেছি। এর বাইরে যদি বলি, আসলে ডিসেম্বরে বেশ কিছু কাজ রয়েছে। এর সঙ্গে দুই দিন ধরে আরও বেশ কিছু নতুন কাজের কথা হয়েছে। সেগুলো ব্যাটে–বলে মিলে গেলে করব।

প্রথম আলো :

সংগীতজগতে আপনার আসা কীভাবে?

ছোটবেলা থেকেই টেলিভিশনে গান শুনতাম, সেসব গান গাইতাম। তখন থেকেই গানের প্রতি ঝোঁক। আমি তখন ক্লাস টুতে পড়ি। স্কুলে একবার পিকনিকের আয়োজনে আমি একাই মঞ্চে উঠে গান গেয়েছিলাম। সেদিন আমাদের প্রিন্সিপাল স্যারের মনে হয়েছিল, ছেলেটা গান ভালো গায়। তিনি আমার গানের দিকে খেয়াল রেখেছিলেন। পরে আমাকে বাসায় শিক্ষক রেখে গান শেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এভাবেই আস্তে আস্তে গানের জগতে ঢুকে পড়ি।

জাহিদ অন্তু। ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো :

কবে মনে হলো গানকেই পেশা হিসেবে নেবেন?

অষ্টম–নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় মনে হলো গানকে পেশা হিসেবে নেওয়া যায়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগীত বিভাগে ভর্তি হই। আরও শিখতে থাকি, চর্চা চালিয়ে যাই। এখন গানই করে যাব। আমার রেস্টুরেন্ট ব্যবসা আছে বগুড়ায়। এটা আমার পছন্দের। এই বাইরে আমি গান নিয়েই থাকতে চাই।

প্রথম আলো :

কাদের গান শুনে অনুপ্রাণিত হতেন?

দেশের মধ্যে জেমস স্যারের গান আমার খুবই ভালো লাগে। দেশের বাইরে আতিফ আসলাম ও সনু নিগম স্যারের ভক্ত আমি। কারণ, তাঁরা যেমন রেকর্ডিং ভার্সনে গান, তেমনি লাইভেও একই রকম গান। যে কারণে তাঁদের গান আমার খুবই ভালো লাগে।

প্রথম আলো :

সংগীতে চলার পথে আজকের এই অর্জনের পেছনে কাদের কথা স্মরণ করবেন?

আমার প্রিন্সিপাল তোফাজ্জল আহমেদ স্যার, তিনি আমার গানের মেধাকে ফাইন্ড আউট করেছেন। এরপর আমার মা–বাবা। অনেক প্রতিকূলতার পরও তাঁরা গান শিখিয়েছেন। কারণ, ওই সময় লেখাপড়ার বাইরে গিয়ে গান শেখাতে গেলে সমাজে অনেক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হতো। তাঁরা অনেক কথাও শুনেছেন কিন্তু সেগুলো হয়তো আমাকে বলেননি। বড় ভাই আমাকে সহায়তা করেছেন। তাঁরাই সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে আমাকে সাপোর্ট দিয়েছেন। তবে এটা বলব, মা–বাবার অবদান সবচেয়ে বেশি। তাঁদের সহযোগিতা না পেলে হয়তো এতটা পথ চলতে পারতাম না।

জাহিদ অন্তু। ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো :

গান নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

এখন থেকে নিয়মিত গানের প্লেব্যাক করে যাব। ইচ্ছা আছে এবার ‘সারেগামাপা’তে অংশ নেওয়ার।