নিরীক্ষাধর্মী কাজে আত্মবিশ্বাস বাড়ে

ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইয়ে কাইজার সিরিজে অভিনয় করে নতুনভাবে আলোচনায় এসেছেন ইমতিয়াজ বর্ষণ। এ ছাড়া গত ঈদে কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে একাধিক নাটক। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর গাওয়া একটি নতুন গানও। এসব নিয়েই কথা হলো তাঁর সঙ্গে।

প্রশ্ন :

‘কাইজার’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে কথা বলছেন। আপনার অভিনীত চরিত্র নিয়ে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

আমি তো বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। মুক্তির দুই সপ্তাহ চলছে, কোনো নেগেটিভ রিভিউ পাইনি, সবই পজিটিভ, যা ভীষণ অনুপ্রেরণার। বিনোদন অঙ্গনের পরিচালক, অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে অনেকেই খোলামনে কাইজার–এ আমার চরিত্রটি নিয়ে কথা বলছেন।

ইমতিয়াজ বর্ষণ
ছবি : প্রথম আলো

প্রশ্ন :

সবাই যে এভাবে বলছেন, কোনো চাপ অনুভূত হচ্ছে কি?

একধরনের চ্যালেঞ্জ ফিল করছি। পরে যেটা করতে যাব, বেটার করতে পারব কি? সেই চ্যালেঞ্জ আসলে খুবই ইন্টারেস্টিং। তবে এ রকম চ্যালেঞ্জিং চরিত্র করার জন্য যে সময়ের দরকার, সেই সময় যদি দেওয়া হয়, তাহলে তা নেওয়াই যায়। যেমন ‘কাইজার’–এর স্ক্রিপ্ট দেওয়ার পর সময় নিয়ে মহড়া করেছি। চরিত্রের ব্রিফিং নিয়েছি, আমরাও চরিত্র তৈরির সময় পেয়েছি। নির্দিষ্ট দিনে শুটিং ঠিকঠাকমতো করতে পেরেছি। ওটিটির কাজে বাজেট ভালো থাকায় শুটিংও রিল্যাক্স মুডে করেছি। বাড়তি কোনো চাপ ছিল না। ওই চাপগুলো না থাকাতে কাইজার–এ চরিত্রটি উজাড় করে করতে পেরেছি। এই সিরিজের পরিচালক তানিম নূরের প্রতি কৃতজ্ঞতা, তিনি আমাকে মোক্তার মাহমুদ জাফরি চরিত্রের জন্য উপযুক্ত মনে করেছেন। একই সঙ্গে তানিম নূর ও স্বাধীন চমৎকার সংলাপ লিখেছেন, যা চরিত্রকে অনন্য হয়ে ওঠায় সহায়ক করেছে।

ইমতিয়াজ বর্ষণ
ছবি : প্রথম আলো

প্রশ্ন :

এই সিরিজের একদম শেষ দিকে আফরান নিশোর মুখোমুখি হয়েছেন আপনি। ওই দৃশ্য দেখে কেউ এমনটাও বলেছেন, পাল্লা দিয়ে অভিনয়ের চেষ্টা করেছেন। আপনাদের কি আগে কোনো কাজ হয়েছে?

আফরান নিশো ভাইয়ের সঙ্গে আগে একটা কাজ হয়েছে। এখনো প্রচার হয়নি। আমাদের দ্বিতীয় কাজ কাইজার। শুটিংয়ের আগে থেকেই তিনি আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। একসঙ্গে মহড়া করেছি। করতে করতে দুজনের একটা সিনক্রোনাইজও হয়ে গেছে। আমি কীভাবে সংলাপ দিচ্ছি, তিনি কীভাবে দেবেন, আগে থেকেই জানতাম। দুজনে আলাপ করে করেই ঠিক করেছি। মহড়া করার কারণে আগে থেকে আলাপ ছিল, তাই নিশো ভাইয়ের কাছ থেকে অনেক সুবিধা পেয়েছি, আন্তরিক সহযোগিতা যাকে বলে। একজন অগ্রজ অভিনেতার কাছ থেকে এ ধরনের সহযোগিতা অনেক বড় ব্যাপার। এ ধরনের সহযোগিতা ভীষণ রকম বুস্টআপ করে। একজন সিনিয়র অভিনয়শিল্পী যখন তাঁর মতো করে আমাকেও ট্রিট করেন, তখন নিজের মধ্যেও একটা চ্যালেঞ্জ ফিল করি। আমারও মনে হয়, ভালো করতে হবে। ওই জায়গা থেকে আনন্দ নিয়ে কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়।

চট্টগ্রামের ছেলে ইমতিয়াজ বর্ষণ
সংগৃহীত

প্রশ্ন :

আপনার অভিনয় দেখে আফরান নিশো কিছু কি বলেছেন?

ট্রেলার প্রকাশের দিন তিনি আমার খুব প্রশংসা করেছেন। কাজের ও ডেডিকেশনের মাধ্যমে যিনি এত দূর এসেছেন, সেই তিনি যে আমার প্রশংসা করেছেন, এটা আমার জন্য বড় পাওনা।

প্রশ্ন :

এবারের ঈদে আর কী কাজ গেছে?

এনটিভিতে প্রচারিত হয়েছে শিহাব শাহীনের ‘ভয়েস ক্লিপ’, গাজী টিভিতে সাদেক সাব্বিরের ‘সত্যি বলছি’ আর বায়োস্কোপ এ নূরুল আলম আতিকের অ্যান্থলজি সিরিজ আষাঢ়ে গল্প-এর ‘কাঠুরে’।

প্রশ্ন :

একটা সময় চট্টগ্রামে থাকতেন। চাকরি করতেন। ফাঁকে ছিল অভিনয়। ঢাকায় এসে কাজ করে আবার চলে যেতেন। এখন তো ব্যস্ততা বাড়ছে। ঢাকায় কি থিতু হয়েছেন?

(হাসি)। যখন আমার অভিনীত সিনেমা ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ রিলিজ হয়, তখনই চাকরিটা ছেড়ে দেই। অপেক্ষা করছিলাম একটা ছবি মুক্তির। কারণ, আমার তো ‘আলগা নোঙর’, ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’, ‘চন্দ্রাবতী কথা’—এই নামের তিনটা ছবি তৈরিই ছিল। শুধু ছিল মুক্তির অপেক্ষা। ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ আমাকে নিরাশ করেনি, খালি হাতে ফেরায়নি। এ ছবির কল্যাণে এখন পর্যন্ত আমি যা পেয়ে আসছি, তা আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে।

‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ ছবিতে ইমতিয়াজ বর্ষণ ও শারলিন ফারজানা
ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন :

‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ ও ‘চন্দ্রাবতী কথা’—দুটো দুই ধরনের। এই দুটি ছবি কি বিনোদন অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত হতে ভূমিকা রেখেছে?

আমার অল্প সময়ের অভিনয়জীবনে দুটি ভিন্নধর্মী কাজ ভিন্নধর্মী চরিত্রে। ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ এই সময়ের আর ‘চন্দ্রাবতী কথা’ ৪০০ বছর আগের প্রেক্ষাপটে। আমার যেটা মনে হয়েছে, পরিচালকদের হয়তো বিশ্বাস জন্মেছে, না, বর্ষণকে দিয়ে হয়তো আলাদা আলাদা চরিত্র করানো সম্ভব। আমি আসলে এক্সপেরিমেন্টাল জায়গায় কাজ করতে পছন্দ করি। তার মানে এই নয় যে সব কাজ করব না। সব ধরনের কাজও করতে চাই। নিরীক্ষাধর্মী কাজের কারণে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। যেটা আমি ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’, ‘চন্দ্রাবতী কথা’ ও ‘কাইজার’ করতে গিয়ে পেয়েছি।