চার বছর পর দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে সাইমন সাদিক অভিনীত নতুন ছবি ‘লাইভ’। গত শুক্রবার মুক্তি পাওয়া এ ছবির পরিচালক শামীম আহমেদ। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তাঁর আরও ছয় ছবি। এসব নিয়ে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।
সাইমন সাদিক
ছবি : সংগৃহীত

মুক্তির আগে আগে ‘লাইভ’ নিয়ে আপনার বেশি প্রত্যাশার কথা শোনা গেছে। মুক্তির দুই দিন হয়ে গেল, প্রাপ্তি কতটুকু?

এ পর্যন্ত যাঁরা ছবিটি দেখেছেন, সবাই ভালো বলেছেন। ভালো রিভিউ পাচ্ছি দর্শকদের। তবে প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে না। কারণ, ছবিটির প্রচারই তো করা যাচ্ছে না। একটা ভালো ছবি প্রচারের অভাবে দর্শকদের জানাতেই পারছি না, তাহলে দর্শক আসবেন কীভাবে? ছবিটির যতটা আওয়াজ পাচ্ছি, সঠিকভাবে প্রচার করতে পারলে আরও বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে, প্রত্যাশামতো প্রাপ্তি হতো।

সাইমন সাদিক
ছবি : সংগৃহীত

তাহলে প্রচার-প্রচারণা করা হচ্ছে না কেন?

‘হাওয়া’ ও ‘পরাণ’ ছবির দিকে তাকালে দেখি প্রযোজক ও শিল্পী-কলাকুশলীরা মিলে ছবির প্রচার–প্রচারণা করেছেন। এখনো কোনো না কোনোভাবে প্রচারণায় আছেন তাঁরা। আমার কাছে মনে হয়েছে, ‘হাওয়া’ ও ‘পরাণ’ প্রচারণায় নতুনত্ব দিয়েছে। এতে করে দর্শকের কাছে পৌঁছে গেছে ছবির খবর। শুধু পোস্টার লাগিয়ে বসে থাকলে তো হবে না। শিল্পীদের সঙ্গে নিয়ে ছবির প্রযোজককে নানা শ্রেণির মানুষের কাছে যেতে হবে, ছবিটি মুক্তির খবর সবাইকে জানাতে হবে। কষ্টের কথা, এত দিন জানতাম, শুনতাম, প্রযোজকেরা ছবির প্রচারণার জন্য শিল্পীদের দ্বারে দ্বারে ঘোরেন। অনেক সময় খুঁজেও পান না। আমরা শিল্পীরা এই ছবির প্রচারণার জন্য প্রস্তুত কিন্তু প্রযোজককে খুঁজে পাচ্ছি না। তাঁদের দিক থেকে কোনো সহযোগিতা নেই।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক
ছবি: ফেসবুক থেকে

ছবির শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

অনেক কষ্টের। শুটিং শুরুর আগেই পরিচালক আমাকে বলেছিলেন, এ ছবির শুটিংয়ে আগে বেশ কয়েক দিন না ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে। সেটাই করেছিলাম। কারণ, আমার চরিত্রের একটা বড় অংশে তেমন ব্যাপারই ছিল। টানা ২০ দিন শুটিং করেছি। পলিথিনঘেরা একটি ঘর, যেখানে কোনো ফ্যান, এসি বা বাতাস ঢোকার ব্যবস্থা ছিল না; প্রায় এক সপ্তাহ এমন একটি সেটে কাজ করেছি। টানা দুই দিন, দুই রাত ক্যামেরা বন্ধ হয়নি। কখনো কখনো ঘুমে পড়ে যাচ্ছিলাম, এ অবস্থায়ও ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হয়েছে।

প্রায় চার বছর পর আপনার সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। মাঝখানের সময়টায় খারাপ লাগেনি?

২০১৮ সালে আমার সবশেষ ছবি ‘জান্নাত’ ছবি মুক্তি পায়। এর মাঝখানে কোনো ছবি মুক্তি পায়নি। অথচ সেন্সর পাওয়া লাইভসহ সাতটি ছবি অনেক দিন থেকে মুক্তির অপেক্ষায় ছিল। যেকোনো পেশায় এমনটা হতেই পারে। কথায় আছে না, আপনি কাজ জানেন কিন্তু দেখাতে পারছেন না। তখন নিজের কাছে খারাপ লাগবে, এটাই স্বাভাবিক। আমারও তা–ই হয়েছে। এতগুলো সিনেমা সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে কিন্তু মুক্তি পাচ্ছিল না। কিছুটা খারাপ তো লেগেছে।

সাইমন সাদিক
ছবি : সংগৃহীত

মুক্তির অপেক্ষায় থাকা বাকি ছবিগুলোর খবর কী?

‘নদীর বুকে চাঁদ’, ‘নর সুন্দরী’, ‘অশ্রু ঘর’, ‘গ্যাংস্টার’, ‘বাহাদুরি’ ও ‘দায়মুক্তি’ ছবিগুলো সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে। প্রযোজকদের কাছ থেকে শুনেছি, তিনটি ছবি চলতি বছরে মুক্তি পাবে। এ ছাড়া জলরং ছবির শুটিং শেষের পথে। এফডিসির নিজস্ব প্রযোজনায় চাদর নামে একটি ছবির শুটিং ১৫ সেপ্টেম্বর শুরুর কথা আছে।

সাইমন সাদিক
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির গঠনতন্ত্রে আছে, পরপর তিন মিটিংয়ে কেউ উপস্থিত না থাকলে সদস্যপদ বাতিল হবে। জানামতে, অনেকেই তো উপস্থিত ছিলেন না। কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন?

পরপর তিন মিটিংয়ে নির্বাচিত অনেকেই অনুপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে আমরা তাঁদের চিঠি দিয়েছি। তাঁরাও তো নির্বাচিত প্রতিনিধি। বিষয়টি মাথায় রেখে সভাপতির দিকনির্দেশনায় তাঁদের প্রতি কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে আগামী মিটিংয়ে এ ব্যাপারে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।