কী নিয়ে গল্প?

জেলেদের গল্প। নারীরা যদি জেলে হতে চান, তাঁদের কী ধরনের বাধার মুখোমুখি হতে হয়, সেটাই দেখানো হয়েছে। মূলত নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি দেখানো হয়েছে। আমি একটি বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীর চরিত্রে অভিনয় করেছি।

জেলেদের নিয়ে গল্প, শুটিং নিশ্চয়ই ঢাকার বাইরে হয়েছে?

হ্যাঁ, বরগুনায়। শুটিং করতে ভীষণ কষ্ট হয়েছে। একটা নাটক করতে গিয়ে মনে হয়েছে তিনটি নাটকের শুটিং করলাম...। সবচেয়ে বড় সমস্যা যাতায়াত, ভালো রাস্তা নেই, গাড়ি নেই, ভালো হোটেল পর্যন্ত নেই।

এত কষ্ট করে কাজটি করতে রাজি হলেন কেন? সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তো অনেক দর্শকই আপনার কাজ দেখতে চান বলে নিয়মিত লেখেন...

না, এটা কারণ নয়। আসলে সময়ের সঙ্গে গুরুত্ব বদলায়। আমাকে পর্দায় থাকতে হবে, এখন আর এসব চিন্তা করে কাজ করা হয় না। প্রথমত, এটি আলফা আইয়ের কাজ, (আলফা আইয়ের কর্ণধার শাহরিয়ার) শাকিল আমার পরিবারের মতো। দ্বিতীয়ত, পরিচালক নিয়াজের অনুরোধ। সে এসে বলল, ‘আপনি যদি সময় দেন, তাহলে একটা ভালো কাজ করতে পারতাম।’ সব সময়ই আমি নতুনদের সঙ্গে কাজ করেছি। সাধারণত জ্যেষ্ঠ অভিনয়শিল্পীরা নতুন পরিচালকদের সময় দিতে চান না, তখন টিভি চ্যানেলে গেলে জিজ্ঞেস করে, নাটকে কে আছেন? বড় নাম থাকলে সুবিধা হয়। ফলে আমি বহু নতুন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি। আমি সময় দিলে নতুন কারও যদি ক্যারিয়ার হয়, আমারও ভালো লাগে। আমি মনে করি, এটাও আমার একটা অর্জন।

টিভি, ওটিটি মিলিয়ে এখন তো দেশে নানা ধরনের কাজ হচ্ছে। সাম্প্রতিক কাজগুলো দেখা হয়েছে?

খুব কম। দুই সন্তানকে এত সময় দিতে হয়...। একেবারেই দেখি না, তা নয়, তবে খুব কম।

আপনার সময়ের সহশিল্পীদের অনেকেই তো এখনো কাজ করছেন। সবার সঙ্গে কাজ করা কতটা মিস করেন?

সেটা তো সব সময়ই করি। আমার সহকর্মীরা যারা কাজ করছে, জায়গাটা ধরে রেখেছে, তাদের স্যালুট জানাই। কারণ, আমাদের কাজের পরিবেশটা তো এখনো সেভাবে তৈরি হয়নি। তারপরও তারা ধৈর্য ধরে টিকে আছে। আমাদের আগে যাঁরা ছিলেন, একটা সময় তাঁদের জায়গাটা ছেড়ে দিতে হয়েছে, আমাদেরও দিতে হবে। এটাই নিয়ম। নতুনেরা আসবে, সেখান থেকে সেরা পাঁচজন হয়তো বের হবে। আবার একটা প্রজন্ম তৈরি হবে।

নতুনদের মধ্যে কাদের কাজ ভালো লাগে?

অভিনেত্রীদের মধ্যে তাসনিয়া ফারিণ, মেহজাবীন (চৌধুরী), তানজিন তিশা—সবাইকে খুব সম্ভাবনাময়ী মনে হয়। আমি সেই ঘোড়াকে পছন্দ করি, যে অনেকক্ষণ দৌড়াতে পারে। আশা করব, ওরা প্রতিষ্ঠিত হলেও নিজেদের জায়গা ধরে রেখে আরও অনেক দিন কাজ করবে। অভিনেতাদের মধ্যে জোভান, তৌসিফসহ যারা নতুন আসছে, সবাইকে খুব সম্ভাবনাময় মনে হয়।

এখন তো আমাদের শিল্পীরা নিয়মিত ভারতের ওটিটি, সিনেমায় কাজ করছেন। আমাদের নাটক, সিরিজ কলকাতাতেও ব্যাপক জনপ্রিয়। এটা দেখে কেমন লাগে?

বাইরের দেশের শিল্পীরা এসে আমাদের দেশে কাজ করে বলে একটা সময় আমরা রাগ করতাম। তখন এটা নিয়ে মনোমালিন্য হতো—ওরা এখানে কাজ করতে পারলে আমরা কেন ওদের দেশে গিয়ে কাজ করতে পারব না। এখন সেটা শুরু হয়েছে, এটা তো আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। মনে হচ্ছে স্বপ্নভরা দিন আসছে।

ওটিটির কল্যাণে ইন্তেখাব দিনারের মতো অভিনেতারাও ফিরে এসেছেন।

আমরা কি আমাদের শিল্পীদের যথাযথ মূল্যায়ন করতে পেরেছি? একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে, এখনো যে পুরোপুরি হচ্ছে, তা বলব না; একজন দিনারকে দিয়ে উদাহরণ দিলে তো হবে না। এ রকম আরও অনেক দিনার আছে, যারা অভিমান করে অভিনয় ছেড়ে দিয়ে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে, কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে, অন্য পেশা বেছে নিচ্ছে। সবাই যখন ফিরবে, তখনই মনে করব, আমরা জিতেছি।

এবার কত দিন থাকবেন? আর কী কী কাজ আসবে?

আছি তো আরও কিছুদিন। সামনে আরও বেশ কিছু কাজের কথা হচ্ছে। চূড়ান্ত হলে নিজেই জানাব।