‘আমি চাপে থাকি না, চাপে রাখি না’

আগস্টে নতুনভাবে ওটিটিতে আসছেন অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম। এর মধ্যে ওয়েব সিরিজ ‘অগোচরা’ বিঞ্জে মুক্তি পেয়েছে গত বৃহস্পতিবার, হইচইতে ‘সাড়ে ষোলো’ মুক্তি পাবে ১৭ আগস্ট। ট্রেলার মুক্তির পর থেকেই দুই সিরিজে ভিন্ন দুটি চরিত্রে প্রশংসা পাচ্ছেন মম। চরিত্রের পেছনের গল্প ও সাম্প্রতিক সময়ের নানা প্রসঙ্গে গত বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে বিনোদন
অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম
ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

প্রশ্ন :

ট্রেলার প্রকাশের পর থেকেই দুই সিরিজ নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এটা কি কোনো চাপ তৈরি করে?

সম্প্রতি আমাদের ‘সাড়ে ষোলো’র ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে। ‘অগোচরা’ নিয়েও ভক্তরা কথা বলছেন। সেখানে আমার চরিত্র নিয়ে দর্শকের আগ্রহ আছে, বুঝতে পারছি। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। ভক্তদের এই প্রশংসা শুনলে দায়বদ্ধতা বেড়ে যায়। আশা করছি, কাজগুলো দেখার পর দর্শকদের আরও ভালো লাগবে। কারণ, দুটো কাজেই অনেক টুইস্ট আছে।

প্রশ্ন :

‘সাড়ে ষোলো’তে আপনি সাংবাদিকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন? এই চরিত্রে কি এবারই প্রথম?

আগে সাংবাদিক চরিত্রে অভিনয় করেছি কি না, মনে পড়ছে না। করলেও হয়তো একই চরিত্রে অবশ্যই নয়। কারণ, কোনো চরিত্রে দ্বিতীয়বার তৈরি হয় না। এটা ঠিক সন্ধ্যার মতো, কোনো সন্ধ্যা দ্বিতীয়বার হয় না। শহরে অনেক সাংবাদিক, কিন্তু সবাই এক নয়। অন্য রকম একটা গল্প দর্শক দেখবেন। এখানের রিনির জার্নিটির গল্পটা বিশেষ কিছু।

প্রশ্ন :

ভালো একটা কাজের জন্য টিমওয়ার্ক কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

সেটা তো অবশ্যই সবার আগে দরকার। ভালো টিম ছাড়া ভালো কাজ সম্ভব নয়। আমরা দীর্ঘ সময় নিয়ে যেমন কাজ করেছি, আমাদের বোঝাপড়া দারুণ ছিল। আমার সঙ্গে সহ–অভিনেতা ছিল আফরান নিশো, দিনার (ইন্তেখাব) ভাই, বাবু (ফজলুর রহমান) ভাই, পরিচালক ইয়াছির আল হকসহ অনেকে ছিলেন। কাজগুলো আমাকে দারুণ আনন্দ দিয়েছে।

অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম
ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

প্রশ্ন :

প্রায়ই শোনা যায়, অনেক শিল্পীই অভিনয় করে মানসিকভাবে সন্তুষ্ট নন, আনন্দ পান না। আপনার ক্ষেত্রে বিষয়টি কেমন?

পেশাদার অভিনয়শিল্পী হিসেবে কতগুলো কাজে আনন্দ পাই, এভাবে ভাগ তো করতে পারব না। তবে আমি আনন্দ ছাড়া কাজ করি না। দিন শেষে কাজে আনন্দই আসল।

প্রশ্ন :

এমন কি কখনো হয়েছে যে সহকর্মীদের চাপে বা মনের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো চরিত্রে অভিনয় করতে হয়েছে?

আমি চাপ জিনিসটা পছন্দ করি না। আমি চাপে থাকি না, চাপে রাখি না। কেউ আমাকে চাপ দিয়ে কাজ করাতে পারবে না। আমি এটার বিপক্ষে। আমি কাজ ভালোবেসে করি। যদি চাপ নিই তাহলে তো সেই চরিত্রটা প্লে করতে পারব না। আমি বাধ্য হয়ে কিছু করি না। আমি সেই মানুষ না।

অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম
ছবি: ফেসবুক

প্রশ্ন :

কখনো কি এমন মনে হয়েছে, শুধু সাহসী, প্রতিবাদী চরিত্রের জন্য পরিচালকেরা বেশি ডাকছেন?

মনে হয় না। আমি প্রচুর চরিত্রে কাজ করেছি। হাউস ওয়াইফ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, অনেক রোমান্টিক কাজ দর্শক পছন্দ করছেন। নাটক ‘নীলপরি নীলাঞ্জনা’, ‘প্রেম তুমি’; সিনেমা ‘ছুঁয়ে দিলে মন’সহ অনেক কাজে রোমান্টিক চরিত্রে দর্শক আমাকে পছন্দ করেছেন। এগুলো কিন্তু সাহসী বা বোল্ড চরিত্র না। নির্মাতারা কাজের প্রতি নিবেদনের জন্য আমাকে পছন্দ করেন। সেটা যেকোনো চরিত্রের জন্য। আমি সব রকম চরিত্রে আগেও নিজেকে প্রমাণ করেছি, এখনো নিজেকে প্রমাণ করে যাচ্ছি।

প্রশ্ন :

তাহলে রোমান্টিক গল্পে তেমন দেখা যায় না, কারণ কী?

রোমান্টিক চরিত্র কম করছি না। একেকটা সময় কাজের গতি, রুচি একেক রকম থাকে। আমি সব রকম কাজের সঙ্গেই যুক্ত থাকতে চাই। এর আগে ‘মারকিউলিস’-এ আমার চরিত্রটি পছন্দ করেছেন দর্শক। এখন দর্শক থ্রিলার গল্প দেখতে পছন্দ করছেন। দর্শক রুচি, চাহিদার ওপর কাজের গতি পাল্টায়। ইন্ডাস্ট্রিতে যা হবে, সেটাই করতে হবে। কখনো রোমান্টিক, থ্রিলার, সামাজিক গল্পের যুগ চলে। সেভাবেই কাজ করতে হয়। সেসব কাজও প্রশংসা পায়।

অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম
ছবি: ফেসবুক

প্রশ্ন :

নাটকে কি কম অভিনয় করছেন?

নাটকে কম অভিনয় করছি না। কিন্তু নাটকের দর্শকদের রুচি বদলাচ্ছে। সেখানে ভালো কাজের সংখ্যা কমেছে। কাজ করছি। কিন্তু আমি সংখ্যা দিয়ে ক্যারিয়ারকে বিচার করতে চাই না।

প্রশ্ন :

কখনো মনে হয় নাটকের মানে তারতম্য হচ্ছে?

ওপর–নিচ আমি জানি না। কিন্তু নাটকের মানে পরিবর্তন হচ্ছে। যেকোনো পরিবর্তন সময়ের কারণে হয়। এখনকার পরিবর্তন ভালো না মন্দ, সেটা এখনই বোঝা যাবে না। সময়ের মধ্য থেকে সময়কে বিচার করা যাবে না।
সাক্ষাৎকার: মনজুরুল আলম, ঢাকা