বন্ধুত্ব নয়, মোশাররফ করিম চরিত্রের প্রয়োজনে এসেছেন

মাছরাঙা টেলিভিশনে ধারাবাহিক নাটক ‘শাদী মোবারকের’ আজ ৫০ পর্ব প্রচার করা হবে। অভিনয়ের পাশাপাশি এই নাটকের পরিচালনা করেছেন শামীম জামান। সামনে সিনেমা নির্মাণও শুরু করতে যাচ্ছেন। এসব নিয়ে গতকাল শনিবার বিকেলে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন মনজুর কাদের

প্রথম আলো:

‘শাদী মোবারক’ নাটকের গল্প বা মূল বার্তা কী নিয়ে? ধারাবাহিকটি যখন ৫০ পর্বে পৌঁছেছে, এখন দর্শক–প্রতিক্রিয়া কেমন দেখছেন?

শামীম জামান : এই নাটকের মূল বক্তব্য পারিবারিক বন্ধন। গল্পে সেটাই জোর দেওয়া হয়েছে। ৫০ পর্বে এসেও দর্শক–প্রতিক্রিয়া খুব ভালো। মানুষের সরাসরি মতামত জানার পাশাপাশি এখন আমরা যদি ইউটিউবের ভিউ বিবেচনায় আনি, তাতেও প্রতিক্রিয়া টের পাই। মন্তব্য দেখি, বেশ ইতিবাচক।

প্রথম আলো :

‘শাদী মোবারকে’ অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনাও করছেন। দুটি দায়িত্ব একসঙ্গে সামলানো কতটা কঠিন?

শামীম জামান : অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনা অনেক কঠিন কাজ, কিন্তু অনেক দিনের অভ্যাস তো, তাই সামলে নিতে পারছি। তবে এ ক্ষেত্রে টিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুরো টিম যদি ভালো থাকে, কাজটা সহজ হয়। দুটি দায়িত্ব পালন করতে খুব একটা সমস্যা হয় না। তবে শুরুর দিকে খুব কঠিন মনে হতো।

শামীম জামান
ছবি : শামীম জামানের সৌজন্যে

প্রথম আলো :

নাটকে মোশাররফ করিম ও আ খ ম হাসানও আছেন। আপনারা তিনজনই ভালো বন্ধু। বন্ধুত্বের কারণে পরিচালনায় কি ছাড় দিতে হয়?

শামীম জামান : বন্ধুত্ব এক জিনিস, পর্দা আরেক জিনিস। বন্ধুত্বের জায়গায় কিছু ছাড় দিতেই হয়। এরপরও সবাই পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করে। যার যার জায়গায় সবাই ঠিক থাকে। সবাই সবার শিডিউল সেভাবেই দেয়। অভিনয়ের ক্ষেত্রেও তা–ই। বন্ধু বলে নয়, সহশিল্পী হিসেবেই সবাই যার যার দায়িত্ব পালন করে। ছাড়ের বিষয়টা অন্য জিনিস, বন্ধুত্বে ত্যাগ থাকবে।

প্রথম আলো:

আ খ ম হাসানের সঙ্গে জুটি হয়ে আপনাকে দেখা যায়—এটা কি পরিকল্পিত, না কাকতালীয়?

শামীম জামান : বলা যায়, আমরা একসঙ্গে বেড়ে উঠেছি। জুটি হয়ে অভিনয় পরিকল্পিত বা কাকতালীয় কোনোটাই বলা যাবে না। আমরা একসঙ্গে মঞ্চ করেছি। মঞ্চ থেকে যেহেতু বেড়ে উঠেছি, কাজ করতে করতে একটা জুটি তৈরি হয়েছে, তৈরি হয়েছে বন্ধুত্ব। দুজনের বোঝাপড়ার ব্যাপারটা অনেক সুন্দর।

প্রথম আলো :

পরিচালক হিসেবে কোন বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন—চিত্রনাট্য, অভিনয় না দর্শক-সংযোগ?

শামীম জামান : শুরুতে সুন্দর একটি ভাবনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই ভাবনা দর্শক এই মুহূর্তে কীভাবে নেবেন, সেটাও দেখি। এরপর চিত্রনাট্য, সংলাপের সঙ্গে সঙ্গে অভিনয় তো আছেই। যেহেতু আমি নিজেও একজন অভিনেতা, অন্য সবার অভিনয় তাই একটু ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করি। এর বাইরে ফ্রেমিং, লাইটিংও আছে—একটা নাটক ভালো করে বানানোর ক্ষেত্রে সবকিছুকে গুরুত্ব দিতে হয়।

শামীম জামান
ছবি : শামীম জামানের সৌজন্যে

প্রথম আলো :

পরিচালনার সময় অভিনেতা শামীম জামানকে কতটা কন্ট্রোল করতে হয়?

শামীম জামান : আসলে নিজে নিজেকে কন্ট্রোল করা যায়। আবার অনেক সময় করি না। অভিনয়সত্তা যেন ফুটে ওঠে ও চরিত্র অনুযায়ী সেভাবেই কাজ করি। এভাবেই কাজগুলো হয়।

প্রথম আলো :

এত বছর পরও অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ কীভাবে টিকিয়ে রাখেন?

শামীম জামান : সময়ের সঙ্গে গল্প বলার ধরনে পরিবর্তন এসেছে। অভিনয়ে তো আসলে পরিবর্তনের কিছু নেই, গল্প অনুযায়ী কাজ করতে হয়। চরিত্র অনুযায়ী অভিনয় করতে হয়। অভিনয় যেহেতু আমার প্যাশন, পেশা, দীর্ঘদিন মঞ্চে অভিনয় করেছি, এরপর টেলিভিশনে অভিনয় করেছি। আমাদের কোনো অবসর নেই, চাকরিজীবীর কিন্তু অবসর আছে। একজন শিল্পীর অবসর নেই, তাই অভিনয় করে যেতে হবে। কখনো ভালো লাগবে, কখনো খারাপ লাগবে—এসব মিলিয়েই তো করতে হবে। পাশাপাশি দর্শক–গ্রহণযোগ্যতার বিষয় আছে। দর্শক যত দিন দেখতে চাইবেন, তত দিন করে যাব।

প্রথম আলো:

দর্শক আপনাকে কমেডিতে দেখে অভ্যস্ত, এই ইমেজ কি কখনো সীমাবদ্ধতা তৈরি করে?

শামীম জামান : কমেডি চরিত্রে বেশি দেখেন, দেখেছেন। এটার সীমাবদ্ধতা এ রকম—পরিচালকেরা আমাকে যেভাবে ডাকেন, সেভাবেই কাজ করতে হয়। একটা বিষয় হয় কি, যে জিনিসটি দর্শক বেশি গ্রহণ করে, প্রত্যেক পরিচালক বা সবারই কিন্তু ওই ধরনের গল্পে কাজ করার প্রবণতা বেশি থাকে। তবে এখন আমি সিরিয়াস চরিত্রেও কাজ করছি। সীমাবদ্ধতা তো থাকে, এরপরও অতিক্রম করা যায়, যখন পরিচালক আলাদাভাবে চান।

(বাম থেকে) আ খ ম হাসান, মোশাররফ করিম ও শামীম জামান
ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো :

এখন কিন্তু দর্শকের দেখার অভ্যাস বদলেছে, এই পরিবর্তনের সঙ্গে আপনি কীভাবে মানিয়ে নিচ্ছেন?

শামীম জামান : শিল্পের ক্ষেত্রে আসলে একটু সমসাময়িক হওয়াটা জরুরি। সমসাময়িক বিষয়ই দর্শক বেশি দেখতে চায়। একটা বিষয় দেখলাম, আমরা আগে যেসব গল্পে কাজ করেছি, ঘুরেফিরে এ রকম গল্পে এখন কাজ হচ্ছে। অনেক ছেলেমেয়ে অভিনয় করছে। দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। তাই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজের অভিনয় ও নির্মাণ সময়োপযোগী করছি। একটু আধুনিক হওয়ার চেষ্টা করছি।

প্রথম আলো :

শামীম জামান : সিনিয়র শিল্পীদের জন্য আজকের ইন্ডাস্ট্রি কতটা সহযোগিতামূলক বলে আপনি মনে করেন?

সিনিয়র শিল্পীদের সহযোগিতামূলক কাজ এখন আসলে কমই হচ্ছে। আমি যখন পরিচালনা করি, তখন অনেক সিনিয়র শিল্পীকে কাস্ট করার চেষ্টা করি। যদিও সব সময় পেরে উঠি না। সিনিয়রদের কাজ এখন আসলেই কমে গেছে। নতুন অনেকে আসছে, নতুনদের অনেকে জায়গা করে নিচ্ছে। ইন্ডাস্ট্রিও বড় হয়েছে। তারপরও আমার মনে হয়, সিনিয়রদের নিয়ে আরও বেশি কাজ করলে ভালো হয়। কারণ, একজন শিল্পী তৈরি হতে অনেক সময় লাগে। একজন সিনিয়র শিল্পীর যে অভিনয়দক্ষতা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা—সেটা তো অন্য কেউ দিতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে সিনিয়র-জুনিয়র মিলিয়ে কাজ করলে বেশি ভালো।

প্রথম আলো:

সামনে নতুন কোনো প্রকল্প হাতে আছে কি, যেখানে নতুন কিছু করার সুযোগ পাচ্ছেন?

শামীম জামান : অভিনয় আমার পেশা, তাই সামনে নতুন নতুন প্রজেক্ট আসবে। ধারাবাহিক ও খণ্ডনাটকেরও কাজ আছে। সিনেমার কাজও আছে। ঈদের বেশ কিছু কাজ শুরু করছি, সামনের বেশির ভাগ কাজ নতুন কিছু করার সুযোগ আছে।

শামীম জামান
ছবি : শামীম জামানের সৌজন্যে

প্রথম আলো :

স্কুলজীবন থেকে আপনি অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু যদি অভিনয়ে না থাকতেন, আজ আপনি কী করতেন বলে মনে হয়? অন্য কোন দিকে আপনার আগ্রহ ছিল বেশি?

শামীম জামান : মানিকগঞ্জের দৌলতপুর বাঘুটিয়া আমার গ্রাম। একটা সময় গ্রামে যাত্রাপালায় অভিনয় করেছি। যখন আমি স্কুলে পড়ি তখন থেকে অভিনয় করছি। তখন থেকে অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছা। স্কুল-কলেজ শেষে ঢাকায় এলাম। এরপর আমি চারুকলায় পড়তে চেয়েছিলাম। পরীক্ষা দিয়েছিলাম, চান্স পাইনি। পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছি। ছোটবেলায় আর্ট করতে পারতাম। তবে অভিনয় ছেড়ে দিয়ে শুধু আঁকাআঁকি করতেও চাইনি কখনো। ঢাকায় এসে আরণ্যক নাট্যদলে যোগ দিই। অভিনয় ছেড়ে পাইলট বা ডাক্তার হবো—এমনটা কখনোই আমার মনের মধ্যে ছিল না। তবে সংগীতশিল্পী হতেও চেয়েছিলাম। সেই স্বপ্নের বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।

প্রথম আলো :

আপনি বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারদর্শী, এ আগ্রহের শুরুটা কোথা থেকে? কোন কোন বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারেন? সবচেয়ে প্রিয় কোনটি?

শামীম জামান : ছোটবেলায় শিখেছিলাম। আমি আমার খালার বাড়ি ঢাকার মিরপুরে যখন থাকতাম, তখন খালাত বোন গান শিখত আর আমি তবলা শিখতাম। ঢাকায় এসে আরণ্যকে ভর্তি হওয়ার পর বাদ্যযন্ত্র অনেক দিন বাজাতে হয়েছিল, এখনো বাজাই। আমি প্রথম দিকে দলে অভিনয়ের সুযোগ পেতাম না, তাই মঞ্চের পেছনে বাদ্যযন্ত্র বাজাতাম। এ নিয়ে আমার কষ্ট ছিল, ২০০৫ সালে হঠাৎ করে আমাকে ‘পাথর’ নাটকে চরিত্র দেওয়া হলো, সঙ্গে বাদ্যযন্ত্রও ছিল। দর্শক চরিত্রটি ভালোভাবে নিয়েছিল। তার পর থেকে অভিনয় করছি, যত বাদ্যযন্ত্র আছে, সব বাজাচ্ছিও। ২০০০ সালে আরণ্যক থেকে আমাকে মিউজিক ডিরেক্টর হিসেবে হংকংয়ের একটি উৎসবে পাঠানো হয়। অনেকগুলো বাদ্যযন্ত্র বাংলাদেশ থেকে নিয়ে গিয়েছিলাম। এক মাস মহড়া করেছিলাম, আরেক মাস শো ছিল। দুই ঘণ্টার একটি পাপেট শো ছিল, যেখানে নাচ, গান, অভিনয় সবই ছিল। আমি হারমোনিয়াম, তবলা, ঢোল, খোল, ঝুরি—সব ধরনের বাদ্যযন্ত্র মোটামুটি বাজাতে পারি। তবে তবলা বাজাতে আমার খুব ভালো লাগে।

প্রথম আলো:

অভিনয় ও সংগীত—দুটি মাধ্যমকে কীভাবে একে অন্যের পরিপূরক মনে করেন?

শামীম জামান : অবশ্যই পরিপূরক মনে করি। সংগীতে যেমন একটা তাল-লয়ের ব্যাপারে আছে, অভিনয়েও তা–ই। অভিনয়ের সংলাপ প্রক্ষেপনের সময় থামার ব্যাপার আছে। আমার মনে হয়, একজন অভিনেতাকে অভিনয়ের প্রয়োজনে গান, নাচ, আবৃত্তি ও বাদ্যযন্ত্র জানা উচিত। আমরা যেহেতু মঞ্চ করেছি, এসব শিখে এসেছি।

শামীম জামান
ছবি : শামীম জামানের সৌজন্যে

প্রথম আলো :

এখনো কি নিয়মিত সংগীতচর্চা করেন? যদি সংগীতকে পেশা হিসেবে বেছে নিতেন, তাহলে কেমন শিল্পী হতেন বলে মনে হয়?

শামীম জামান : সংগীতচর্চা এখন খুব বেশি হয় না, তারপরও বাসায় টুকটাক করি। যেহেতু পেশা আমার অভিনয় ও পরিচালনা—তাই সময় খুব কম পাই। তবে গানটা করতে আমার খুব ভালোই লাগে। কিছু অ্যালবামও আছে। গানকে পেশা হিসেবে নিলে ফোকশিল্পী হতাম। অভিনয়ের প্রয়োজনে সংগীতকে বেছে নিয়েছিলাম। অভিনয়ে এসে সংগীত শেখাটা কাজে লেগেছে।

প্রথম আলো :

গত বছরের শেষ দিকে আপনি একটি সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্রকল্পটির বর্তমান অবস্থা কী? ছবির নাম ও গল্পের ধরন সম্পর্কে কিছু বলবেন?

শামীম জামান : দুটি ছবির গল্পটা আগে থেকে তৈরি আছে। বেশ কয়েক বছর সময় নিয়ে এ দুটি গল্প তৈরি করেছি। আমি কমেডি ধাঁচের সিনেমা বানাতে চেয়েছি। সিনেমায় সামাজিক বার্তা থাকবে। আমার কেন জানি মনে হয়, সে রকম কমেডি ছবি বাংলাদেশে এখনো হয়নি। আমাদের পাশের দেশে হয়েছে। আমি সে রকম বানাতে চাই। অপেক্ষা করছি। চিত্রনাট্য হয়েছে। কারেকশন চলছে। ‘ডিগবাজি’ নামের ছবিটির কাজ শুরু করব, মোশাররফ করিম এই ছবিতে অভিনয় করবেন।

প্রথম আলো :

সিনেমাটি নির্মাণের চিন্তা কীভাবে এল, দীর্ঘদিন টেলিভিশন ও মঞ্চে কাজ করার পর বড় পর্দায় নামার ক্ষেত্রে কী অনুপ্রেরণা কাজ করেছে।

শামীম জামান : আমি মনে করি, একজন শিল্পীকে সব ক্ষেত্রে কাজ করা উচিত, যেমন সিনেমা, মঞ্চ, টেলিভিশন। একজন নির্মাতাকেও সব সেক্টরে কাজ করা উচিত বলে মনে করি। যেহেতু অভিনয় থেকে পরিচালনায় এসেছি, প্রচুর নাটক নির্মাণ করছি, একটা সময় এসে ভেবেছি, বড় পর্দায় হোয়াই নট? বড় পর্দায় কাজ করতে চাই, এটা আমার অনেক দিনের স্বপ্ন। অনুপ্রেরণা বলতে যদি বলি, আমি নিজেই নিজের অনুপ্রেরণা।

প্রথম আলো:

একজন পরিচালক হিসেবে আপনি টেলিভিশনের গল্প বলার ধরন থেকে কতটা ভিন্নভাবে সিনেমাটি ভেবেছেন?

শামীম জামান : দুটোই ফিকশন কিন্তু সিনেমার যে ক্যানভাস, গল্পের যে গভীরতা, আয়োজন—সবই তো আসলে আলাদা। তাই আমার সিনেমা নির্মাণের ধরন আলাদা থাকবে। আধুনিক প্রযুক্তি তো আছেই পাশাপাশি এখন যে ধরনের দর্শক তৈরি হয়েছে, তারা যে রকম সিনেমা দেখতে চায়, সে রকমই হবে। অবশ্যই নাটক আর সিনেমা এক হবে না, পরিসর অবশ্যই ভিন্ন হবে।

(বাম থেকে ) শামীম জামান, মোশাররফ ​করিম এবং আ খ ম হাসান

প্রথম আলো :

আপনি জানিয়েছিলেন, সিনেমাটিতে মোশাররফ করিম অভিনয় করবেন, তাঁর সঙ্গে কীভাবে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল? বন্ধুত্বের কারণে তাঁকে নেওয়ার ভাবনা, নাকি চরিত্রের প্রয়োজনে?

শামীম জামান : বন্ধুত্বের কারণে নয়, মোশাররফ করিম চরিত্রের প্রয়োজনে এসেছেন। একসময় বাংলাদেশে আমরা যারা কমেডি নাটক করেছি, যেমন আমি, মোশাররফ, আ খ ম হাসান, চঞ্চলসহ আরও যাঁরা শিল্পী আছেন, আমাদের সঙ্গে যাঁরা কমেডিটা বোঝেন, তাঁরাও আমার ছবিতে কাজ করবেন। আমার ছবিটি পুরোদস্তুর কমেডি ধাঁচের। মোশাররফ যেহেতু আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, তার সঙ্গে ডিরেক্টরিয়াল বোঝাপড়া সুন্দর হয়। আরও কাউকে নিয়ে ছবি বানানোর পরিকল্পনাও আছে। খুব ইচ্ছা ছিল, মোশাররফ-চঞ্চলকে নিয়ে একসঙ্গে ছবি বানাতে। মোশাররফ-চঞ্চল-হাসান, আমিসহ একটা ছবি বানালেও মনে হয় দর্শক খুব ভালোভাবে গ্রহণ করতেন। আমার ইচ্ছা আছে, জানি না সফল হবো কি না।