আর্ক ছেড়ে খুব একাকিত্বে ভুগেছি

নব্বইয়ের দশকে গঠিত ব্যান্ড আর্ক তাদের অসাধারণ সব গান দিয়ে শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নেয়। একটা সময় স্টেজ শো আর গান প্রকাশে নিয়মিত হলেও মাঝে কয়েক বছর অনিয়মিত হয়ে পড়ে এ ব্যান্ডের কার্যক্রম। এখন তারা আবার সরব বলে জানালেন ব্যান্ডের প্রধান সদস্য হাসান। আজ বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ৫০ মিনিটে এটিএন বাংলায় প্রচারিত হবে লাইভ মিউজিক্যাল শো ‘মিউজিক লাউঞ্জ’। এফডিসির ৮ নম্বর ফ্লোর থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে অনুষ্ঠানটি। এতে গাইবে ব্যান্ড আর্ক। আজকের অনুষ্ঠানসহ ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ব্যান্ডের সদস্য হাসান।

প্রশ্ন :

ড্রামসের শব্দ শুনছি।

আমরা মহড়ায় আছি। টেলিভিশনের সরাসরি গানের অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।

হাসান। ছবি : প্রথম আলো

প্রশ্ন :

দীর্ঘদিন পর কি টেলিভিশনের কোনো সরাসরি অনুষ্ঠানে গাইছেন?

একদম তা–ই। অনেক দিন হলো টেলিভিশনের সরাসরি অনুষ্ঠানে গাওয়া হয় না। সবকিছু ব্যাটে–বলে মেলেও না, এটাও একটা কারণ। অনেক দিন পর যেহেতু গাইছি, তাই ভালোভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

প্রশ্ন :

ব্যান্ডের ভক্তদের জন্য কি সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে?

আমরা তো ভালো করেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। ব্যান্ডের বেশি প্রচলিত গানগুলোই গাইব। টেলিভিশন কর্তৃপক্ষও অনুরোধ করেছে, আমাদের ব্যান্ডের কমন গানগুলো যেন গাই।

প্রশ্ন :

কতগুলো গান গাইবেন?

১৩-১৪টি গান গাওয়ার প্রস্তুতি আছে। এর মধ্যে ‘সুইটি’, ‘গুরু’, ‘পাগল মন’, ‘এমন একটা সময়’, ‘বাংলাদেশ’, ‘যারে যা’, ‘অভিমান নয়’ গানগুলো যেমন আছে, আরও পরিচিত গানও থাকবে।

প্রশ্ন :

একটা কথা প্রায়ই শোনা যায়, আলাদা স্টাইল ও সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বে স্টেজ শোতেও নিয়মিত নয় আর্ক।

এটা ঠিক, মাঝের কয়েকটা বছর ছিলাম না। কিন্তু করোনার আগে আমরা কিন্তু অনেক বেশি অ্যাকটিভ ছিলাম। এই কথাগুলো আমাদেরও শুনতে হয়। অনেক অনুষ্ঠান আয়োজকেরাও আমরা নিয়মিত কি না, কনফিউজড। আপনাদের মাধ্যমে আমি সবাইকে বলতে চাই, আমরা কিন্তু স্টেজে এখন খুবই অ্যাকটিভ। তবে এটা ঠিক, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যে প্রচার–প্রচারণা, এসবে আমরা অভ্যস্ত নই, তাই হয়তো অনেকে অন্য রকম ভাবতে পারেন। আমরা কিন্তু ভালোভাবে অনুষ্ঠান করছি। বাংলাদেশের যেকোনো জেলায়, এমনকি দেশের বাইরেও শো করার জন্য স্ট্যান্ডবাই আছি। করছিও।

প্রশ্ন :

একটা ছবিতে দেখলাম, বাংলা ব্যান্ডের সদস্য বুনো আপনাদের সঙ্গে...

বুনো আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। নিয়মিত সদস্য হিসেবে আর্কের সঙ্গে সবখানে বাজাচ্ছে। আমরাও তাকে ব্যান্ড মেম্বার হিসেবে পেয়ে আনন্দিত।

প্রশ্ন :

আপনার কথামতো স্টেজ শো চলছে, ব্যান্ডের অন্যান্য কার্যক্রমও চলছে, কিন্তু নতুন গান শ্রোতাদের দিচ্ছেন না।

স্টেজ শো ও টেলিভিশন লাইভে নিজেদের ব্যস্ততা আরও বেশি করে জানান দিতে চাই। শ্রোতাদের সঙ্গে যোগাযোগটা আরও নিয়মিত ও নিবিড় করতে চাই। এরপর আমরা নতুন গান উপহার দেব। আমাদের নতুন গান তৈরির কাজ চলছে। এটাও ঠিক, নতুন গান করতেই হবে। শ্রোতাদের সঙ্গে নতুন গান দিয়ে আবারও সংযোগ স্থাপন করতে চাই।

প্রশ্ন :

একটা সময় আর্ক ছেড়ে স্বাধীনতা ব্যান্ড গঠন করেছিলেন। এরপর আবার ফিরলেন...

আর্ক ছেড়ে খুব একাকিত্বে ভুগেছি। ভেতর থেকে অনুভব করলাম, আমার সবকিছু আর্কের জন্য। তাই টুলু ভাইয়ের পরামর্শে আবার আর্ক চালু করি। আমি আগের মতো আর্ক ব্যান্ডের হয়েই গান করে যাচ্ছি, ভবিষ্যতেও আর্কের সঙ্গেই থাকব।

প্রশ্ন :

একসময় আইয়ুব বাচ্চু, জেমস ও হাসান—এই ত্রয়ীর গানের জন্য মানুষ অপেক্ষা করত। এই তিনজনের মধ্যে আইয়ুব বাচ্চু গান প্রকাশ করে গেলেও জেমস আর আপনাকে পাওয়া যায়নি। সেই জেমসও গত রোজার ঈদে গান প্রকাশ করলেন। অথচ আপনি...

অনেকে ভেবেছিলেন আমি সংগীত থেকে অবসরে চলে গেছি, অনেকে ভেবেছিলেন দেশের বাইরে চলে গেছি, এমনকি কেউ ধারণা করেছিলেন পেশা বদল করেছি। এসবের কোনোটিই আমি করিনি। আমি সব সময় গানের ভেতরেই ছিলাম। টেলিভিশনে ছিলাম না। অ্যালবাম বা গান প্রকাশ করিনি। প্রকাশের মতো তখন নতুন কিছু আমার কাছে ছিল না। সে জন্যই চুপচাপ নিজের কাজ করে গেছি। ওই যে বললাম, আবার আমরা সবাই অ্যাকটিভ হয়েছি। হয়তো কোনো একদিন শ্রোতারা শুনতে পাবে, আমাদের নতুন গান আসছে।