প্রচারের কারণে অনেক খারাপ গানও প্রতিনিয়ত শুনতে হচ্ছে

দেশে ফিরে বেশ কিছু নতুন গান করেছেন সংগীতশিল্পী দিনাত জাহান মুন্নী। এর মধ্যে রয়েছে সংগীতশিল্পী শুভ্র দেবের সুরে একটি গান। নতুন গানসহ নানা বিষয়ে সম্প্রতি মুন্নীর মুখোমুখি হয়েছে ‘বিনোদন’

প্রথম আলো:

শুভ্র দেবের সুরে গান করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

তাঁর মতো একজন কিংবদন্তি শিল্পীর সুরে আমি গাইছি, এটা আমার জীবনে অনেক বড় পাওয়া। গানটি তিনি আমাকে দিয়ে গাওয়াবেন, সেটা ধারণার মধ্যেও ছিল না।

দিনাত জাহান মুন্নী
প্রথম আলো
প্রথম আলো:

নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় কবে এসেছেন, আর কী কী গান করলেন?

গত ২৯ ডিসেম্বর ঢাকায় এসেছি। এই এক মাসে ছয়টির মতো নতুন গান রেকর্ড করেছি। পাশাপাশি বেশির ভাগ টিভিতেই লাইভ গান করেছি; শো-ও করেছি।

প্রথম আলো:

আপনি নিউইয়র্কে থাকেন, আবার নিয়মিত গানও করছেন। সবটা কীভাবে সামলাচ্ছেন?

অনেক কষ্ট হয়। আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত থাকি। কবে, কী কাজ করছি—নিয়মিত আপডেট জানাই। নিউইয়র্কে বাঙালি কমিউনিটিতেও গান করি, তাঁরা আমাকে ভালোবাসেন। শিল্পীর সুর ও গান ছড়িয়ে দিতে পারলে শিল্পীর উপস্থিতির প্রয়োজন নেই। শিল্পীর উপস্থিতি খুব প্রয়োজন হলে আজ মাইকেল জ্যাকসন, লতাজি (মঙ্গেশকর) থাকতেন না। শিল্পী কোথায় আছেন আর কোথায় নেই, সেটা কোনো ব্যাপার নয়। আমি নিউইয়র্কের স্টুডিওতে রেকর্ড করে গান পাঠাই। ঢাকায় সুরকারেরা এটা মিক্সিং করেন। ঢাকার সব সুরকারই আমাকে পাচ্ছেন। আর আমি নিউইয়র্কে দুয়েক মাস থাকি, বাকি সময় বাংলাদেশে থাকার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশকে আমি মিস করতে চাই না।

দিনাত জাহান মুন্নী
প্রথম আলো
প্রথম আলো:

আপনি ২৭ বছর ধরে গান করছেন। ক্যাসেট, সিডির যুগ পেরিয়ে এখন ডিজিটাল মাধ্যমে গান প্রকাশিত হয়। হালের সংগীত ইন্ডাস্ট্রিকে কেমন দেখেছেন?

এখন গান প্রকাশে মাধ্যম অনেক বেশি, শিল্পীও বেশি। ফলে শ্রোতাদের একটা গান বেছে নেওয়া কঠিন। আগে আমরা টেপ রেকর্ডারে গান শুনতাম। এখন ইউটিউবসহ নানা মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডেই গান আসছে। এত গান থেকে ভালো-মন্দ বেছে নেওয়া কঠিন। এখন যেমন খুব ভালো কাজ হচ্ছে, আবার ঢালাও কাজও হচ্ছে। প্রচারের কারণে অনেক খারাপ গানও প্রতিনিয়ত শুনতে হচ্ছে। আমার ধারণা, এই অস্থিরতা সব সময়ই ছিল। ভালোটা ভালো জায়গায় রয়ে যাবে, খারাপ কাজটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সরে যাবে। দিন শেষে সবাই ভালোটাই ভালোবাসে। তরুণ প্রজন্মের প্রতিভাবান শিল্পীদের গান আমি শেয়ার করি, ওদের দেখলে আমি খুব অনুপ্রাণিত হই।

প্রথম আলো:

এই বছরে আলাদা কোনো পরিকল্পনা করেছেন?

আমি গত ২৭ বছরে কখনোই পরিকল্পনা করে কিছু করিনি। সব সময় একটা জিনিস মেনে চলেছি, কাজ ছোট হোক কিংবা বড়—কাজটা করতে হবে। আমি প্রতিনিয়ত শিখছি। মানুষের সঙ্গে কাজ করতে পারার অভিজ্ঞতাটা নিজের জন্যও একটা শিক্ষা। এর মধ্যে ইমরানের সুরে প্রথমবার কাজ করেছি। নতুনদের সঙ্গেও কাজ করতে চাই।

দিনাত জাহান মুন্নী l ছবি: প্রথম আলো
প্রথম আলো:

আড়াই দশকের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে আপনার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি কী?

মানুষের ভালোবাসা। আমি আসলে কখনো কোনো পুরস্কারও পাইনি। কিন্তু আমার অনেক গান আছে, সেগুলো মানুষ গান; আমাকে গাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। পৃথিবীর যেখানেই গিয়েছি দেখেছি, শুধু আমার গান নয়, আমাকেও মানুষ ভালোবাসেন।

দিনাত জাহান মুন্নী
ছবি : সংগৃহীত
প্রথম আলো:

কোনো অপ্রাপ্তি আছে?

নাহ, এখন করি না। আমি কয়েক বছর আগেও যেটা পাইনি, এখন সেটা ভালোবাসি। মানুষ আমাকে ভালোবাসেন, আমার মধ্যে কোনো অপ্রাপ্তি কাজ করে না। আমি অনেক ভালো আছি।