দৃশ্যগুলো গল্প বলার জন্যই প্রয়োজন ছিল

আবদুন নূর সজল। প্রথম আলো
সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গতে মুক্তি পেয়েছে ওয়েব ফিল্ম ‘পাফ ড্যাডি’। শহীদ উন নবী ও মুশফিকুর রহমানের সিনেমাটিতে রাজনীতিবিদের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আবদুন নূর সজল। এই সিনেমা ও অন্যান্য নানা প্রসঙ্গে গত বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে বিনোদন

প্রশ্ন :

‘পাফ ড্যাডি’ নিয়ে কী বলছেন দর্শকেরা?

এখন পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া ভালো পাচ্ছি। পরিচিত-অপরিচিতজনদের কাছ থেকে প্রচুর ফোনকল পাচ্ছি। ফেসবুকে ইনবক্সে শুভেচ্ছাবার্তা তো আছেই। সেই সঙ্গে ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে আমার চরিত্রটি নিয়ে বেশ ইতিবাচক আলোচনা দেখা যাচ্ছে। আন্দাজ করতে পারছি, ঠিকমতোই চরিত্রটি করতে পেরেছি।

আরও পড়ুন

প্রশ্ন :

সিনেমাটিতে আপনি রাজনীতিবিদের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বিষয়টি নিয়ে দর্শকদের বাড়তি আগ্রহ ছিল কি না?

হতে পারে। রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠার চরিত্র আগে কখনো করিনি। আমার অভিনীত বেশ কয়েকটি সিনেমা চলতি বছর মুক্তি পেয়েছে। সিনেমাগুলোর চরিত্রগুলো আমার জন্য নতুন ছিল। ‘জ্বীন’, ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ থেকে ‘পাফ ড্যাডি’ ছবিতে আমাকে আলাদাভাবে পেয়েছেন দর্শকেরা।

প্রশ্ন :

নতুন নতুন চরিত্রের জন্য তো বাড়তি প্রস্তুতিও নিতে হয়।

এখন কাজ কম করি। তবে যেসব কাজ করি, চরিত্রের জন্য শক্ত হোমওয়ার্ক করা হয়। চরিত্রগুলোর চলনবলন কেমন হবে, চরিত্রের গভীরতা—এ বিষয়গুলোতে শুটিংয়ের আগেই নিজেকে প্রস্তুত করি। চরিত্রের একটা জার্নি সেট করা হয়। এরপর শুটিংয়ে যাই। এতে শুটিংয়ে গিয়ে কাজটি যেমন নিজের জন্য সহজ হয়, তেমনি দর্শকদের কাছেও চরিত্রটি বিশ্বাসযোগ্যভাবে তুলে ধরা যায়।

সজল। ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

‘পাফ ড্যাডি’ ছবিতে আপনার ও পরীমনির কিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্য আছে। দৃশ্যগুলো দর্শকেরা কীভাবে নেবেন, মুক্তির আগে এ নিয়ে সংশয় ছিল?

দৃশ্যগুলো গল্প বলার জন্যই প্রয়োজন ছিল। চরিত্রটি আসলে সাহসী, একরোখা। মিডিয়া থেকে শুরু করে সমাজের নানা জায়গায় আমার চরিত্রটি প্রভাব বিস্তার করে। সেই সূত্র ধরেই দৃশ্যগুলো এসেছে। তবে ক্যামেরার সামনে আমার, পরীর দুজনেরই জন্যই দৃশ্যগুলো করা কঠিন ছিল। দুজনেই শৈল্পিকভাবে দৃশ্যগুলো করার চেষ্টা করেছি। তবে মুক্তির পর দর্শকদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। সব দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি তো এক নয়। দু-একজন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।

প্রশ্ন :

পরীর সঙ্গে প্রথম কাজ, সহশিল্পী হিসেবে তাঁকে কেমন লাগল?

একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছে, পরীমনি একজন ম্যাজিক্যাল শিল্পী; শুটিং ইউনিটের ছোট-বড় সবার সঙ্গেই মিশে যেতে পারেন। সারাক্ষণ দুষ্টুমি, মজার মধ্যে থাকেন। খেয়াল করেছি, যখনই শট শুরু হয়; অ্যাকশন বলার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর চোখ চকচক করতে থাকে। তাঁর মধ্যে পরিবর্তন চলে আসে। চরিত্র অনুযায়ী চোখের চাহনি তৈরি হয়ে যায়। কাজের সময় পরীমনি দারুণ সিরিয়াস।

‘পাফ ড্যাডি’র শুটিংয়ে পরীমনি ও সজল। ছবি: ফেসবুক

প্রশ্ন :

বলছিলেন, কাজ অনেক কমিয়ে দিয়েছেন। কেন?

আমরা যাঁরা অভিনয়কে ভালোবাসি, এমন গল্প চাই, যেগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ নিতে হবে, কষ্ট করতে হবে। অনেক বছর ধরে অভিনয় করছি। অনেক কাজ করেছি। দর্শকদের কাছ থেকে প্রচুর ভালোবাসা পেয়েছি। একটা সময় এসে মনে হয়েছে, সেই কাজগুলোই এখন করা উচিত, যেগুলোর গল্প, চরিত্র, নির্মাণ একটু আলাদা হবে। সময় নিয়ে কাজ করা হবে। নিজের কাজ যেন নিজেই উপভোগ করতে পারি। এসব কারণেই কাজ কমিয়ে দেওয়া।

প্রশ্ন :

আপনাকে সিনেমাতে বেশি দেখা যাচ্ছে। কারণ কী?

সোজাসাপ্টাভাবেই বলি, নাটক আমার কাছে ভালো লাগা, ভালোবাসার জায়গায়। আজকের সজল কিন্তু নাটক থেকেই এখানে এসে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এখনকার সময়ে এসে বেশির ভাগ নাটকে যে ধরনের গল্প নিয়ে কাজ হয়, আমাকে টানে না। চলতি বছর মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো থেকে একটা নতুন ধারণা তৈরি হয়েছে। নাটকে দর্শকদের সম্পৃক্ততা বেশি হলেও সিনেমার আবেদনটাই আলাদা। শিল্পীকে ঘিরে আলোচনাটাও সিনেমায় বেশি তৈরি হয়।  

‘১৯৭১ সেই সব দিন’ সিনেমায় সানজিদা প্রীতি ও সজল। ছবি : পরিচালকের সৌজন্যে

প্রশ্ন :

সিনেমায় নতুন কাজের খবর কী?

আবু সাইয়ীদের ‘সংযোগ’ ও জাহিদ হোসেনের ‘সুবর্ণভূমি’ নামে দুটি সিনেমার কাজ শেষ করেছি। ‘সুবর্ণভূমি’ আগামী ডিসেম্বর মুক্তির কথা আছে। নতুন আরও দুটি কাজ নিয়ে কথাবার্তা মোটামুটি চূড়ান্ত। তবে এখনো চুক্তিবদ্ধ হইনি।