সিনেমা একবার শুরু করলে আর ফিরে আসব না

তিন সপ্তাহ দেশের বাইরে ছিলেন অভিনয়শিল্পী সামিরা খান মাহি। দেশে ফিরে শুরু করেছেন ঈদের নাটকের শুটিং। নতুন কাজ ও অন্যান্য বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলল ‘বিনোদন’।
সামিরা খান মাহি
ছবি : প্রথম আলো

প্রশ্ন :

বেশ হইচইয়ের মধ্যে আছেন মনে হয়?

আমার বোন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাবে, তাই একটু কেনাকাটায় বের হয়েছি। সমস্যা নেই। কথা বলা যাবে।

প্রশ্ন :

শুক্রবার নাকি অনেক রাত পর্যন্ত শুটিং করেছেন?

ঠিকই শুনেছেন। ভোর পর্যন্ত শুটিং হয়েছে। আমি আর তৌসিফ মাহবুব ভূতের বাড়ি নামের একটি নাটকের শুটিং করেছি। ঈদে প্রচারিত হবে। ভৌতিক গল্প। শুটিংয়ে অনেক মজা হয়েছে। আবার কষ্টও হয়েছে।

সামিরা খান মাহি
ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন :

কষ্ট কী রকম?

চরিত্রের প্রয়োজনে আমাকে ভারী কনট্যাক্ট লেন্স পরতে হয়েছে। লেন্সের কারণে অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হয়ে চোখ ফুলে গেছে। শুটিং থেকে ফেরার পরই ব্যথা হচ্ছিল। সকালে বেড়ে যায়। বিকেলে একটু কমে। চিকিৎসক বলেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যা না হলে রিস্ক ফ্রি। তবে এসব লেন্স থেকে অনেক বড় ধরনের সমস্যাও হয়। আল্লাহ বাঁচাইছে।

প্রশ্ন :

আপনার কী মনে হয়, কনট্যাক্ট লেন্সে কি চোখের সৌন্দর্য বাড়ে?

কেন জানি শুটিংয়ে কনট্যাক্ট লেন্সের অনেক চাহিদা থাকে। আমাদের শুনতে হয়, অন্য রকম লাগবে। শুরুতে ভালো লাগত। কিন্তু অনেক পরে বুঝতে পেরেছি, কনট্যাক্ট লেন্স বা যা-ই পরি না কেন চোখে, এটা তো ফেক। যতই মানুষের কাছে অন্য রকম উপস্থাপন করি না কেন, স্বাভাবিক সৌন্দর্যই বেশি সুন্দর। বোঝার পর লেন্স পরা বন্ধ করে দিয়েছি। এখন দেখি, অনেক অভিনয়শিল্পীও কনট্যাক্ট লেন্স পরা বন্ধ করে দিয়েছেন। চরিত্রের চাহিদা না থাকলে নয়। আমাদের দেশে কনট্যাক্ট লেন্সগুলো এত কম দামি, এমনও আছে অনলাইনে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে! এগুলো বছরের পর বছর আমরা পরছিও। এটা তো চোখের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। প্রায়ই তো শুনি, লেন্সের কারণে কতজনের চোখে বড় ধরনের সমস্যা হয়েছে।

প্রশ্ন :

ঈদুল ফিতরে আপনার আটটার মতো নাটক প্রচারিত হয়েছে। ঈদুল আজহায়ও কি সংখ্যা তেমন থাকবে?

রোজার ঈদের পর সেভাবে সময়ও পাইনি। গত এক মাসের মধ্যে ২০ দিন তো লন্ডনে ছিলাম। আসার পর কাজ করছি। এরই মধ্যে দুটি নাটকের কাজ করেছি। আর হয়তো পাঁচ থেকে ছয়টিতে কাজ করব। সব কটি তো অন এয়ারও হয় না। গত ঈদে এক ডজনের বেশি নাটকে অভিনয় করলেও অনেক আগের এবং ঈদের আগমুহূর্তে শুটিং করা মিলিয়ে আটটি প্রচারিত হয়েছে।

প্রশ্ন :

লন্ডনে গিয়েছিলেন কেন?

আমার ভাই লন্ডনে থাকে। ওর সঙ্গে আমিও ভিসার আবেদন করেছিলাম। মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছিল, সে কারণে যাওয়া। যাওয়ার পর মনে হয়, কিছু কাজের ব্যাপারে লিংক শেয়ার করতে পারি। মিটিং করতে পারি। এরপর অনেক জায়গায় মেইল করি, কিছু জায়গা থেকে রিপ্লাই এসেছে।

সামিরা খান মাহি
ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন :

শুনলাম সেখানে শুটিংও করলেন?

না, শুটিং করিনি। ওখানকার একটা প্রোডাকশন একটা ওয়েব সিরিজ বানাচ্ছিল। আমাকে ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। বলেছিল, সিরিজটি নেটফ্লিক্সে যাবে। ওরাই আবার পরে নেটফ্লিক্সের জন্য অন্য একটা পরিকল্পনাও করছিল। বলছিল, অডিশন যেহেতু দিবা, এবারেরটায় ছোট্ট একটা চরিত্র করতে পারো। কিন্তু করিনি। বলেছি, এখন নয়। তবে পরেরটায় যদি সিলেক্ট হই, তাহলে হয়তো দু-তিন মাসের মধ্যে আবার যাব। ওরা তো নাটক দেখে না। আমার চরকিতে মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজ দেখিয়েছি।

প্রশ্ন :

চরকিতে মুক্তি পাওয়া ‘ওভার ট্রাম্প’ দিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়েবে যাত্রা শুরু। এই যাত্রা কেমন হয়েছে বলে মনে করছেন?

যারাই দেখেছে, আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেছে। চরিত্রটা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং ছিল, একটু উনিশ-বিশ হলেই ভালগার লাগত। যাদের সঙ্গে আমার কখনো কাজও হয়নি, তারাও ইতিবাচক কথা বলেছে। সব মিলিয়ে বলব, অসাধারণ অভিজ্ঞতা। নাটকে তো আমরা দুই দিন আগে চিত্রনাট্য পাই। কিন্তু এই ওয়েব সিরিজে কাজের আগে প্রপারলি চিত্রনাট্য পাওয়া, মহড়া, অভিনয় নিয়ে আলোচনা আমাকে মুগ্ধ করে। আমি এই কাজটা করে অনেক অনুপ্রাণিত হয়েছি।

প্রশ্ন :

বছর দুয়েক ধরে শোনা যাচ্ছে, ‘চলচ্চিত্রে মাহি’। কোনো চলচ্চিত্রে আদৌ আপনাকে দেখা যাবে কি?

বাংলাদেশে কেউ সিনেমায় চলে গেলে নাটকে অভিনয় তো করে না। একটা মুভির অফার পেলাম, আর চলে গেলাম, পরে আর কিছুই ভাবলাম না। ফিন্যান্সিয়াল ব্যাপারটাও তো দেখতে হবে। আমি আগে চাকরি করতাম, অভিনয়ের কারণে চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই সিনেমায় কাজ শুরু করব। কারণ, সিনেমা একবার শুরু করলে আর ফিরে আসব না।