প্রথম আলো :
শুরুতে নতুন সিনেমার খবর জানতে চাই।
রাশেদ মামুন অপু: নতুন সিনেমা নিয়ে কথাবার্তা হলো। সিনেমাটি নিয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না। নতুন সিনেমার চেয়ে এত দিন আমি ‘দাগি’ সিনেমার শুটিংয়ের পরিকল্পনা নিয়ে বেশি ব্যস্ত ছিলাম। এখানেও দর্শক আমাকে খল চরিত্রে দেখবেন।
প্রথম আলো :
এখন কোন কাজগুলো নিয়ে ভক্তরা কথা বলছেন?
রাশেদ মামুন অপু: প্রথমেই বলব ‘অন্ধকারের গান’ ওয়েব সিনেমার কথা। বখে যাওয়া ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেছি। অন্যদিকে ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে ‘নীলপদ্ম’ সিনেমার প্রিমিয়ার হয়েছে। দুটি কাজেই আমার চরিত্রের ব্যাপ্তি কম ছিল, কিন্তু দর্শক কাজগুলো দেখে ভালো লাগার কথা বলেছেন। কয়েকটি চরিত্রের মধ্যে যখন আলাদা করে একটি চরিত্র নিয়ে দর্শক কথা বলেন, তখন ভালো লাগে।
একাধিক চরিত্রের মধ্যে নিজেকে বের করে আনা কঠিন মনে হয় না?
রাশেদ মামুন অপু: এটা অনেক চ্যালেঞ্জিং। আমার তো নাটক করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছি। সেখান থেকে এই স্কিল ডেভেলপ করেছে। যে কারণে এখন লিড বা পার্শ্ব—যেকোনো চরিত্রে সুইচ করা কঠিন মনে হয় না। অভিনয়ের জায়গা থাকলে যেকোনো চরিত্র নিয়েই খুশি। কিন্তু একটাই কথা, চরিত্রের জন্য সময় দিতে হবে। সেই সময়ই পাই না।
প্রথম আলো :
নিয়মিত খল চরিত্রে অভিনয় করছেন। কাউকে প্রতিযোগী মনে করেন?
রাশেদ মামুন অপু: প্রশ্নই আসে না। আমি কাউকে প্রতিযোগী মনে করি না। আমার সঙ্গে কে অভিনয় করছেন, কাকে ছাড়িয়ে যেতে হবে, এগিয়ে যেতে হবে, চিত্রনাট্যে কার গুরুত্ব কমবেশি—এসব চিন্তা করি না। অন্যকে নিয়ে ভাবলে অভিনয়টা হবে না। নিজের অভিনয় নিয়েই ভাবি।
শোনা যায়, অনেক সময় শুট করেও পরে দৃশ্য কেটে বাদ দেওয়া হয়। এমন অভিজ্ঞতা আছে?
রাশেদ মামুন অপু: সে রকম কিছু খুব একটা হয়নি। তবে অভিনীত সিনেমা মুক্তির পর অনেক কারণেই কষ্ট পেয়েছি। এই যেমন সাম্প্রতিক সময়ে শেষ বাজির একটি চরিত্র ছিল আমার পছন্দের। কিন্তু সিনেমাটি এমন একটা সময়ে মুক্তি পেল, যখন রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দর্শক হলমুখী হচ্ছিলেন না। তা ছাড়া সিনেমাটি প্রচারণা ছাড়াই মুক্তি পায়। চরিত্রটি নিয়ে দর্শকদের কাছে যেতে পারলাম না, এটা আমাকে বেশ কষ্ট দিয়েছে।
প্রথম আলো :
নাটক দিয়ে আপনার ক্যারিয়ার শুরু, এখন নাটকে কালেভদ্রে দেখা যায়...
রাশেদ মামুন অপু: ব্যাটে-বলে মেলে না। হয়তো সিনেমার কারণে শিডিউল দিতে পারি না। তারপরও নাটক করব। তবে ভালো চরিত্র হতে হবে। এখন শুধু টাকার জন্য নাম লেখাই না। আমার সেই দিন আর নেই। আমি এখন অনেক বেশি সচেতন। এখন আমি ‘না’ বলা শিখে গেছি। এ জন্য দর্শকদের কাছে কৃতজ্ঞতা। তাঁরা অল্প সময়ে সিনেমায় আমাকে গ্রহণ করবেন, ভাবিনি।
‘না’ বলা কি কঠিন?
রাশেদ মামুন অপু: ‘না’ বলা শিখতে পারাটা খুবই কঠিন। একসময় টাকার জন্য দিনের পর দিন একই রকম চরিত্রে, বৈচিত্র্যহীন চরিত্রে অভিনয় করেছি। কিন্তু করোনার পর সেই পথে আর হাঁটিনি। এটা ভক্তদের ভালোবাসা। এখন দু-তিন দিন পরপর না বলে দিই। করোনার পর এটা আমি শিখেছি। কাজ হাতে না থাকলেও এখন আমি না করে দেব। টাকার জন্য আর নয়। আমার প্রতি দর্শকদের যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণ করতে চাই। এটাই আমার শক্তি।
প্রথম আলো :
কখনো শুনেছেন, আপনাকে নিয়ে গল্প লেখা হচ্ছে?
রাশেদ মামুন অপু: চার বছর ধরে এ কথা বহুবার শুনেছি। এখন নিয়মিত শুনি। এটা অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমাকে দায়িত্বশীলতার কথা মনে করিয়ে দেয়। প্রথম অনন্য মামুন আমাকে বলেছিল, কসাই চরিত্র আমার জন্য লিখেছে। এখন প্রায়ই এ কথা শুনি। সব গল্পে হয়তো অভিনয়ের সুযোগ হয় না। তবে যাঁরা আমাকে নিয়ে ভাবেন, তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞতা। আমাকে নিয়ে কেউ ভাবলে অনেক বেশি সম্মান বোধ করি।
বর্তমানে কী নিয়ে ব্যস্ততা?
রাশেদ মামুন অপু: ‘দাগি’র শুটিং শেষ হলো। এ ছাড়া ঈদের সিনেমা ‘জংলি’, ‘আতর বিবি লেন’, ‘রাইটার’-এর প্রচারণায় ব্যস্ত থাকতে হবে। সব মিলিয়ে এ বছর ১১টি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। কিছু সিনেমার ডাবিং করতে হবে। বেশির ভাগ চরিত্রেই দর্শক আমাকে খল অভিনেতা হিসেবে দেখবেন।