‘বাবা তুমি আমার বেঁচে থাকার কারণ’ গানটি শোনার পর আব্বু-আম্মু দুজনেই কাঁদছিল: তানভীর ইভান
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে প্রথমবার মনোনয়ন পেয়েই সেরা গায়ক নির্বাচিত হন তানভীর ইভান। তাঁর গাওয়া ‘বাবা তুমি’ গানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচিত। এর বাইরে গানবিষয়ক বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তরুণ এই গায়কের একাধিক গান শ্রোতাপ্রিয় হয়েছে। শনিবার বিকেলে তাঁর সঙ্গে কথা বলল ‘বিনোদন’
প্রশ্ন :
ঈদে নতুন কী গান আসছে?
নতুন বেশ কয়েকটি গান তৈরি করছি। কবে প্রকাশিত হবে এখনই বলতে পারছি না। নিজের মতো করেই গান বানিয়ে যাচ্ছি। যখন মন চাইবে, প্রকাশ করব। এ বছরে আরও চার–পাঁচটা গান প্রকাশের চিন্তাভাবনা আছে। এসব গানের কোনোটি ভারতের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকেও আসবে। বাংলাদেশের কয়েকটি টেলিফিল্মে গান গাওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত কথা হয়েছে। একটা রক। অন্যটা রোমান্টিক।
প্রশ্ন :
গান ছাড়া অন্য কিছু করছেন?
একদমই না। শুধুই সংগীত নিয়ে পড়ে আছি।
প্রশ্ন :
আপনার গানের সংখ্যা অনেক কম।
প্রতি মাসে একটা একটা করে যদি গান প্রকাশ করি, তাহলে শ্রোতারা বিরক্ত হয়ে যাবে। আরেকটা কথা হচ্ছে, মনের মতো গানের প্রস্তাব পাই না, যেমনটা আমি খুঁজি। তা ছাড়া সম্মানীও ব্যাটে–বলে মেলে না। যার কারণে সব কাজ নেওয়া হয় না। অল্প কাজ করলে এক অর্থে বড় লাভও আছে, ভক্তরা দীর্ঘদিন পর একটা ভালো গান পেলে পেছনের চার–পাঁচ মাসের সব কষ্ট ভুলে যান, তখন আমারও বেশ ভালো লাগে। সব বিরতি পুষিয়ে যায়।
প্রশ্ন :
ভক্তরা আপনার কাছ কোন ধরনের গান প্রত্যাশা করেন?
শুরু থেকে আমি স্যাড গানই গাই। আমার ভক্তরাও তেমন গানই শুনতে চায়। এবার একটু রক টাইপের গান গাইবার চেষ্টা করছি। দেখতে চাই, ভক্তদের প্রতিক্রিয়া কী হয়। তবে যা–ই করি না কেন, আমার কাছ থেকে স্যাড টাইপের গানই চায় সব সময়। আমিও আমার কণ্ঠে এই ধাঁচের গান নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেতে চাই।
প্রশ্ন :
আপনার কণ্ঠে স্যাড ধাঁচের গানই বেশি শোনা যায় কেন? কোনো কারণ আছে নাকি?
প্রায়ই আমাকে এ ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। বাস্তবে আমি ভীষণ মজার মানুষ। আনন্দে থাকতেই ভালোবাসি। স্যাড ধাঁচের গানকে বেছে নেওয়ার কারণ, ছোটবেলা থেকে এ ধরনের গানই বেশি শোনা হতো। স্যাড ধাঁচের সুরের সঙ্গে আন্ডারস্ট্যানডেবল লিরিকস থাকলে ভালোই লাগে। এরপর আমি নিজেও স্যাড গান লেখা শুরু করলাম। দেখলাম, আমার কণ্ঠেও এসব গান ভালোই লাগছে। সুর দিলে সুন্দর হচ্ছে। এ কারণে কাজ করা। সত্যি বলতে, বাচ্চাকালে একটু দুঃখবিলাসী ছিলাম। এখন আর এসব নেই। আস্তে আস্তে বড় হচ্ছি আর বুঝতেছি, ওটা বাচ্চাকাল ছিল। (হাসি)
প্রশ্ন :
রোজার ঈদে গাওয়া আপনার একটা গান ছিল ‘তোমাকে চাই’
পিরান খানের সুরে এটি একটি নাটকের জন্য গেয়েছিলাম। আমার সঙ্গে পিরানের বোঝাপড়া খুব ভালো। শুরু থেকেই আমরা একসঙ্গে কাজ করি। ওর বাসা আমাদের চট্টগ্রামের মেহেদীবাগে। চাকরি করে, পাশাপাশি মিউজিক করে।
প্রশ্ন :
পিরানের সুরে আপনার গাওয়া ‘বাবা তুমি’ গানটা তো বেশ আলোচিত।
গানটা প্রকাশের পর অবিশ্বাস্য ও অদ্ভুত রকমের সাড়া পেয়েছিলাম। এ গান খুব আবেগ থেকে করেছিলাম। গানটি শোনার পর আব্বু–আম্মু দুজনেই কাঁদছিল। আমার গাওয়া গান আব্বু–আম্মুকে স্পর্শ করেছে, এতেই আমি খুশি। ভক্তরা তো সব সময় আমার গানে বাহবা দিয়েছে। ভালোবাসা দিয়েছে। আমি কৃতজ্ঞ ওদের সবার কাছে।
প্রশ্ন :
গানটি তৈরির সময় ভেবেছিলেন এতটা সাড়া ফেলবে?
আপন নাটকে গানটা ব্যাবহার করা হয়। পরিচালক অমি ভাই পিরানকে ফোন করে বলেন, বাবাকে নিয়ে একটা গান লাগবে। পরিস্থিতি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর আমরা বসে গানটা তৈরি করি। তানজিব সৌরভের লেখা কথায় সুর করেন পিরান। মেহেদীবাগের স্টুডিওতে গানটা তৈরি করি। সাধারণত আমি গান রিলিজের আগে কাউকে শুনাই না। গান তৈরির সময় লক্ষ্য থাকে, গানটা শুনতে সুন্দর হতে হবে। আন্ডারস্ট্যান্ডিং হতে হবে। ভক্তদের যাতে পছন্দ হয়, এটাও মাথায় থাকে। রেকর্ডিংয়ের পর গান শুনেই বুঝেছিলাম, মুক্তির পর ভালো সাড়া ফেলবে। তবে এতটা ভাবিনি।