‘অভিনয় শিখে বাসায় বসে থাকলে তো হবে না’

সরকারি অনুদানে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ গত শুক্রবার ১০টি হলে মুক্তি পেয়েছে। ইনামুল হকের গল্পে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন তাঁর মেয়ে হৃদি হক। এতে ‘বিন্তী’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন সানজিদা প্রীতি। চলচ্চিত্র, মঞ্চসহ নানা প্রসঙ্গে গত রোববার তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে ‘বিনোদন’।
সানজিদা প্রীতি
শেখ মেহেদী মোরশেদ

প্রশ্ন :

দর্শকের প্রতিক্রিয়া কেমন পাচ্ছেন?

মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা হিসেবে দর্শকের যে সাড়া পাচ্ছি, ভালো লাগছে। ছবির গল্প, নির্মাণ, মিউজিক, লোকেশন, শিল্পীদের অভিনয়—সবই দর্শক পছন্দ করছেন। আমি যে চরিত্রে অভিনয় করেছি, সেই ‘বিন্তী’ চরিত্র নিয়েও দর্শকের আলাদা আগ্রহ দেখেছি। সবার কাছে কৃতজ্ঞ, সবার প্রতি ভালোবাসা।

প্রশ্ন :

হলে বসে ‘বিন্তী’কে যখন দেখছিলেন, চরিত্রটিকে কতটুকু ধারণ করতে পেরেছেন বলে মনে হয়েছে?

বড় পর্দায় এটি আমার দ্বিতীয় কাজ। এর আগে ‘মৃধা বনাম মৃধা’ ছবিতে কাজ করেছিলাম। যখন নিজের কাজ পর্দায় দেখি, একটু ক্রিটিক্যালি দেখি। এটি আমার স্বভাব বলতে পারেন। আর নিজের কথা নিজে বললে তো হবে না। দর্শকই ‘বিন্তী’কে নিয়ে মন্তব্য করবেন। ছবিটি দেখতে বসে দর্শকের মধ্যে যে আবেগ এবং আপ্লুত হওয়ার ব্যাপার দেখেছি, এটাই বড় প্রাপ্তি। যাঁরা বয়োজ্যেষ্ঠ, মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, দেখেছেন; তাঁদের কাছে এটি আবেগের জায়গা হতেই পারে। কিন্তু এ প্রজন্মের যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি, তাঁদেরও ছবিটি নিয়ে আগ্রহ দেখলাম; এটি বেশি ভালো লাগছে।

আরও পড়ুন

প্রশ্ন :

মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘বিন্তী’ কলেজপড়ুয়া মেয়ে। ছবিতে সেই সময়ের চরিত্র তুলে আনার জন্য নিজের প্রস্তুতি কতটুকু ছিল?

মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ‘বিন্তী’ চরিত্রটির সঙ্গে আমি পরিচিত নই। নিজের মধ্যে ‘বিন্তী’কে ধারণ করতে সময় তো লেগেছেই। একটা লম্বা সময় ধরে প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। লোকেশনে বসে কস্টিউমসহ অনুশীলন করেছি। ‘বিন্তী’ চরিত্রটি সহজ ছিল না, কিন্তু অভিনয় করতে আনন্দ ছিল। লোকেশনে বিরাট কর্মযজ্ঞের মধ্যে আমরা মজা করে, আনন্দ নিয়ে কাজ করেছি।

সানজিদা প্রীতি ও সজল। ছবি : পরিচালকের সৌজন্যে

প্রশ্ন :

চরিত্রটি নিয়ে কতটুকু আত্মবিশ্বাসী ছিলেন?

কাজের সময় কোনো শিল্পী একা তো সবকিছু ফুটিয়ে তুলতে পারেন না। সেটি এই ছবিতে আমার বেলায়ও হয়েছে। নিজের একটা আত্মবিশ্বাস ছিল, আমার টিম চরিত্রের জার্নিতে নিয়ে আমাকে যাবে। সেটি তারা পেরেছে। ২০২১ সালে শুটিংয়ে প্রথম দিন যখন সেটে ঢুকলাম, মনেই হয়নি এটি ২০২১ সাল। মনে হয়েছে ১৯৭১ সালের দিনগুলোয় আছি। তখনই আমার কাজটির প্রতি আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল।

সানজিদা প্রীতি l ছবি: প্রথম আলো

প্রশ্ন :

মঞ্চ, ছোট পর্দায় শুরু অনেক আগে, কিন্তু বড় পর্দায় শুরুটা এত পরে কেন?

এটি নিয়ে আমার মাত্র দুটি কাজ হলো বড় পর্দায়। কাজ তো নিজের হাতে থাকে না। আমার চেষ্টা অভিনয় নিয়ে। অভিনয় শিখে বাসায় বসে থাকলে তো হবে না। আবার কাজের ক্ষেত্রে ভাগ্যের লিখনও থাকে। এত দিন চেষ্টা করেছি, ব্যাটে-বলে মেলেনি, কাজ করা হয়নি।

প্রশ্ন :

আপনার সমসাময়িক অনেকেই মঞ্চে, টেলিভিশনে নির্দেশনা দিচ্ছেন। আপনি কবে শুরু করবেন?

এখনো ইচ্ছা নেই। কারণ, নিজেকে এখনো অতটা পাকা মনে করছি না যে অন্যকে নির্দেশনা দিয়ে কাজ করাব। আমি মনে করি, এখনো পরিচালনা নিয়ে ভাবার সময় হয়নি। হলে অবশ্যই এখনই ভাবতাম।

প্রশ্ন :

মঞ্চে কী কী কাজ করছেন?

প্রাচ্যনাট থেকে ‘আগুনযাত্রা’ ও ‘অচলায়তন’ নামে নতুন দুটি নাটক মঞ্চে এসেছে। দুটিতেই অভিনয় করছি। চার মাস ধরে এই দুটি নাটকই বেশি মঞ্চস্থ হচ্ছে। তা ছাড়া আগের পুরোনো নাটকগুলোও ফাঁকে ফাঁকে মঞ্চস্থ হয়।