বিয়ের তিন দিনের মধ্যে দেশ ছেড়েছি

ইশানাছবি : শিল্পীর সৌজন্যে
করোনার আগে সর্বশেষ ‘মন দরজা’ নাটকে অভিনয় করেন অভিনয়শিল্পী ইশানা। এরপর আর নতুন কাজ করা হয়নি। এখন থিতু হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে থেকেই সুখবর দিলেন তিনি। জানালেন, মা হতে চলেছেন। কথা হলো তাঁর সঙ্গে

প্রশ্ন :

অভিনন্দন, মা হতে চলেছেন। কেমন কাটছে দিনগুলো?

ধন্যবাদ। আমার সঙ্গে নতুন একটি জীবন বেড়ে উঠছে। এই অনুভূতি বলে বোঝানো কঠিন। কিছুটা দুশ্চিন্তাও আছে। তবে সব মিলিয়ে ভালোই যাচ্ছে দিনগুলো। মানসিক কোনো চাপ নিচ্ছি না। সবকিছু ঠিক আছে, নিজেকে প্রচুর সময় দিচ্ছি। আমি এখন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ফেব্রুয়ারির জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। এ মুহূর্তে নিজেকে ব্যস্ত রাখছি।

স্বামী সারেফ চৌধুরীর সঙ্গে ইশানা
সারেফ চৌধুরী

প্রশ্ন :

হঠাৎ ফেসবুকে বেবিবাম্পের ছবি পোস্ট করলেন?

সত্যি বলতে আমরা বুঝতেই পারিনি, একটি ছবি পোস্ট করলে কেউ বুঝতে পারবেন। কারণ, আমরা সুখবরটি এখনই জানাতে চাইনি। ইচ্ছা ছিল সন্তান জন্মের পর সবাইকে জানাব। এখন তো সবাই জেনে গেছে। সহকর্মীসহ যাঁরা জানতেন না তাঁরা ফোন করছেন।

প্রশ্ন :

এ সময়ে দেশের কোনো কিছুর কথা মনে পড়ছে?

দেশে তো মেয়েরা মা হতে চললে অনেক ধরনের খাবার খায়। দেশের কিছু খাবার মিস করছি। এ সময়টায় মায়ের হাতের রান্না বেশি মিস করছি। মাঝে ইচ্ছা হয়েছিল খাওয়ার জন্য দেশে যাব। কিন্তু দেশে তখন ডেঙ্গুর ভয়াবহতার খবর দেখলাম, তখন আমার হাজব্যান্ড ও ডাক্তার দেশে যাওয়ায় সায় দেয়নি। মাঝে মাঝে মন খারাপ হয়। তবে এখানেও সুস্থ থাকার জন্য সব ধরনের খাবার খাচ্ছি। আমার হাজব্যান্ড, কাজিন বন্ধু রয়েছে সবাই সাপোর্ট দিচ্ছে।

ইশানা
ছবি : শিল্পীর সৌজন্য

প্রশ্ন :

হঠাৎ অভিনয় থেকে দূরে সরলেন কেন?

আমি এখনো মনেপ্রাণে অভিনেত্রী। অভিনয়ের প্রতি টান আগের মতোই আছে। এর আগে অস্ট্রেলিয়ায় সর্বশেষ শুটিং করেছিলাম। করোনার আগে একটি ধারাবাহিকের শুটিং করার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে লকডাউন শুরু হওয়ায় আর করা যায়নি। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ করেই দেড় সপ্তাহের জন্য দেশে গিয়েছিলাম। সেটা জানার পরে কয়েকজন পরিচালক আমাকে বলেছিলেন, ঈদ নাটকের শুটিং করতে। কিন্তু এত অল্প সময়ে ইচ্ছা থাকলেও শুটিং করা হয়নি। তাঁরা যে আমাকে মনে রেখেছেন, কাজে ডেকেছেন, এটা আমার জন্য আশীর্বাদই বলা যায়।

প্রশ্ন :

বিয়ে করে হঠাৎই দেশ ছাড়লেন, এত তাড়াহুড়ার কারণ কী?

সময়ের অভাবে কাউকে জানাতে পারিনি। তাড়াহুড়োর মধ্যে বিয়েটা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে কীভাবে আমার বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে নিজেই জানি না (হাসি)। বিয়ের তিন দিনের মধ্যে দেশ ছেড়েছি। কারণ, আমার শ্বশুর অসুস্থ ছিলেন। অন্যদিকে আমার অস্ট্রেলিয়ার ট্যুরিস্ট ভিসা ছিল। সব মিলিয়ে ২০১৯ সালের দিকে দ্রুত চলে আসা। পরে করোনার কারণে দেশে যাওয়া কম হয়েছে। এর মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর যাওয়া হয়নি। সংসার, কাজ নিয়েই ব্যস্ততা।

প্রশ্ন :

আপনাদের কি ঘরোয়াভাবে বিয়ে হয়েছিল নাকি প্রেমের সম্পর্ক ছিল?

আমাদের প্রেমের বিয়ে। সত্য বলতে আমি যখন ২০০৯ সালের দিকে ক্যারিয়ার শুরু করি তখন সারেফকে (সারেফ চৌধুরী) মডেল হিসেবে আমার পছন্দ ছিল। সে বেশ কিছু ব্যান্ড ও গুণী পরিচালকের সঙ্গে কাজ করছিল। তখনো আমাদের পরিচয় ছিল না। ২০১৭ সালের দিকে তাঁর সঙ্গে পরিচয়। তখন বললাম মডেল হিসেবে আমি আপনার ভক্ত। তারপর থেকে কথা হতো। দুজনের বোঝাপড়া ভালো ছিল। ২০১৯ সালে হঠাৎ একদিন সারেফ আমার পরিবারের সদস্যদের কাছে বিয়ের কথা বলল, তিন দিনের মধ্যে আমাদের বিয়ে। তখন শুধু বুঝলাম আমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। আমরা দুজনই এখানে চাকরি করি। সবার দোয়ায় আমরা ভালো আছি।