‘মা লো মা’ গানটি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে...
প্রীতম হাসান : হুম, প্রকাশের মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে এত এত দর্শক দেখেছেন গানটি, ভাবনার বাইরে। এত অল্প সময়ে কোক স্টুডিওর ইউটিউব চ্যানেলে দর্শক ভিউ ১ কোটি ৩০ লাখের কাছাকাছি। ভাবা যায়? দেশি ট্রেন্ডিংয়ে ১ নম্বরে আছে। গ্লোবাল ট্রেন্ডিংয়েও রয়েছে গানটি। আসলে গানটির সঙ্গে সম্পর্কিত সবারই কমবেশি অবদান আছে এর সফলতার পেছনে।
প্রথম আলো :
আপনার মতে গানটি শ্রোতা-দর্শকের পছন্দ হওয়ার কারণ কী?
প্রীতম হাসান : এটি একটি ফোক গান। গ্রামবাংলার বহু বছরের প্রচলিত গান এটি, এ গানে মাটির গন্ধ আছে। তাই দ্রুত সাড়া মিলেছে। বাঙালিদের মধ্যে শিকড়ের টানটা বেশি কাজ করে। এটি গ্রামবাংলার মানুষের কাছে বেশি পরিচিত গান। কালের বিবর্তনে এসব গান হারিয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু নতুনভাবে, নতুন আঙ্গিকে সবার সামনে আনার কারণে দর্শকেরা রিকানেক্ট করেছেন গানটিতে। গানটি লুফে নিয়েছেন তাঁরা। শহর, গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে গেছে গানটি।
কিছুদিন আগে আপনার সুর ও সংগীতে নবীন গায়ক সাম্মামের কণ্ঠে ‘রাত কাটে নির্ঘুম’ গানটি প্রকাশ পেয়েছে। কেমন সাড়া মিলেছে?
প্রীতম হাসান : গানটি বেশ আগেই করেছি। ঈদের পরপর প্রকাশিত হয়েছে। এটি গেয়েছেন সাম্মাম। ছেলেটির গানের বিষয়ে বেশ ভালো মেধা আছে। সে কারণেই তার কাজটি করে দিয়েছি। নতুন শিল্পীর গান হিসেবে খারাপ নয়। ইতিবাচক সাড়া আছে গানটির।
প্রথম আলো :
‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’ ওয়েব ফিল্মটি মুক্তির পর আলোচনায় ছিল...
প্রীতম হাসান : হ্যাঁ, এখনো সাড়া পাচ্ছি। কাজটি থেকে এত এত সাড়া পাব, বুঝতে পারিনি। বেশ আগেই মুক্তি পেয়েছে। অথচ এখনো বাসা থেকে বের হলে পরিচিত, অপরিচিত অনেকেই কাজটি নিয়ে কথা বলেন। আমাকে শুভেচ্ছা জানান। এতে করে বুঝতে পারি, এখনো কাজটি দেখছেন দর্শকেরা।
ওটিটিতে এর আগেও ‘আলাল’, ‘পেট কাটা ষ’সহ বেশ কয়েকটি কাজ করেছেন। কোন কাজটিকে এগিয়ে রাখবেন?
প্রীতম হাসান : কাজগুলো করে নিজের ভালো লাগা, দর্শকের সাড়া—সব মিলে ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’ আমার কাছে ওয়ান অব দ্য বেস্ট কাজ মনে হয়। অবশ্য এর পুরো কৃতিত্বই পরিচালক শিহাব শাহীন ভাইয়ের। তিনি আমার কাছ থেকে অভিনয়টা বের করে নিয়েছেন। আমার কাছে গানটা যতটা সহজ, তার চেয়ে অভিনয়টা তত কঠিন। আমি তো নিয়মিত অভিনয় করি না। ফলে আমার চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে পরিচালকেরই বেশি অবদান।
প্রথম আলো :
অনেকে বলেন, কাজটি দেখে গায়ক প্রীতম মনে হয়নি, অভিনেতা প্রীতম মনে হয়েছে...
প্রীতম হাসান : এটিও বলা যায় আমার জন্য আশীর্বাদ। কারণ, আমি তো অভিনেতা নই, কিন্তু যে প্রত্যাশা নিয়ে কাজটি করেছি, প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছি দর্শকের। কারণ, আমরা যা কিছুই করি, সবই দর্শকের জন্য। তবে কাজটি করতে প্রথমে ভয়ে ছিলাম। আস্থা পেয়েছি শিহাব ভাইয়ের মতো পরিচালকের কারণে। সব মিলে কাজটি করে আরাম পেয়েছি, দর্শককেও চোখের আরাম দিতে পেরেছি। এতটুকুই।
অভিনয়ে নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছা আছে কি?
প্রীতম হাসান : কয়েক বছর ধরে তো টুকটাক অভিনয় করি। এখন মনে হচ্ছে, অভিনয়টা মজা করে করা যেতেই পারে। কারণ, অভিনয় এখন উপভোগ করছি। কাছের মানুষ দূরে থুইয়া আলোচিত হওয়ার পর বেশ কয়েকটি চিত্রনাট্য হাতে এসেছিল কিন্তু পছন্দ হয়নি, করিনি। ভালো গল্প, চরিত্র ও পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে চাই।
প্রথম আলো :
অভিনয় করার ভাবনাটি কখন মাথায় আসে?
প্রীতম হাসান : ২০১৬ সালের দিকে অভিনয় করার ইচ্ছা মাথায় আসে। ওই সময় অংশু (তানিম রহমান) ভাইয়ের পরিচালনায় বেশ কয়েকটি মিউজিক ভিডিও করেছি। অংশু ভাইয়ের ভিডিও অন্য রকমের হয়। গল্পনির্ভর হয়। অনেকটা সিনেমার আদলে করেন। তাঁর মিউজিক ভিডিওতে শিল্পী, মডেলকে একধরনের অ্যাক্টিং করা লাগে। সেই সময় তাঁর সঙ্গে কাজগুলো করতে মজা পেতাম। ওই সময়ই অভিনয় করার ভাবনাটা মাথায় আসে।
প্রথম আলো :
নতুন কাজের খবর কী?
প্রীতম হাসান : নতুন কাজের মধ্যে কোক স্টুডিওর একটি গান প্রস্তুত করেছি। কয়েক দিনের মধ্যে মুক্তি পাবে। এ ছাড়া নতুন কাজের পরিকল্পনা চলছে। কিছু প্রজেক্ট হাতে আছে। সেগুলো নিয়ে কাজ শুরু করব। আমি ও শেহতাজ দেশের বাইরে ছিলাম। মাত্র দেশে ফিরেছি।