শুভ ভাই আমার ক্রাশ...

২০১২ সালে চ্যানেল আইয়ের রিয়েলিটি শো ‘সেরা নাচিয়ে’তে প্রথম রানারআপ হন মন্দিরা চক্রবর্তী। এর পর থেকে নাচ ও অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত তিনি। ছোট পর্দার পর ‘কাজলরেখা’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক। ঈদুল আজহায় মুক্তি পেয়েছে তাঁর দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘নীলচক্র’। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন মনজুর কাদের

প্রথম আলো:

‘নীলচক্র’ মুক্তির দ্বিতীয় সপ্তাহ চলছে, কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

মন্দিরা চক্রবর্তী : দারুণ সাড়া পাচ্ছি। অন্য রকম একটা সময় কাটছে। ঈদের দিন থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সিনেমা হলে ছুটে যাচ্ছি। ছবিটি নিয়ে কথা বলছি। অনেকে আমাকে ছুঁয়েও দেখছেন। এসব অনূভূতি স্বপ্নের মতো। এখন ছবিটি মাল্টিপ্লেক্সে চলছে, খুব শিগগির সিঙ্গেল স্ক্রিনেও মুক্তি দেওয়া হবে। এরপর দেশের বাইরে মুক্তি পাবে। আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছে এই দৃশ্য দেখে, যেকোনো বয়সের মানুষ আমাদের সিনেমা দেখতে যাচ্ছেন, তাঁরা নিজেদের ভালো লাগার কথাও বলছেন।

প্রথম আলো :

‘কাজলরেখা’র এক বছরের বেশি সময় পর আপনার সিনেমা মুক্তি পেল। এ সময় কী করেছেন?

মন্দিরা চক্রবর্তী : ‘কাজলরেখা’র মতো ছবিতে অভিনয় আমার চিন্তাভাবনায়ও ব্যাপক বদল এনে দেয়। এরপর কয়েকটি ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু বুঝেশুনে বাছাই করতে হয়েছে। কাজলরেখা মুক্তির মাস চারেক আগে শুরু করি নীলচক্রর কাজ। কয়েকটি কাজ নিয়ে এখন কথা হচ্ছে। চলতি বছর হয়তো আরও একটি সিনেমায় আমাকে দেখা যাবে। মাস দুয়েকের মধ্যে শুটিং শুরু হবে।

মন্দিরা চক্রবর্তী
প্রথম আলো:

আরিফিন শুভর সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল?

মন্দিরা চক্রবর্তী : খুব ভালো। ভীষণ আন্তরিক মানুষ। একই সঙ্গে খুবই পরিশ্রমী ও সহযোগিতাপরায়ণ। তা ছাড়া শুভ ভাই আমার ক্রাশ। যেহেতু তিনি আমার পছন্দের মানুষ, তাই শুটিংয়ের শুরুতে একটু নার্ভাস ছিলাম। ভাবছিলাম, অভিনয়ে পেরে উঠব কি না। দিন শেষে অভিনয়ের প্রশংসা প্রচুর পেয়েছি। ছবি মুক্তির পর দর্শক অভিনয়ের জন্য আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছেন, তা মাথায় তুলে রাখতে চাই।

প্রথম আলো:

ছবিতে আপনি নাচের শিক্ষক। আপনি তো নিজেও নাচেন...

মন্দিরা চক্রবর্তী : নাচের মেয়ে হওয়াটা আমার জন্য দারুণ সহায়ক হয়েছে। নাচ না জানলে এই চরিত্রটা হয়তো করতেই পারতাম না বা পরিচালক আমাকে হয়তো কাস্ট–ই করতেন না। যেহেতু নাচের শিক্ষক হিসেবে দেখানো হয়েছে, আমিও নিজে চরিত্রটি ঠিকঠাক ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি। আমি নিজেও নাচের শিক্ষকতা করেছি, তাই রাইমা চরিত্রে সংযোগ স্থাপন করাটা অনেক সহজ হয়েছে। আমার কাছে কঠিন বলে মনে হয়নি।

আরিফিন শুভ ও মন্দিরা চক্রবর্তী
ফেসবুক থেকে
প্রথম আলো:

অনেক দর্শক-সমালোচক মনে করেন, আপনার অভিনয়ে এখনো অনেক উন্নতির জায়গা আছে? সমালোচনা কীভাবে নেন?

মন্দিরা চক্রবর্তী : পৃথিবীতে কোনো মানুষই শতভাগ পারফেক্ট নন। প্রত্যেকের একটা দিক বেশি ভালো তো অন্যদিক তুলনামূলক কম ভালো। দর্শক আলোচনা-সমালোচনা দুটোই করবেন। আমি কখনো ভেবে নেব না, আমাকে পৃথিবীর সবাই পছন্দ করবেন, ভালোবাসবেন, প্রশংসা করবেন। এটা কখনোই কারও পক্ষে হয়ে ওঠা সম্ভব নয়। বড় পর্দায় আমি একদমই নতুন, শেখার এখনো প্রচুর বাকি আছে। প্রতিনিয়ত শিখছি। শিখতে চাই আরও। মাত্র দুটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। দিন শেষে যখন আমাকে কেউ বলেন, এখানে দুর্বলতা আছে, ওখানে দুর্বলতা আছে; আমি মনে করি, তাঁরা আমার ভালো চান বলে এ রকম একটা মন্তব্য করেছেন; যেন আগামী দিনে কাজটা আরও সুন্দর করে করতে পারি। সমালোচনা মানুষকে পরিশুদ্ধ করে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে। সমালোচক আসলে উপকারই করেন।

প্রথম আলো :

অভিনয়ের উন্নতির জন্য কী করতে চান?

মন্দিরা চক্রবর্তী : যতটুকু চর্চা করা উচিত, করি, করে যাব। আমাদের মিডিয়াতে যাঁরা গুণী শিল্পী, মাঝেমধ্যে তাঁদের কাছে গিয়ে কথা বলি, অনেক কিছু জানার চেষ্টা করি। আমার যেসব বিষয়ে দুর্বলতা আছে, কীভাবে তা কাটিয়ে ওঠা যায়, সে বিষয়েও তালিম নিই। যা যা করার করছি। প্রস্তুত হচ্ছি। আমি দেশ–বিদেশের সিনেমা দেখি। বই পড়ি। পছন্দের সব তারকা ও পরিচালকের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার শুনি, দেখি। কণ্ঠ নিয়ে সামনে আরেকটু কাজ করব।

প্রথম আলো:

যখন নিজের অভিনয় পর্দায় দেখেন, কেমন লাগে?

মন্দিরা চক্রবর্তী : নিজের অভিনয় যখন পর্দায় দেখি, তখন কেমন যেন লজ্জা লাগে। ভাবতে থাকি, এত মানুষ আমাকে দেখছেন, জানি না অভিনয় নিয়ে কী বলছেন, তাঁদের কেমন লাগছে? সত্যি বলতে, খুবই বিব্রত বোধ করি। আসলে অন্য রকম অনুভূতি হয়।

প্রথম আলো :

নিজে যখন সিনেমা দেখেন, পর্দায় কাউকে দেখে কি ঈর্ষা হয়? মনে হয়, ইশ্‌, ওর মতো যদি হতে পারতাম?

মন্দিরা চক্রবর্তী : মোটেও আমার ঈর্ষা হয় না। অন্যের সিনেমাও যখন দেখি, ভীষণ ভালো লাগে। জয়া (আহসান) আপাকে যতবারই পর্দায় দেখি, অনুপ্রাণিত হই, তাঁর মতো হতে চাই। ভাবতে থাকি, কীভাবে এত সুন্দর ও সাবলীলভাবে অভিনয় করেন। নিজেকে কীভাবে এত ফিটভাবে ধরে রেখেছেন, এতটা বছর ইন্ডাস্ট্রিতে দাপিয়ে কাজ করছেন। চারপাশের সবার ভালো গুণ আমি নিতে চাই। তবে এটাও বলতে চাই, নিজেকে নিয়ে এতটা ব্যস্ত থাকি, ঈর্ষা করার সময় আমার কাছে নেই।