কোনো পরিকল্পনা করে চলি না

মাশা ইসলামছবি: খালেদ সরকার

চরকির ওয়েব ফিল্ম দুই দিনের দুনিয়া চলচ্চিত্রে ‘ট্যাকা পাখি’ শিরোনামে গান গেয়ে আলোচনায় মাশা ইসলাম। সংগীতজগতে পথচলা, পরিকল্পনা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন এই তরুণ কণ্ঠশিল্পী।

প্রশ্ন:

ইউটিউবে ট্রেন্ডিংয়ে উঠে এসেছে ‘ট্যাকা পাখি’।

চারপাশ থেকে ভালো প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি। সবাই প্রশংসা করছেন, খুব ভালো লাগছে।

প্রশ্ন:

গানটির পেছনের গল্প জানতে চাই।

অনম (বিশ্বাস) ভাই গানটি লিখেছেন, সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী। ইমন ভাই আমাকে জানালেন, ভিন্ন ধরনের সুর, সাউন্ড ও মিউজিকে গানটি করতে চান। ওইভাবে ইমন ভাইয়ের সঙ্গে বসা, কাজ করা। গানটি এভাবে টার্নআউট করবে, জানতাম না।

প্রশ্ন:

ইউটিউবে গান কাভার করতে দেখা যায় আপনাকে। কোন ভাবনা থেকে ইউটিউবে চ্যানেল খুলেছিলেন?

ইউটিউবার হওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরা চাইতেন আমি যেন আমার গান প্রকাশ করি, মানুষকে শোনাই। সেভাবেই চ্যানেলটি খোলা। আমার গান কেউ পছন্দ করবেন, আমার গান কেউ শুনবেন, কখনোই ভাবিনি। এত ভালোবাসা পাই, বলে বোঝাতে পারব না। ইউটিউবের মাধ্যমে সাড়া পাওয়ার পর সিনেমায় গান করার সুযোগ পাই। ইউটিউবের মাধ্যমে সবার চোখে পড়ি। আগে বেঙ্গলি বিউটি সিনেমায় গান করেছি, সেটি ছিল প্রথম সিনেমার গান। সেই সিনেমায় দুটি গান ছিল। গানগুলো নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয়নি। এরপর টান, লেডিজ অ্যান্ড জেন্টলমেন-এর গানগুলো পছন্দ করতে থাকে মানুষ। চরকির নিঃশ্বাস-এ র‍্যাপ সং করেছি, ওয়েব সিরিজ টান-এর ‘জীবন দিলাম’ গানে কণ্ঠ দিয়ে চরকি অ্যাওয়ার্ডে মনোনয়ন পেয়েছি। সব সময় চাই, যেন ভালো কাজ করে যেতে পারি। কাজের ক্ষেত্রে আমি সৎ থাকতে চাই, সেই সততা দেখেই যেন মানুষ ভালোবাসে।

প্রশ্ন:

বিভিন্ন ভাষার গান কাভার করেন, এত ভাষা রপ্ত করলেন কী করে?

স্বাভাবিকভাবেই এসেছে। আমি নিরীক্ষা চালাতে পছন্দ করি, বিভিন্ন ভাষার গান করতে ভালো লাগে। উচ্চারণটা আমার স্বাভাবিকভাবেই আসে, এটা নিয়ে বলতে পারব না। অনেক ধরনের গান শুনি বলেও হয়তো সেসব গানের প্রভাবটাও বেশি। ওভাবে ডেলিভারিটাও খুব ন্যাচারেলি আসে।

মাশা ইসলাম
প্রশ্ন:

কার গান ভালো লাগে, গানে কাকে আদর্শ মানেন?

ছোটবেলা থেকে শাস্ত্রীয় সংগীতে আগ্রহী ছিলাম। মোহাম্মদ রফি, লতা মঙ্গেশকরের গান শুনে অনেকটাই প্রভাবিত হয়েছি। তাঁরাই আমার আদর্শ।

প্রশ্ন:

গানে আপনাকে অনুপ্রাণিত করেন কে?

সব জায়গা থেকেই অনুপ্রেরণা নেওয়ার চেষ্টা করি। চলার পথে অনেক ধরনের মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে, অনেক গুণীজনের সঙ্গে দেখা হয়েছে, যাঁদের সঙ্গে কথা বলে অনেক কিছু শিখতে পারি। বাবা আমার অন্ধভক্ত বলতে পারেন। তিনি সব সময় গানটাকে সমর্থন দিয়েছেন। আমি ভালো কিছু করলে তিনি খুব খুশি হন।

মাশা ইসলাম
প্রশ্ন:

গান নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

যেভাবে যাচ্ছি, ওভাবেই চলতে চাই। আমি কোনো পরিকল্পনা করে চলি না। ভালো কাজ করতে চাই, নিজের গান করতে চাই, মুভিতে কাজ করতে চাই। ভালো ভালো মিউজিক ডিরেক্টরের সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমি এখন পর্যন্ত যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁদের সবাইকে আমি খুব মানি। এই বয়সে এত মানুষের সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি, এত গুণীজনের সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি, এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। কাজ করতে পারছি, শিখতে পারছি, এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।

প্রশ্ন:

সামনে নতুন কোনো গান আসছে? কনসার্টে অংশ নিচ্ছেন?

সেপ্টেম্বরে ঢাকায় একটি কনসার্ট করেছি। আপাতত সামনে কনসার্ট নেই। কয়েকটি একক ইংরেজি ও বাংলা গান করছি। খুব তাড়াতাড়ি একটা গান প্রকাশ করব। অনেক বছরের জমানো গান একটা একটা করে মানুষকে শোনাতে চাই।

প্রশ্ন:

গান করা শুরু করেছিলেন কবে?

ছোটবেলা থেকে পর্দার পেছনে কাজ করেছি ভয়েজ আর্টিস্ট হিসেবে। ইংলিশ ইন অ্যাকশনের আয়োজনে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অডিও বই করেছিলাম। ওটার প্রধান শিল্পী ছিলাম। পরে সিসিমপুরে গান করি। ছায়ানটে নজরুলগীতি ও উচ্চাঙ্গসংগীত শিখেছি। আট বছর বয়সে ছায়ানটে ভর্তি হয়েছিলাম।