আমাদের পরিচালক কোনো সোশ্যাল মিডিয়াতে নেই

আজমেরী হক বাঁধন
ছবি:সংগৃহীত
কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগ আঁ সার্তে রিগায় মনোনয়ন পেয়েছে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত ছবি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন। ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করলেন এই অভিনেত্রী।

প্রশ্ন :

অভিনন্দন।

ধন্যবাদ। এটি আমার একার প্রাপ্তি নয়, ছবির পুরো টিম ও গোটা দেশের জন্য সম্মানের।

প্রশ্ন :

কবে জানতে পারলেন যে আপনাদের ছবিটি অফিসিয়ালি সিলেকশন পেয়েছে?

২৭ মে। ওই দিনই আয়োজকেরা মেইল করে জানিয়েছিলেন।

আজমেরী হক বাঁধন
পরিচালক আমাকে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ চরিত্রটিতে মিশে যেতে সাহায্য করেছেন। আমি যদি জীবনে একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি, সেটা হচ্ছে এই কাজে যোগ দেওয়া। কারণ, আমি বুঝতে পেরেছিলাম, এ রকম সুযোগ আমার জীবনে আর না–ও আসতে পারে।

প্রশ্ন :

এত বড় খবর এক সপ্তাহ লুকিয়ে রাখলেন?

এই ছবির জন্য আমি ফটোশুট করেছি, অডিশন দিয়েছি, রিহার্সাল করেছি, তারপর শুটিং। এই দীর্ঘ সময়ে ছবির খবর কাউকেই জানাইনি। ছবিটার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর থেকেই আমি ধৈর্য ধরা আয়ত্ত করেছি। ২০১৯ সালে যখন কাজটির সঙ্গে যুক্ত হই, তখন থেকেই কাজটি নিয়ে আমি কারও সঙ্গে আলোচনা করিনি। শুধু কাজটাকেই প্রাধান্য দিয়েছি। শুটিং শেষ করার পর দেড় বছর অপেক্ষা করেছি এ রকম একটি সুসংবাদের জন্য।

আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

প্রশ্ন :

অভিনয়জীবনে এত বড় একটি অর্জন কীভাবে উপভোগ করছেন?

আমি কৃতজ্ঞ ছবির টিমের প্রতি, বিশেষ করে পরিচালকের প্রতি। কৃতজ্ঞ কাস্টিং ডিরেক্টরের প্রতি, যিনি আমাকে খুঁজে বের করেছেন এই চরিত্রের জন্য। বাংলাদেশের সিনেমায় যে এভাবে অডিশন হয়, অনুশীলন হয়, সময় নিয়ে অভিনয়শিল্পীদের অবজারভেশন করা হয়—এসব ব্যাপারে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। অবশেষে দেখলাম, ছবিটি এত বড় প্রতিযোগিতায় জায়গা করে নিল। কাজটি কেবল আনন্দ নয়, স্বীকৃতিও দিতে শুরু করেছে।

যদি জিজ্ঞেস করা হয়, কেমন টিমে কাজ করেছি? বলব, বাংলাদেশের মেধাবী, প্রাণশক্তিতে ভরপুর একদল তরুণের সঙ্গে কাজ করেছি। আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না তাঁরা কীভাবে কাজ করেছেন। যাঁরা প্রচারে বিশ্বাসী নন, যাঁরা মনেই করেন না যে নিজেদের নিয়ে আলোচনার দরকার আছে। বিশ্বাস করেন, আমাদের পরিচালক কোনো সোশ্যাল মিডিয়াতে নেই।
আজমেরী হক বাঁধন

প্রশ্ন :

শুটিংয়ের আগে প্রস্তুতি কেমন ছিল?

আমি কাজটি বা চরিত্রটি করতে পারব কি না, এ জন্য প্রথমে আমাকে দুই মাস অবজারভেশনে রাখা হয়। এরপর দীর্ঘ ৯ মাস রিহার্সাল করেছি। শুটিংসহ মোট দেড় বছর সময় দিয়েছি। এই সময়ে অন্য কোনো কাজ করিনি। পুরো মনোযোগ ছিল এই কাজে। এটা আমার জীবনের এক ব্যতিক্রমী জার্নি ছিল। এভাবে আমি কাউকে কখনো কাজ করতে দেখিনি। পরিচালক আমাকে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ চরিত্রটিতে মিশে যেতে সাহায্য করেছেন। আমি যদি জীবনে একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি, সেটা হচ্ছে এই কাজে যোগ দেওয়া। কারণ, আমি বুঝতে পেরেছিলাম, এ রকম সুযোগ আমার জীবনে আর না–ও আসতে পারে। সুযোগটি আমি কাজে লাগিয়েছি। এখানে আমার যদি কিছু অবদান থাকে, সেটা আমার বিশ্বাস, আমার পরিশ্রম, আমার সময়, সঙ্গে স্যাক্রিফাইস।

প্রশ্ন :

কাজটি করার সময় কি মনে হয়েছে যে এটা বিশেষ কিছু হতে যাচ্ছে?

ওই রকমই বিশ্বাস আমার ছিল। কারণ, আমি টিম ও কাজের ওপর আস্থা রেখেছি। যদি জিজ্ঞেস করা হয়, কেমন টিমে কাজ করেছি? বলব, বাংলাদেশের মেধাবী, প্রাণশক্তিতে ভরপুর একদল তরুণের সঙ্গে কাজ করেছি। আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না তাঁরা কীভাবে কাজ করেছেন। যাঁরা প্রচারে বিশ্বাসী নন, যাঁরা মনেই করেন না যে নিজেদের নিয়ে আলোচনার দরকার আছে। বিশ্বাস করেন, আমাদের পরিচালক কোনো সোশ্যাল মিডিয়াতে নেই। আমি দুই মাস তাঁদের অবজারভেশনে ছিলাম। সহকারী পরিচালকের সঙ্গে দেখা করে কথা বলে চলে আসতাম। পরিচালকের সঙ্গে ওই দুই মাস কোনো কথা হয়নি। আমি চরিত্রটি পারব কি না, তিনি আমাকে শুধু পর্যবেক্ষণ করেছেন।

আজমেরী হক বাঁধন
ছবি:সংগৃহীত

প্রশ্ন :

এই কাজের আগে পরিচালক সম্পর্কে ধারণা ছিল?

একসময় আমি প্রচুর কাজ করতাম। কাজের পরিমাণ বেশি হওয়ায় সব পরিচালকের নামও মনে রাখতে পারতাম না। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের সঙ্গে অনেক বছর আগে একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছিলাম। তখনই তাঁর সম্পর্কে ধারণা তৈরি হয়। তা ছাড়া তাঁর আগের ছবি ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’ দেখার পর থেকে তাঁর সম্পর্কে আরও জানতে পারি। অসম্ভব ভালো একটি কাজ ছিল সেটি। তবে আমি মনে করি, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ তাঁর আগের সব কাজকে ছাপিয়ে গেছে।