এর চেয়ে ভালো অনুভূতি হতেই পারে না

টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী মেহ্‌জাবীন চৌধুরী। গত সোমবার সন্ধ্যায় যখন তাঁর সঙ্গে কথা হচ্ছিল, তখন তিনি একটি ফটোশুটে ব্যস্ত। কথা বললেন ভালোবাসা দিবসের কাজ ও অন্যান্য প্রসঙ্গে

প্রশ্ন :

শুনছি বেশির ভাগ অভিনয়শিল্পী ভালোবাসা দিবসের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। আপনার কী অবস্থা?

ভালোবাসা দিবসের পুরোনো কয়েকটি নাটক প্রচারিত হবে শুনেছি। নতুন কয়েকটি কাজ করা যায় কি না দেখছি এবং ভাবছি। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়।

মেহ্‌জাবীন চৌধুরী
কবির হোসেন

প্রশ্ন :

সম্প্রতি মেরিল–প্রথম আলো তারকা জরিপ এবং সমালোচক—দুই বিভাগে পুরস্কার পেলেন। আবারও আপনার অনুভূতি জানতে চাই।

আমার কাছে তো এর চেয়ে ভালো অনুভূতি হতেই পারে না। আগে দুবার তারকা জরিপে দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছি। অভিনয় অঙ্গনের গুণী ব্যক্তি, অভিনয়ের জন্য যাঁদের আইডল মানি, তাঁরা যখন কাজ বিচার করেন, পছন্দ করেন, নম্বর দেন—সেটা তো অনেক বড় পাওয়া। তাঁদের চোখে অভিনেত্রী হিসেবে সেরা হওয়াটা ডিফিকাল্ট। তাঁরা যে আমাকে পুরস্কারটা দিয়েছেন, এটাই অনেক বড় অর্জন। মনে মনে আমার নিজেরও ইচ্ছা ছিল, যেহেতু দুই বিভাগে প্রথমবার মনোনয়ন পেলাম, ইশ্‌, পুরস্কার যেন পাই। আর কবে দুই বিভাগে নমিনেশন পাই কি না পাই...।

প্রশ্ন :

শেষ পর্যন্ত বড় পাওয়া তো হলোই। সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন কে?

পরিবারের সবাই তো খুশি। আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে এটা দেখে, আমার প্রাপ্তিতে সহশিল্পীরা বেশি খুশি হয়েছেন। আমার বন্ধুরাও খুশি।

অভিনেত্রী মেহ্‌জাবীন চৌধুরী

প্রশ্ন :

এ ধরনের পুরস্কার পরের কাজের ক্ষেত্রে কেমন প্রভাব ফেলে?

অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছি বা কাজ করছি তো খুব বেশি দিন হচ্ছে না। ভালো কাজের ইচ্ছাটা সব সময় ছিল। সামনে কাজ কেমন করতে পারব, তা তো জানি না, তারপরও ভালো কাজ করার ইচ্ছা থাকবে। কারণ, আমি গুড কম্পিটিশনকে সব সময় অ্যাপ্রিশিয়েট করি। কারণ, এই কম্পিটিশনই যদি না থাকে জীবনে, তাহলে ভালো করার প্রচেষ্টা চলে যাবে। আমি রিলাক্স আসলে চাই না। সব সময় চাই, আমার স্ক্রিপ্ট রাইটার ও ডিরেক্টররা আমাকে চাপে ফেলুক। এমনকি ভালো অভিনয় করে আমার কো–আর্টিস্টরা আমাকে চাপে ফেলুক। দর্শকেরাও আমাকে চাপে ফেলুক। আমি ওই চাপটা নিতে চাই, যাতে আমার ভেতর থেকে আরেকটু ভালো কিছু বের হয়ে আসে।

প্রশ্ন :

এই যে এত বছর ধরে কাজ করছেন, কোন ডিরেক্টররা আপনাকে বেশি চাপে রেখেছেন?

সব সময় সব পরিচালকই চাপে রেখেছেন। তবে নাম যদি নিতেই হয়, তিনজনের নাম নিতে চাই। আশফাক নিপুণ—তাঁর প্রতিটি কাজই আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং। প্রতিটি চরিত্র নতুন মনে হয়। ভিকি জাহেদ—তাঁর প্রতিটি গল্প পড়ে আমি মুগ্ধ হই। প্রতিবার নিজেকে প্রশ্ন করি, আমি এটা পারব তো? আরেকজন মিজানুর রহমান আরিয়ান—আমার অভিনয় ক্যারিয়ারে তাঁর অন্য রকম অবদান আছে। লম্বা গ্যাপের পর আমাদের কাজ ছিল বড় ছেলে। এই নাটক আমাকে দেশের আনাচকানাচে পৌঁছে দিয়েছে। এমন কোনো মানুষ খুঁজে পাইনি, যিনি বড় ছেলে দেখেননি।

মেহ্‌জাবীন চৌধুরী।

প্রশ্ন :

কোন অভিনয়শিল্পীরা আপনাকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে রাখেন?

অনেক শিল্পী আছেন। একেবারে শুরুর দিকে আমাকে নাটকে অভিনয়ের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি ইন্সপায়ার করেছেন সজল ভাইয়া। তিনি যদি ওই সময়ে আমাকে সাপোর্ট না করতেন, ইন্সপায়ার না করতেন, তাহলে হয়তো অভিনয়ে নিয়মিত হতাম না। অভিনয়ে আমাকে নিয়মিত করার পেছনে তাঁর বড় একটি অবদান আছে। সজল ভাইয়া তখন সুপারস্টার, কিন্তু তিনি ডাউন টু আর্থ কাজ করতে না গেলে বুঝতে পারতাম না। অভিনয়ের ভিন্নধর্মী চরিত্রে কাজ করার ক্ষেত্রে ইন্সপায়ার করেছেন নিশো ভাইয়া (আফরান নিশো)। আমার অভিনয় ইমপ্রুভমেন্টের পেছনে তাঁর অবদান অনেক। কাজ বাছাই থেকে শুরু করে অভিনয়–কৌশল এবং খুঁটিনাটি বিষয় শেখানোর ক্ষেত্রে অপূর্ব ভাইয়া। তাঁর কাছেও অনেক কিছু শিখেছি।

প্রশ্ন :

২০০৯ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার নির্বাচিত হওয়ার পরপরই বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে অভিষেক হওয়ার কথা ছিল। ১৩ বছর পরে এসেও আপনার মূলধারার বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে অভিষেক হলো না?

চলচ্চিত্রে কাজ করার আগ্রহ নেই এটা বলব না। তবে আমি সবকিছু একটু বুঝেশুনে করতে চাই। নাটকের ক্ষেত্রেও কিন্তু এমনটা হয়েছে। আমি আরেকটা বিষয় বিশ্বাস করি—ভালো কাজ করতে চাই, ভালো গল্পে কাজ করতে চাই, ভালো অভিনয় করতে চাই—এটা কোন মাধ্যমে দর্শকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে, সেটা আমার কাছে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ না।

প্রশ্ন :

আপনি আর পরিচালক আদনান আল রাজীবকে নিয়ে ফেসবুকে বেশ আলোচনা। এ নিয়ে আপনার বক্তব্য কী?

আমি এটা নিয়ে একেবারে কোনো কথা বলতে চাই না।