চিত্রনায়িকা ইরিন জামান, শিমু ইসলাম কি মাছ বিক্রি করেন!

‘চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংগঠনটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অমিত হাসান সবচেয়ে বেশি অন্যায় করেছেন,’ প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন অভিযোগ করেছেন সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। তাঁর এ বক্তব্যের জবাবে পাল্টা তাঁর নামে অভিযোগের আঙুল তুললেন অমিত হাসান

প্রশ্ন :

জায়েদ খান বলেছেন, নিয়ম না মেনে যাঁকে-তাঁকে সদস্য করেছে আপনাদের কমিটি। সদস্য নির্বাচনে আপনি সবচেয়ে বেশি অন্যায় করেছেন।

বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের এমন বক্তব্যের বিরোধিতা তো করছিই, চ্যালেঞ্জও করছি। জীবনে কোনো সিনেমায় অভিনয় করেননি, এমন একজনকে সদস্য বানিয়েছি, প্রমাণ দিতে হবে। প্রমাণ না দিলে বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। আর যদি প্রমাণ দিতে পারে অনিয়ম করেছি, তাহলে বর্তমান কমিটি যে পানিশমেন্ট দেবে, তা-ই মেনে নেব। এটা আমার ওপেন চ্যালেঞ্জ। বর্তমান কমিটি তো তিন-চার বছর ধরে আছে। আমি যদি অন্যায়ই করতাম, সংবাদমাধ্যমে না বলে আমাকে ডেকে কথা বলত। কই, সেটা তো করেনি। আমি কী অন্যায় করেছি, বলতে হবে। ঢালাওভাবে মন্তব্য করা তো ঠিক নয়।

অমিত হাসান
ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন :

বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এ–ও বলেছেন, প্রায় দুই শ শিল্পীকে আপনারা সদস্যপদ দিয়েছিলেন, যাঁদের কেউ মাছ বিক্রি করেন, সেলুনে কাজ করেন।

১৮৪ জনই কি মাছ বিক্রি করেন? সেলুনে চাকরি করেন? চিত্রনায়িকা ইরিন জামান, শিমু ইসলাম কি মাছ বিক্রি করেন!

প্রশ্ন :

তার মানে কিছু সদস্যপদ দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্যায় হয়েছে?

প্রশ্নই আসে না। আমি যদি অন্যায় করতাম, তাহলে চ্যালেঞ্জ করতাম না। একটা সদস্যের ক্ষেত্রে অন্যায় দেখাক...

অমিত হাসান
ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন :

কিন্তু ইরিন জামান তো অভিনয়ে নিয়মিত নন।

নিয়মিত নন, এ রকম হলে তো শিল্পী সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছর কারও সিনেমা মুক্তি না পেলে তাঁর পূর্ণ সদস্যপদ থাকে না। ভোটাধিকার থাকারও কথা নয়, এটা ঠিক। তা–ই যদি হয়ে থাকে, বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের যে কমিটি, সেখানে অঞ্জনা ম্যাডামের তো ১২ বছর ধরেই চলচ্চিত্র মুক্তি পায় না, রোজিনা ম্যাডামেরও ১৫ বছর ধরে কোনো চলচ্চিত্র মুক্তি পায় না। আরমান ও নৃত্য পরিচালক জাকিরের সিনেমাও মুক্তি পায় না অনেক বছর। তাঁরা তো নির্বাচনও করছেন। যাঁদের ভোটাধিকারই থাকার কথা নয়, তাঁরা আবার নির্বাচনও করছেন! তাঁদের নিয়েই বর্তমান কমিটি চলছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁরা আজীবন সদস্য হিসেবে থাকবেন। আজীবন সদস্যরা ছবিতে অভিনয় না করলেও ভোট দিতে পারবেন। কিন্তু নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। অথচ তাঁরা আজীবন সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নির্বাচন করলেন! কিন্তু যখনই প্রত্যাহার করলেন, তখনই তাঁরা সাধারণ সদস্য। তখন কিন্তু তাঁরা ভোটার নন। সেই তাঁরাই আবার নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে কমিটিতেও জায়গা নিলেন!

প্রশ্ন :

অঞ্জনা, রোজিনাসহ অন্য যাঁদের কথা এখন বলছেন, নির্বাচনের আগে কেন তাঁদের কথা বলেননি?

নির্বাচনের আগে বলিনি। কারণ, সিনিয়র দেখে তাঁদের সম্মান করা হয়েছে। তাঁদের হাসির পাত্র করতে চাইনি। তাঁরা যদি গঠনতন্ত্রই মানেন, রোজিনা ও অঞ্জনা ম্যাডামকে সম্মান দিয়েই বলছি, তাঁদের ছোট করার জন্য নয়; তাহলে তাঁরা কখনোই নির্বাচন করতে পারেন না।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কোন এক আসরের নির্বাচনে (বাম থেকে) অমিত হাসান, বর্ষা, মৌসুমী ও ফেরদৌস
ছবি : প্রথম আলো

প্রশ্ন :

আপনার ফেসবুক পোস্টে দেখলাম, ‘১৮৪ জন শিল্পীর হৃদয়ের রক্তক্ষরণ আমাকে কাঁদায়। আবার সবাইকে ডেকে সদস্যপদ দেওয়া হোক।’ এই সময়ে এমন কথা কেন বললেন?

এই সময়ে এ কারণে বললাম, সামনে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এর আগে ১৮৪ জনের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক। তাঁদের ভোটে পাস করে তাঁদেরই বাদ দিল, এটা কেমন কথা। বেশির ভাগ শিল্পীর মনঃকষ্টটা আমি লিখেছি।

প্রশ্ন :

আপনি কি সামনের শিল্পী সমিতির নির্বাচন করবেন?

এখনো সে ধরনের কোনো পরিকল্পনা করিনি। দেখা যাক, এখনো তো সময় আছে। সময় হলে জানা যাবে।