তাঁর গানগুলো বহুলভাবে গাওয়া হয় না: লিসা

লাইসা আহমদ লিসা
লাইসা আহমদ লিসা

আজ বুধবার সন্ধ্যায় ছায়ানট মিলনায়তনে লাইসা আহমদ লিসার গাওয়া অতুলপ্রসাদ সেনের গানের অ্যালবাম ‘কে গো গাহিলে’র মোড়ক খোলা হলো। অ্যালবামটি প্রকাশ করেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। পঞ্চকবির এক কবি অতুলপ্রসাদ সেন আর তাঁর গান নিয়ে কথা বললেন প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী, ছায়ানট সংগীত বিদ্যায়তনের শিক্ষক ও সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা।

বাংলা গানে অতুলপ্রসাদ সেন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
আমাদের পঞ্চকবির প্রত্যেকেই আলাদাভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের প্রত্যেকের গানেই বিপুল ঐশ্বর্য রয়েছে। অতুলপ্রসাদের গান কিন্তু সমসাময়িক অন্য কবিদের থেকে একটু ভিন্ন ঘরানারও।

তাঁর গান তুলনামূলক কম গাওয়া হয় কেন?
রবীন্দ্রসংগীত বা নজরুলসংগীতের মতো করে না হলেও অতুলপ্রসাদ সেনসহ বাকি দুই কবির গান গাওয়া হয়। শান্তিনিকেতনে যাঁরা পড়তে যান, সেখানে তাঁদের রবীন্দ্র-নজরুলের পাশাপাশি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, রজনীকান্ত সেন ও অতুলপ্রসাদ সেনের গান শেখানো হয়। আমরা ছায়ানটেও সেভাবে শেখাই। নানা কারণে আলাদাভাবে এই তিন কবির গানের শিল্পী নেই। কিন্তু শিল্পীরা তাঁদের গান করে থাকেন।

রবীন্দ্র-নজরুলের মতো আলাদা করে কেন শেখানো বা গাওয়া যায় না?
তাঁর গান আলাদা করে শেখানোর সুযোগ একটু কম। অনেক দিন চলে গেছে, সব গানের স্বরলিপি পাওয়া যায় না। আবার পুরোনো রেকর্ড থেকে শুনে শুনে যে গানগুলো তোলা হবে, সেটাও কঠিন হয়ে যায় কখনো। কেননা সমকালে একেকজন শিল্পী অতুলের গান বিভিন্নভাবে করেন। তবু আমরা ছায়ানটে শেখাই, আনন্দধ্বনি ও পঞ্চভাস্করে শেখাই। কিন্তু তাঁর গানগুলো বহুলভাবে গাওয়া হয় না। যতটা হয় অল্প কিছু গানের ভেতরেই ঘুরপাক খায়। কিন্তু আমার মনে হয়, তাঁর গান বেশি বেশি চর্চা হওয়া দরকার। রেডিও-টেলিভিশনে প্রচার হওয়া দরকার। গণমাধ্যমে গীতিকবিদের নামটা গুরুত্ব পায় না। এ রীতির পরিবর্তন দরকার। এ কাজে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ‘মোদের গরব মোদের আশা’ গানটি আমরা করেই যাচ্ছি, কিন্তু খুব কম মানুষই এর কবির নাম বলতে পারবেন।

অতুলের গান আমাদের শিল্পীদের মধ্যে ভালো কারা করেন?
অদিতি মহসিন, লুভা নাহিদ চৌধুরী, আজিজুর রহমান তুহিন, শারমিন সাথী ইসলাম ময়না, বুলবুল ইসলাম ভাই, খায়রুল আনাম শাকিল ভাইসহ আরও অনেকেই ভালো করেন।

আপনার নতুন অ্যালবাম ‘কে গো গাহিলে’র গানগুলো নিয়ে বলুন।
ছোটবেলা অতুলপ্রসাদের কিছু গান শিখেছিলাম। বিভিন্ন সময়ে বাবা (ওয়াহিদুল হক, শুরুতে শিক্ষক পরে শ্বশুর) গানগুলো তুলে দিতেন। সেগুলো থেকেই বিভিন্ন অঙ্গের গান নিয়ে অ্যালবামটি করা। যেমন কাজরি, ঠুমরি, ধ্রুপদাঙ্গের গান আছে অ্যালবামে। বেশির ভাগই প্রেম পর্যায়ের।