পরিচালক টাকার চিন্তা করলে ছবি বানাবেন কখন

সোহেল রানা
প্রথম আলো
২০১৯ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন আকারে শিল্পী, কলাকুশলীদের নাম প্রকাশ করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। এ বছর আজীবন সম্মাননা জানানো হচ্ছে সোহেল রানা ও সুচন্দাকে। পুরস্কারপ্রাপ্তিসহ চলচ্চিত্রের নানা প্রসঙ্গে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন সোহেল রানা

প্রশ্ন :

অভিনন্দন। আজীবন সম্মাননা প্রাপ্তিতে কেমন লাগছে?

এ রকম সম্মাননা প্রথম পেলাম। আর এ তো জীবনে একবারই পাওয়া যায়। এই সম্মাননার অনুভূতি ঠিক মুহূর্তে মুহূর্তে যেমন আকাশের রং বদলায়, তেমন। আমি সত্যিই অনেক খুশি।

প্রশ্ন :

যে চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য সম্মাননা পাচ্ছেন, সেই চলচ্চিত্র এখন কেমন আছে?

আমার দেশের চলচ্চিত্র এখন কোমায় আছে। তবে আমি আশাহত হচ্ছি না। আমরা সিনেমা বানাচ্ছি ডিজিটাল, কিন্তু প্রেক্ষাগৃহ ডিজিটাল করছি না!

প্রশ্ন :

দেশে একই দিনে বলিউডের ছবি মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন প্রদর্শকেরা। সেটা কেমন হবে?

বিদেশি ছবি দেশে আগেও মুক্তি পেয়েছে। দেশের মানুষ বরাবরই দেশের সিনেমাকেই গুরুত্ব দেয়। এটা নিয়ে আমি মোটেও চিন্তিত নই।

প্রশ্ন :

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের নাম ঘোষণার পরই একটা শ্রেণি লবিংয়ের অভিযোগ তোলে। আপনাদের কী মনে হয়?

অস্কারেও লবিংয়ের খবর শুনি। একই অভিযোগ শোনা যায় পৃথিবীর নানা পুরস্কারের ক্ষেত্রেও। আমাদের দেশে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ক্ষেত্রে কিছু লবিং হয়েছে চোখে পড়ার মতো। তাই এমনটা ভাবা খুবই স্বাভাবিক। কারণ, একটা শ্রেণি সব সময়ই থাকে, মৌমাছির মতো কীভাবে মধু নেওয়া যায়।

প্রশ্ন :

প্রতিবছর সরকার চলচ্চিত্রে অনুদান দেয়। অনুদানের স্বচ্ছতা নিয়ে নানা কথা শোনা যায়। আপনার কী মত?

অনুদানে যে পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়, তা একটি ভালো ছবির জন্য অপ্রতুল। অনুদানের সিনেমার চিত্রনাট্য যাঁরা পড়েন বা দেখেন, চলচ্চিত্র নিয়ে তাঁদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা আছে। যারা পায় বেশির ভাগই লবিংয়ের কারণে পায়। সরকারের ছয়–সাতটা ছবির অনুদানের টাকায় ছবি করা যাবে তিনটা। সরকারের উচিত ভালো পরিচালকদের ডেকে সব রকম সুবিধা ও আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে ছবি বানাতে বলা। পরিচালক টাকার চিন্তা করলে ছবি বানাবেন কখন।

প্রশ্ন :

বাংলাদেশের সিনেমা তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে কীভাবে?

ভালো ছবি বানাতে হবে, দেশের সব প্রেক্ষাগৃহ ডিজিটাল করতে হবে। একজন মানুষের পুরো শরীরের একটা অঙ্গহানি হলে তাকে কেউ সুন্দর মানুষ বলবে না। চলচ্চিত্রও একটা শারীরিক কাঠামোর মতো। সব সেক্টরে ভালো না করা গেলে চলচ্চিত্রের ঐতিহ্য ফিরবে না।